রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
রাজধানীর উপকন্ঠে শিল্পাঞ্চল খ্যাত সাভার-আশুলিয়ায় ৫০ শয্যার সরকারী একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসা সেবা চলছে ধীর গতিতে। হাসপাতালটিতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য গরীব অসহায় রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে এসে প্রতিনিয়ত সীমাহীন দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোগীরা সরকারীভাবে তাদের জন্য বরাদ্ধকৃত ওষুধ পাচ্ছে না। চিকিৎসকরা রোগীদের হাতে ব্যবস্থাপত্র ধরিয়ে দিয়েই দায়িত্ব শেষ কিন্তু ব্যবস্থাপত্রে ওষুধ হাসপাতাল থেকে না দিয়ে বাহির থেকে কিনে নিতে বলছে সংশ্লিষ্টরা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, চাহিদার তুলনায় ওষুধ কম এবং কিছু ঔষধের সরবরাহ নেই তাই অনেক ক্ষেত্রে ওষুধ বাহির থেকে কিনতে হয় রোগীদের।
১৯৮২ সালে সাভারের থানা রোড এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় সাভার থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পরবর্তী সময়ে সাভার থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উন্নীত করা হয়। হাসপাতালটিতে রয়েছে অন্তর্বিভাগ, বহির্বিভাগ ও প্যাথলজিসহ অপারেশন থিয়েটার। কিন্তু এত কিছু থাকার পরও রোগীদের রয়েছে নানা অভিযোগ। সবচেয়ে বড় অভিযোগ বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হচেছ না হাসপাতাল থেকে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ভিটামিন ও প্যারাসিটামল ট্যাবলেট দিয়ে বাহির থেকে অন্য ওষুধ কিনে নিতে বলছে।
সরেজমিনে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ভুক্তভোগী রোগীদের সাথে কথা বলে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শাহাদাৎ হোসেন (৪২) গত ১৬ আগষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যান (ব্যবস্থাপত্র নং-৪৬৯৯৬/৩১৮)। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র দিয়ে ওষুধ আলাদা কাগজে লিখে দেন হাসপাতাল থেকে নেয়ার জন্য কিন্তু দায়িত্বরত নুরুল ইসলাম ওষুধ বাহির থেকে কিনে নিতে বলেন রুগীকে।
হাজেরা আক্তার (৪০) এসেছেন আশুলিয়া থেকে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু চিকিৎসক তাকেও ব্যবস্থাপত্র (নং-৪৬৯৯০/৩১২) ধরিয়ে দেন। হাজেরা বলেন, আশুলিয়া থেকে বহু কষ্ট করে এসেছি এখন বলছে বাহিরে ঔষধের দোকান থেকে কিনে নিতে। তিনি ক্ষোভের শুরে বলেন, ওষুধ কিনে নিতে হইলে গাড়ি ভাড়া দিয়া এতো দূর আইল্যাম ক্যান?
৫ বছরের তামিম মায়ের সাথে এসেছে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে কিন্তু চিকিৎসা শেষে ওষুধ আনতে গেলে বাহির থেকে কিনে নিতে বলেন দায়িত্বরত কর্মচারী নুরুল ইসলাম। তামিমের ব্যবস্থাপত্র নং-৪৬৯৮৯/৩১১।
এদিকে ভ‚ক্তভোগীদের অভিযোগ প্রমানের জন্য গতকাল শনিবার সকালে এ প্রতিবেদক নিজেই ৩টাকা দিয়ে টিকেট কেটে ১০৪নং রুমে চিকিৎসক মাসুদের রুমে উপস্থিত হন। ডা. মাসুদ ওষুধ লিখে ব্যবস্থাপত্র (নং-৪৭৭৬৩/১২১) ধরিয়ে দেন। পরে একটি স্লিপে ঔষধের নাম লিখে যেখানে ওষুধ দেয়া হয় সেখানে পাঠিয়ে দেন কিন্তু দায়িত্বরত কর্মচারী নুরুল ইসলাম একপাতা ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স ট্যাবলেট ধরিয়ে দিয়ে বলেন, ওষুধ নেই বাহিরে ঔষধের দোকান থেকে কিনে নিন। পরে চিকিৎসককে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, কালকে রোববার) আসেন ঔষধের ব্যবস্থা করে দিবনে।
স্কায়ার ফর্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের প্রতিনিধি মোখলেছুর রহমান বলেন, আমি নিজেও একাধিকবার এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি কিন্তু প্রতিবারই আমাকে ওষুধ বাহির থেকে কিনে নিতে হয়েছে। তিনিও বলেন, ওষুধ যদি বাহির থেকে কিনে নিতে হয়, তাহলে সরকারী ওষুধগুলো কোথায় যাচ্ছে।
এপ্রসঙ্গে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমজাদুল হক বলেন, চাহিদার তুলনায় ওষুধ কম, তাছাড়া অনেক ওষুধের সরবরাহ নাই, তাই অনেকেই পায় না বাহির থেকে কিনে নিতে হয়। তবে আমাদের এখানে পর্যাপ্ত স্যালাইন রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।