Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সমকামিতা ভারতে আর অপরাধ নয় -সুপ্রিম কোর্ট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ২:৪৩ পিএম

সমকামিতা ভারতে আর অপরাধ নয় বলে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।

সমকামিতাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বর্ণনা করা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা বাতিল করে দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।

ব্রিটিশ জমানার এই বিতর্কিত আইনটির সুবাদে 'অপ্রাকৃতিক যৌনতা'র অপরাধে ভারতে কোনও ব্যক্তির ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারতো।

১৮৬১ সালের জারি করা ধারাটি ২০০৯ সালে সমকামিতা অপরাধ নয় বলে রায় দিয়েছিল দিল্লির হাইকোর্ট। তবে তার বিরুদ্ধে আপীল করা হলে ২০১৩ সালে ওই আইনটি বহাল করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ। নিজেদের সেই আদেশ আজ বাতিল করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।

এ সময় আদালতের বাইরে অধিকার কর্মীরা উল্লাস করে ওঠেন। তাদের অনেককে কাঁদতে দেখা যায়।

ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ভারতে এলজিবিটি শ্রেণীভুক্ত পাঁচজন ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা তাদের আবেদনে বলেছিলেন, ভারতীয় দন্ডবিধির সেকশন ৩৭৭ এমন একটি আইন যে কারণে সব সময় তাদের ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতে হয় - কারণ তাদের যৌনতার দোহাই দিয়ে পুলিশ যখন খুশি তাদের গ্রেফতার করতে পারে।


গত জুলাই মাসে তাদের আবেদনের শুনানি শুরু করেন সুপ্রিম কোর্ট, যা দেশটিতে স্বাধীনতা এবং গোপনীয়তার বিতর্ক তৈরি করে।

শুনানির একপর্যায়ে একজন বিচারপতি মন্তব্য করেন, ''যৌনতার কারণে কাউকে ভীতির মধ্যে জীবনযাপন করা উচিত নয়।'' যা ভারতের সমকামীদের মধ্যে আশাবাদের সৃষ্টি করে।

সমকামিতাকে অপরাধ হিসাবে বর্ণনা করা আইনটিকে বাতিল করার জন্য অনেকদিন ধরে দাবি করছে ভারতের অধিকার কর্মীরা
সমকামিতাকে কোন অপরাধ হিসাবে গণ্য না করার জন্য ভারতে অনেকেই দাবি তুলেছেন।

যদিও এখনো ভারতে সমকামিতা নিয়ে সংকোচ রয়েছে এবং অনেকেই এটিকে বেআইনি বলে গণ্য করে।

'সেকশন ৩৭৭' বহাল থাকা না থাকার প্রশ্নে ২০১৬ সালে পুনরায় শুনানি গ্রহণ করতে সম্মত হন আদালত। তিনজন জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, এটা সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে তারা মনে করেন।

সেকশন ৩৭৭কী?

এটি ১৫৭ বছর পুরনো ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইন, যেটি ১৮৬১ সালে জারি করা হয়।

সেখানে কিছু যৌন অপরাধকে অস্বাভাবিক অপরাধ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, যার জন্য ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

যেখানে বলা হয়েছে, ''স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে মানুষ,নারী বা কোন পশুর সঙ্গে যৌন মিলন'' করা হলে তা শাস্তিযোগ্য হবে।

অ্যাকটিভিস্টরা বরাবরই অভিযোগ করছেন, দেশের সমকামী এবং তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়কে হয়রানি করতে আইনটি ব্যবহার করা হচ্ছে।

সমঅধিকার কর্মীরা বলছেন, এ ধরণের একটি আইন থাকা মানেই প্রমাণ করে যে, যৌনতার ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বৈষম্য করা হচ্ছে।



 

Show all comments
  • অর্ণব ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৮:১৬ পিএম says : 0
    ভারতের সমকামিতার বৈধতার প্রসঙ্গ ভারতের সমকামিতার ব্যাপারে আদালতের রায় নিয়ে বেশ উল্লাস প্রকাশ করে আমাদের এক পত্রিকা হেডলাইন করেছে "ভারতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা সমকামিতা আর অপরাধ নয়"। অতচ, হেডলাইন হতে পারতো ভারতে মানব সভ্যতার চরম নিকৃষ্টতম এবং জঘন্য বিকৃত যৌন রুচির রাষ্ট্রগত অনুমোদন।.......................................... ভারতের সংস্কৃতি কখনো আমাদের সংস্কৃতি হতে পারেনা।।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সমকামিতা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ