বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কর্তৃপক্ষের অবহেলা, প্রয়োজনীয় নজরদারী, অব্যবস্থাপনা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা না থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের জলবায়ু ফান্ডের ১০ কোটি টাকার ‘গ্রিন ঠাকুরগাঁও-ক্লিন ঠাকুরগাঁও প্রকল্প’। আর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ করে এড়িয়ে চলছেন।
গত ৫ বছর বছর আগে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা হাতে নেয় ‘গ্রিন ঠাকুরগাঁও-ক্লিন ঠাকুরগাঁও’ প্রকল্পটি। দীর্ঘ দিনেও প্রকল্পটি আলোর মুখ না দেখায় পৌর এলাকা এখন ময়লা-আবর্জনার নগরীতে পরিণত হয়েছে। এতে স্বাভাবিক ও সুস্থ পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপশি পঁচা দুর্গন্ধে ঘটছে বায়ু দূষণ, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেও রয়েছে পৌরবাসী। তবে অভিযোগ স্বীকার করে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছেন, চুক্তিবদ্ধ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় ফেইল করার কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। খুব দ্রæত চুক্তি বাতিল করে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ঠাকুরগাঁও পৌরসভা প্রথম শ্রেণির মর্যাদা লাভ করে ১৯৯৭ সালে। প্রায় ২১ বছর আগে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হলেও প্রয়োজনীয় নাগরিক সুবিধা থেকে এখনও বঞ্চিত ঠাকুরগাঁও পৌরসভার বাসিন্দারা। বছরের পর বছর কেটে গেলেও এখানে বাড়েনি সেবার মান। কিন্তু নাগরিকদের ঘাড়ে করের বোঝা বেড়েছে ঠিকই। আর পৌর এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে ও সেবার মান বাড়াতে ২০১২-১৩ অর্থবছরে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের ১০ কোটি টাকায় ‘গ্রিন ঠাকুরগাঁও-ক্লিন ঠাকুরগাঁও’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয় পৌরসভা। নিদিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলে বায়োগ্যাস উৎপাদনসহ বিভিন্ন পরিকল্পনায় চুক্তি করা হয় স্থানীয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইএসডিও নামে (এনজিও)-এর সঙ্গে। প্রকল্প বাস্তবায়নে শুরুর প্রথম কয়েক মাস পৌরবাসী অর্থের বিনিময়ে কিছুটা সেবা পেলেও পরবর্তীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রতিষ্ঠান ও পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে তা মুখ থুবড়ে পড়ে। বিভিন্ন পাড়া মহল্লার রাস্তার পাশে ময়লা আবর্জনার স্তুপ জমে থাকে। এতে সামান্য বৃষ্টি হলেই শহরে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা ।
ঘুরে দেখা গেছে পৌর শহরের কোর্ট চত্বর ও জেলা রেজিস্ট্রি অফিস ও কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফটকের সামনে ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তুপ। কলেজ রোডের অপরাজয় একাত্তর সংলগ্ন লোহার ব্রীজের পাশে, শহরের মুন্সিপাড়া গোরস্তান সংলগ্ন ও লাশকাটা ঘরের পাশে নদী তীরবর্তী ফাকা জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন ইএসডিওর নিয়োগকৃত পরিচ্ছনতা কর্মীরাই। এতে দুর্গন্ধে বিদ্যালয়, কলেজ ও সাধারণ পথচারীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোনও লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
আশ্রমপাড়ার বাসিন্দা আহসানুল হাবিব বাবু বলেন, এটি খাতা কলমে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও সরেজমিনে দেখলে এটিকে তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভা বললেও ভুল হবে। পৌরসভা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইএসডিও’র মধ্যে বর্জ্য অপসারণের জন্য কয়েক কোটি টাকার যে চুক্তি তা আলোর মুখ দেখেনি। এতে অর্থ লোপাট ও আত্মসাতের কিছুটা লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যদি সঠিকভাবে এই অর্থ ব্যয় করা হতো তবে পৌরবাসী কিছুটা হলেও সুস্থ পরিবেশ পেতো।
তবে এসব অভিযোগ মানতে নারাজ চুক্তিবদ্ধকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইএসডিও’র ‘গ্রিন ঠাকুরগাঁও-ক্লিন ঠাকুরগাঁও’-এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর প্রবীর কুমার গুপ্ত। তিনি উল্টো দোষ চাপান পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে। তিনি বলেন, প্রকল্পের যে সার্বিক বিষয় রয়েছে তা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে ইএসডিও। পৌর শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লার রাস্তায় যেসব ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা যায় তা পরিষ্কার করার দায়িত্ব ইএসডিও’র নয়।
এ বিষয়ে ঠাকুরাঁও পৌরসভার মেয়র মির্জা ফয়সল আমিন জানান উল্টো কথা।
তিনি বলেন, চুক্তিবদ্ধকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইএসডিও এই প্রকল্পের ম্যানেজমেন্ট ফেইল করার কারণে এ প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়েছে, আলোর মুখ দেখেনি। দ্রæত শহর পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য পৌরসভার নিজস্ব পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।