পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে রাসায়নিক হামলা হতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে গোয়েন্দা বিভাগ। আর এমন হামলা হলে অসুস্থ ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য জেলা ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোকে সতর্ক থাকতে এরই মধ্যে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে বাংলাদেশে এ ধরনের হামলা হওয়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন সামরিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল) অধ্যাপক ডা. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমরা এ সংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার পর তা বিশেষায়িত ও জেলা হাসপাতালগুলোতে পাঠিয়েছি। তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশে রাসায়নিক হামলার আশঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে গত ৩ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ একটি চিঠি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে। ৪ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে চিঠি পাঠায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর। এরপর মহাপরিচালকের অনুমোদন সাপেক্ষে ২৬ আগস্ট প্রতিটি জেলা হাসপাতাল ও বিভাগীয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলোর কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও গণমাধ্যমে এ নিয়ে কিছু বলতে রাজি হয়নি।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. এম আজিজ বলেন, ‘হ্যাঁ এ ধরনের চিঠি বিশেষায়িত ও জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পেয়েছেন।’
চিঠিতে যা বলা আছে
স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এই মর্মে সব বিশেষায়িত হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এবং জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক উপ-পরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক কাম সিভিল সার্জনকে জানানো যাচ্ছে যে, জননিরাপত্তা বিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত গোপন প্রতিবেদনের আলোকে বাংলাদেশে সম্ভাব্য রাসায়নিক জঙ্গি হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাসমূহের নিম্ন উল্লিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।’
ওই চিঠিতে পাঁচটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে—
১. রাসায়নিক হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য প্রতিটি হাসপাতালে একটি বিশেষ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা টিম গঠন করা।
২. প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ওষুধ সীমিত আকারে মজুত রাখা।
৩. অ্যাম্বুলেন্স সচল রাখা।
৪. ওটি কমপ্লেক্সে বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা জেনারেটর সচল রাখা।
৫. বিশেষ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা টিমের সব সদস্যের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, রাসায়নিক জঙ্গি হামলায় হতাহতদের চিকিৎসায় সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য হাসপাতালকে নির্দেশ দিতে হবে। আমরা সেই নির্দেশ দিয়েছি। সারাদেশে মোট ১১৬টি হাসপাতাল রয়েছে। এরমধ্যে এ পর্যন্ত ১০০ হাসপাতাল ভিজিট করেছি। তিনটি জেলার হাসপাতাল ভিজিট করা বাকি আছে। অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী হাসপাতালগুলো প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
সামরিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক আব্দুর রশীদ বলেন, ‘আসলে কেমিক্যাল অ্যাটাক যদি কোনও জনবহুল এলাকায় করা হয়, তাহলে তা বাতাসে ছড়িয়ে পড়বে। খুব মারাত্মক ক্ষতিকর কেমিক্যাল হলে মানুষ অসুস্থ হবে। এ ধরনের ঘটনা জাপানের আন্ডারগ্রাউন্ড রেলস্টেশনে হয়েছিল। সাধারণত বিশ্ববাজারে সবার কাছে কেমিক্যাল এজেন্ট থাকে না। তাছাড়া, আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী, সেনাবাহিনী এ ধরনের কেমিক্যাল অ্যাটাক করবে না, তার জন্য চুক্তি করতে হয়। তাহলে আমরা বলতে পারি যে কোনও দেশের সেনাবাহিনী এ ধরনের কেমিক্যাল অ্যাটাক করবে না। সম্প্রতি সিরিয়ায় কেমিক্যাল অ্যাটাকের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী বোম্বিং করেছে। সেটির সম্ভাবনা বাংলাদেশে নেই। তবে, জাপানের ভূগর্ভস্থ স্টেশনে যে হামলা হয়েছিল, সেটি ছিল জঙ্গি হামলা। আমার মনে হয় এ ধরনের কোনও হামলা হলে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রস্তুত থাকবে।’
এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘জঙ্গিদের এ ধরনের হামলা চালানোর আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, কোনও প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধাবস্থা নেই। সামনে ইলেকশন আছে, দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরির জন্য অনেকে এ ধরনের ব্যবস্থা বেছে নিতে পারে। এটা এমন নয় যে আমাদের এখানে হামলা অবশ্যম্ভাবী হয়ে গেছে। অন্তত আমি তা মনে করছি না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।