রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
গোটা ঝিনাইগাতীজুড়ে আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন। হাট-বাজার সয়লাব হয়ে গেছে এ সব পলিথিনে। প্রকাশ্যে বিক্রি ও ব্যবহার হচ্ছে পলিথিন-শপিংব্যাগ। নিষিদ্ধ পলিথিন শপিংব্যাগে উপজেলা সদরসহ গামাঞ্চলের হাট-বাজার এখন সয়লাব হয়ে গেলেও উপজেলা প্রশাসন রয়েছে নীরব। ফলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নাকের ডগায় প্রকাশ্যে বিক্রিও ব্যবহার হচ্ছে এসব পলিথিন শপিংব্যাগ। উপজেলার আনাচে-কানাচে মিলছে বেআইনি এসব পলিথিন। এতে চরম ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশ ও প্রাণীক‚লের। অথচ উপজেলা প্রসাশন এসব দেখেও না দেখার ভান করছে- কি যেন অদৃশ্য শক্তির ইশারায় এমন মন্তব্য করেছেন অভিজ্ঞমহল। কোথায় নেই পলিথিন? অবাধ পলিথিনের ব্যবহারের কারণে এখন আর কেউ চট বা কাগজের ব্যাগ ব্যবহারই করছেন না। এ ছাড়া সরকারিভাবেও এখন আর পলিথিনের ক্ষতিকর দিক নিয়ে নেই কোনো প্রচার-প্রচারণা।
জানা যায়, ১৯৮২ সালের দিকে শুরু হয় পলিথিন শপিং ব্যাগের প্রচলন। ব্যবহারে সুবিধা এবং স্বল্পমূল্যের কারণে দ্রুত ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় পলিথিন ব্যাগ। ব্যবহার যেমন বাড়তে থাকে তেমনি ধীরে ধীরে পলিথিন যে পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, তা প্রকাশ ও হতে থাকে। এভাবেই সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়। ২০০১ সালের মার্চ মাস থেকে সারা দেশে পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বাজারজাত এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ করে সরকার। ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, পলিথিন দীর্ঘদিনেও মাটির সাথে মিশে না বা পচে না। এর বিষক্রিয়ায় কৃষি জমির উর্বরতা কমিয়ে দেয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, পলিথিনের খাদ্যদ্রব্য মানুষের শরীরে নানা রোগ দেখা দেয়। এমনকি মরণব্যাধি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
ঝিনাইগাতীসহ সারা দেশে প্রকাশ্যে এখন চলছে এর ব্যাবহার। নেই কোনো নিয়ন্ত্রণ। নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রিতে পরিবেশ অধিদফতরের ও যেন নেই কোনো মাথাব্যথা। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোপূর্বে মাঝে মধ্যে অভিযান চালানো হলেও বর্তমান ইউএনও যোগদানের পর নেয়া হচ্ছে না কোনো কার্যকর ব্যবস্থা। ইতোপূর্বের অভিযানও ক্ষুদ্র পরিসরে হওয়ায় মূল অপরাধীরা থেকে যায় সবসময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে পরিবেশের ওপর বিরুপ প্রভাব তো পড়ছেই, বাড়ছে পানিবদ্ধতা এবং জনস্বাস্থ্যের ওপরও সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক হুমকি। পরিবেশবান্ধব পাট গবেষণায় সরকারের ব্যাপক সাফল্য দেখালেও পলিথিন ব্যাগের বিকল্প হিসেবে পাটজাত পণ্যকে এখনো পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য করা যায়নি বা এর ব্যাপক প্রচলনের ব্যবস্থাও করা যায়নি। সালের ১ জানুয়ারি ঢাকা এবং ১ মার্চ সারা দেশে পরিবেশ রক্ষাকল্পে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়। প্রসঙ্গত. পলিথিনের ব্যাপক ব্যবহারের কারণে ১৯৯৮ সালে বন্যায় বলতে গেলে গোটা দেশেরই বিভিন্ন অঞ্চলের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় সরকার পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন। অবশ্য ২০০২ সালে সরকারের শক্ত অবস্থানের কারণে কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে পলিথিনের ব্যবহার বলতে গেলে শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। তারপর আবার ২০০৬ সনের শেষের দিকে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সময় থেকেই সুযোগ নেয় অসাধু পলিথিন ব্যবসায়ীরা। সরকারের শিথিল নজরদারির সুযোগে আবারো অত্যন্ত দাপটের সাথেই আবির্ভাব ঘটে পলিথিনের। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পলিথিনের ব্যবহার আরো ব্যাপক বেড়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এ জন্য পলিথিনের জন্য বাড়তি কোনো টাকা-পয়সা ও দিতে হয় না ক্রেতাকে। আর এ ভাবেই প্রত্যেক দোকান থেকে ক্রেতাদের দেয়া হচ্ছে ফ্রি পলিথিনের ব্যাগ। সচেতন ব্যক্তিদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা জরুরি। পর্যবেক্ষকমহলের মতে, পরিবেশ বাঁচাতে অবিলম্বে পলিথিন ব্যাগের বিকল্প পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহারের ব্যবস্থা এখন সবচে জরুরি। এ জন্য পাট-কাপড় ও কাগজের ব্যাগ উদ্ভাবন এবং ব্যবহারে সর্ব শ্রেণিপেশার মানুষকে উৎসাহিত করে পলিথিন ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যাবশ্যক বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।