পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রার্থী জটে বিভক্ত আ.লীগ
পরিবেশ নিয়ে টেনশনে বিএনপি
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তোড়জোড় চলছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল তথা সিলেট জুড়ে। শঙ্কা, অনিশ্চয়তা চাপিয়ে চারদিকে একই সুর নির্বাচন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা লক্ষণীয় বটে। নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক অন্তত ২০০ জন গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ তালিকায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী থেকে শুরু করে প্রভাবশালী নেতারা পর্যন্ত রয়েছেন।
শাসক দলের মনোনয়ন প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ প্রকাশ্যে।
প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট পেরিয়ে নির্বাচনে ঢেউ উঠছে বিদেশেও। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য কানেশন নির্বাচন’র অন্যতম খোরাক। দেশের প্রধান দু‘দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শক্ত অবস্থান যুক্তরাজ্যে। পছন্দের দল ও প্রার্থীর পক্ষে দূরে বসেই প্রচারণায় তারা সক্রিয়। স্থানীয়ভাবে উন্নয়ন অগ্রগতিতেও ভূমিকরা রাখছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। মূলত তাদের কারণেই নির্বাচনী আবহ সিলেটে বেশ জমানো।
আওয়ামী লীগে প্রার্থী জট মারাত্মক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বলছেন, “যাকে নৌকা দেবো, তার পক্ষে কাজ করতে হবে; নৌকা যেন না হারে।‘ কিন্তু তৃণমূলে নৌকার সমর্থকরা এখন প্রার্থী কেন্দ্রিক অনৈক্য-বিভক্তিতে। নৌকা পরিবারে ঘোর বিরোধ-বিবাদ জর্জরিত। গত ৫ জানুয়ারির মতো একতরফা নির্বাচন হবে কি না সেই প্রশ্নে ঘুরপাক খাচ্ছে আমজনতা। শাসকদলের প্রার্থীদের আচরণে মনে হচ্ছে তারা কোনো মতে নমিনেশন পেয়ে গেলে সংসদে যাওয়া নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের। তাই যেকোনভাবে মনোনয়ন চাই। এতে করে প্রার্থীতা নিয়ে শাসক দলের তৃণমূলে তীব্র প্রতিদ্ব›িদ্বতা চলছে। অনেক এমপি এখন কোনঠাসা। তাদের বিরুদ্ধে জনমতের পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীরাও বিরক্ত। এতে করে চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন বর্তমান শাসক দলের এমপিরা। তাদের নিয়ে মাঠে আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই।
সিলেট বিভাগ ৪০টি উপজেলা নিয়ে গঠিত। রয়েছে ১৯টি নির্বাচনী আসন। সিলেট, মৌলভাবাজার, হবিগঞ্জ-সুনামগঞ্জ নিয়েই সিলেট বিভাগ। নানাভাবে খোঁজ খবর সূত্রে জানা গেছে, পরিবর্তনের আভাসে চাঙ্গা সরকার বিরোধী রাজনীতিক শক্তি।
বিশেষ করে বিএনপি আছে সুবিধাজনক অবস্থানে। তৃণমূলে তাদের কোন উল্লেখযোগ্য বিভক্তি নেই। প্রার্থী নিয়েও নেই ঠেলাঠেলি। কৌশলী প্রচারণার মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সর্ম্পক বজায় রাখছেন মনোনয়ন ইচ্ছুক প্রার্থীরা। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আসন্ন নির্বাচনে আ্ওয়ামী লীগ প্রার্থীরা নিজ দল ও বাইরের ভোটারদের মুখোমুখি হবেন। কিন্ত সরকার বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে শুধু মোকাবেলা করবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের।
একাধিক সংসদীয় আসনের নাগরিকেরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র শাখার একাধিক নেতা দেশে এসে নিজেদের সংসদীয় আসনে বিভিন্ন আয়োজন করে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছেন। এসব প্রবাসী প্রার্থীর তৎপরতা সিলেট-২ (বালাগঞ্জ-বিশ্বনাথ), সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ), সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) ও সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) সংসদীয় আসনে সবচেয়ে বেশি। প্রবাসীদের মধ্যে সিলেট-২ আসনের বর্তমান সাংসদ যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ছাড়াও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী জাতীয় পার্টির নেতা মো. ইয়াহিয়া প্রচারণা চালাচ্ছেন। সিলেট-৩ আসনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোহামমদ মনির হোসাইন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খালেদ আহমদ এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা আবদুস সালাম প্রচারণা চালাচ্ছেন। সিলেট-৬ আসনে কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার আহমদ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা রশিদ উদ্দিন চৌধুরী, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফয়সল আহমদ চৌধুরী এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী জাতীয় পার্টি নেতা সেলিম উদ্দিন প্রচারণা চালাচ্ছেন। সুনামগঞ্জ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সামছুল হক চৌধুরী এরই মধ্যে ‘প্রগ্রতিশীল নাগরিকবৃন্দ’-এর ব্যানারে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। সুনামগঞ্জ-৩ আসনে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাবেক যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর আহমদ ও সৌদিপ্রবাসী বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন প্রচারণা চালাচ্ছেন। সুনামগঞ্জ-৫ আসনে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আইয়ূব করম আলী প্রচারণা করছেন। হবিগঞ্জ-১ আসনে কানাডা প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জন দাশ, মৌলভীবাজার-৩ আসনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুর রহিম শহীদ প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এদিকে, সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা ও জরিপ কেন্দ্রের দু‘দলের হাতে রয়েছে। কিন্তু সবকিছু নির্ভর করছে সামনের নির্বাচনী পরিবেশের উপর। রাজনীতিক পর্যবেক্ষকসহ সচেতন মহল মনে করছে, উৎকন্ঠাহীন নির্বাচন হলে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। নির্বাচনকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষ ও সমাদৃত না হয় তাহলে সব হিসেব নিকেশের মৃত্যু ঘটবে। তবে সাধারণ মানুষ মনে করেন, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে পরিবশে ভালো হবে না। সদ্য বিদায়ী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একতরফা প্রভাব খাটানোসহ ভোট জালিয়াতি মহোৎসব দেখে তারা শঙ্কিত।
সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমূদ চৌধুরী বলেন, জনগণের প্রতি আস্থা রেখে, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জয়-পরাজয়ের নিশ্চয়তা গড়ে তোলা জরুরি। নতুবা পথ হারাবে বাংলাদেশ। আমরা পথ হারাতে চাই না। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসার কারণে প্রার্থীদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না। বর্তমান সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি মেনে নিতে বাধ্য করা হবে। এ কারণেই বিএনপি মাঠপর্যায়ে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।