Inqilab Logo

সোমবার, ১০ জুন ২০২৪, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

তেল-গ্যাস অনুসন্ধান স্থলে ২২, সাগরে ২৬ উত্তোলন ব্যয় বাড়াতে নতুন উদ্যোগ

আইন সংশোধনে খসড়া মন্ত্রণালয়ে

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

গ্যাসের দাম ও কস্ট রিকভারির হার (অনুসন্ধান উত্তোলনের ব্যয়) বাড়িয়ে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের উৎপাদন বন্টন চুক্তি (পিএসসি) সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। ইতোমধ্যে সংশোধিত পিএসসির খসড়া অনুমোদনের জন্য জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পিএসসি অনুমোদন পেলেই আবার নতুন করে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহŸান করবে পেট্রোবাংলা। জ্বালানি বিভাগের অনুমোদনের পর আইন মন্ত্রণালয়ে মতামত (ভ্যাটিং) এর জন্য পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর সংশোধনটি চূড়ান্ত করা হবে।
পেট্রোবাংলার জেনারেল ম্যানেজার শাহনেওয়াজ পারভেজ ইনকিলাবকে বলেন, সংশোধিত মডেল পিএসসি ২০১৮ নামে অভিহিত হবে। পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে সংশোধনীর কাজ শেষ করা হয়েছে। এখন অনুমোদনের জন্য জ্বালানি বিভাগে পাঠানো হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পরই আন্তর্জাতিক দরপত্র আহŸান করা হবে। এমনিতেই সাগরে একটি কূপ খনন করে সেখান থেকে গ্যাস পেতে কমপক্ষে ৯ থেকে ১০ বছর সময় প্রয়োজন।
বর্তমানে বাংলাদেশের মডেল পিএসসিতে গ্যাসের যে দাম রয়েছে তা বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছে আকর্ষণীয় নয়। সে কারণে কোনো দেশ বাংলাদেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। একই কারণে স¤প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি কনোকো ফিলিপস সাগরের দুটি বøকে জরিপের কাজ করে গ্যাস থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করার পরও কূপ খনন না করে চলে যায়।
মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, দেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বøক রয়েছে ৪৮টি। এরমধ্যে স্থলভাগে ২২ এবং সাগরে রয়েছে ২৬টি বøক। সাগরের বøকগুলোর মধ্যে আবার অগভীর সাগরে ১১টি এবং গভীর সাগরে ১৫টি। স্থলভাগে শেভরন বাংলাদেশ ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর বøক থেকে গ্যাস উত্তোলন করছে। ক্রিস এনার্জি ৯ নম্বর বøক অর্থাৎ বাঙ্গুরা থেকে গ্যাস তুলছে।
অন্যদিকে সাগরের ৪টি বøকে কাজ করছে সান্তোস-ক্রিশ এনার্জি, ওএনজিসি এবং পেসকো দাইয়ু। সাগরে মোট ৪টি কূপ খনন করার পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়েছে। এরমধ্যে ভারতীয় কোম্পানি ওএনজিসি এসএস-৪ এবং এসএস-৯ নম্বর বøকে তিনটি কূপ খনন করবে। অপরদিকে সান্তোস এসএস-১১ নম্বর বøকে একটি কূপ খনন করবে। এছাড়া ডিএস-১২ নম্বর বøকে পেসকো দাইয়ু ২ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকায় ত্রিমাত্রিক জরিপের কাজ শুরু করবে চলতি বছরের শেষ নাগাদ। এই জরিপ কাজের পরই তারাও একটি কূপ খননের কাজে হাত দেবে।
গভীর সাগরের দুটি বøক এবং অগভীর সাগরের একটি বøকে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ইওআই (এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট) আহŸান করে পেট্রোবাংলা। ক্রিশ এনার্জি, পেসকো দাইয়ু ও স্টেটওয়েল আগ্রহ দেখায়। কিন্তু পরে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে আরএফপি (রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল) চাওয়া হলে কোনও কোম্পানি তা জমা দেয়নি। এ অবস্থায় সরকার পিএসসি সংশোধন করে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী করার উদ্যোগ নিয়েছে।
পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, পিএসসির দুটি জায়গায় পরিবর্তন আনার কথা বলেছেন পরামর্শকরা। একটি হচ্ছে গ্যাসের দাম। অন্যটি হচ্ছে কস্ট রিকভারির হার। তিনি বলেন, বিদেশি কোম্পানিগুলো শুরু থেকেই ১০০ ভাগ কস্ট রিকভারি দাবি করছে। অর্থাৎ তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে তারা যে অর্থ ব্যয় করবে তার পুরোটাই তারা তুলে নেবে। কিন্তু এমন হলে পেট্রোবাংলা কোনও গ্যাস পাবে না। সর্বোচ্চ কস্ট রিকভারির পরিমাণ ৬৫ থেকে ৮০ শতাংশের মধ্যে রাখার পক্ষে পেট্রোবাংলা।
এখন গভীর সমুদ্রে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম সাড়ে ৬ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী কোম্পানিগুলো চাইছে এই দাম বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজারের এলএনজির সমান করতে। একবারে দাম বাড়িয়ে ৮ থেকে ৯ ডলার করার দাবি করেছে তারা। কিন্তু পেট্রোবাংলা দাম এতো বেশি বাড়াতে চাইছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্যাস

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৯ জানুয়ারি, ২০২৩
১৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ