Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীতে শিশু অপহরণ চক্রের নারীসহ গ্রেফতার ৬

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় বাসার সামনে খেলছিল তোয়াছিন ইসলাম সিমন (৪)। সে সময় বাবা সাইফুল ইসলামের প্রতিবেশী রোমান কৌশলে সিমনকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর অপহরণের নাটক সাজায়। রোমান নিজে নিখোঁজের খবর ছড়াতে মাইকিং করে তেজগাঁও এলাকায়। অপহরণের পর মুক্তিপণ বাবদ যে নম্বরটি ব্যবহার করা হয় সেটির সূত্র ধরেই শনাক্ত করা হয় রোমানকে। এরপর রোমান ও তার স্ত্রীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার এবং অপহৃত শিশু সিমনকে উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার।
তিনি বলেন, গত ২৮ আগস্ট আনুমানিক রাত পৌনে ৯টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের লিচু বাগান এলাকার ৩৪১/১ বাসা থেকে অপহৃত হয় সিমন। ওই রাতেই নিখোঁজ শিশুটির সন্ধান চেয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন বাবা সাইফুল ইসলাম। এরপর তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পরদিন বুধবার দুপুর ২টার দিকে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে জানানো হয়, সিমন তাদের জিম্মায়। অপহরণ বাবদ ২০ লাখ টাকা দেয়ার কথা বলা হয়। ১০ লাখ টাকায় সমঝোতাও হয়। বিষয়টি পুলিশ অবহিত হবার পর ওই নম্বর ধরে অভিযান শুরু হয়।
বুধবার মধ্যরাতে বিজয় সরণির পিরমা মসজিদের গলির পাশেই খোলা মাঠ থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। ২ জনকে গ্রফতারও করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে মোহাম্মদপুর, শেরেবাংলানগর ও মহাখালী এলাকা থেকে আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে, প্রতিবেশী রোমান এই অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী। যে মোবাইলটি ব্যবহার করে মুক্তিপণ চাওয়া হয় সেটি এক সময় রোমানই ব্যবহার করেছে।
ডিসি বিপ্লব বলেন, নেপথ্যে থেকে মূল পরিকল্পনাকারী রোমান নিজেই বাবা সাইফুল ইসলামের সঙ্গে থেকেছেন। সান্ত¡না দিয়েছেন। সমঝোতার জন্য কথা বলেছেন। যাতে করে অপহরণের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা কেউ ধরতে না পারে সেজন্য নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করতে মাইকিংও করেন রোমান। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে এটা প্রতীয়মান যে আর্থিক কারণেই ওই শিশুকে অপহরণ করা হয়েছিল। অপহরণের বিষয়ে রোমান নিজেই বাবা সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছে। এক্ষেত্রে ম্যাজিক ভয়েস নামে টুলস ব্যবহার করেছে রোমান। ফলে রোমানের কণ্ঠ বিকৃত হওয়ায় বোঝার উপায়ও ছিল না।
অপহরণকারীদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরে মধ্যে। তারা গ্যাং হিসেবে এর আগেও কোনো অপহরণের কাজে জড়িত ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারা কেউ চাকরি করে না। পড়াশুনাতেও নেই। তাদের বিরুদ্ধে শিশুটির বাবা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং ৪০)। এছাড়া অপহরণে সহযোগিতা করায় আরেক নারী সহযোগী পলাতক রয়েছে তাকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এদিকে অপহৃত শিশু তোয়াছিনের বাবা সাইফুল ইসলাম জানান,আমি এই প্রথম পুলিশের কাছে গেছি। গত ২৮টি ঘণ্টা উদ্বিগ্ন ছিলাম। ছেলে নিখোঁজের পর থেকে নাওয়া-খাওয়া সব বাদ হয়ে গেছিলো। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আমার সোনা বাবুকে উদ্ধার করে দিয়েছে। পুলিশের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রেফতার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ