পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের প্রথিতযশা সাংবাদিক, কলামিস্ট, বিশিষ্ট লেখক ও মানবাধিকার কর্মী কুলদীপ নায়ার পরলোক গমন করেছেন। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ১২টায় দিল্লির এসকর্টস হাসপাতালে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। নিউমোনিয়ার কারণে ৫ দিন আগে তাকে ঐ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। খবর দ্য হিন্দু ও এনডিটিভি। কুলদীপ নায়াারের জন্ম ১৯২৩ সালে, অবিভক্ত পাঞ্জাবের শিয়ালকোটে। তার বাবা নামকরা চিকিৎসক ছিলেন। সেই সুবাদে স্থানীয় হিন্দু-মুসলিম ও শিখদের অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। লাহোর থেকে তিনি আইনে স্নাতক হন। ভারত বিভাগের পর তিনি পাকিস্তান ত্যাগ করে দিল্লিতে চলে আসেন। তিনি ছিলেন ব্রিটিশ ভারত ও স্বাধীন ভারতের আশি বছরের বিভিন্ন ঐতিহাসিক মুহূর্ত ও ঘটনার সাক্ষী। পরবর্তী সময়ে তিনি নিজেকে বহুমাত্রিক পরিচয়ে বিস্তৃত করেন।
সাংবাদিকতার বিরতিতে কুলদীপ নায়ার সরকারি চাকরি করেছেন, বিদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। এক সময় তিনি যুক্তরাজ্যে ভারতের হাইকমিশনার ছিলেন। তিনি ছিলেন ভারতের উচ্চ পরিষদ তথা রাজ্যসভারও সদস্য।
কুলদীপ নিজেকে অবশ্যই ভারতীয় মনে করতেন, কিন্তু তার চেয়েও বেশি মনে করতেন উপমহাদেশীয়। তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মৈত্রী চেয়েছিলেন, আবার পাকিস্তাানের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে আজীবন আগ্রহী ছিলেন। তিনি উগ্র ধর্মবাদিতার মত অপছন্দ করতেন উগ্র জাতীয়তাবাদকে।
কুলদীপ নায়ার আইনে স্নাতক হলেও দিল্লীর উর্দু দৈনিক আঞ্জাম পত্রিকায় রিপোর্টার হিসেবে তার সাংবাদিকতা জীবনের শুরু। পরে তিনি বার্তা সংস্থা ইউএনআই-র প্রধান হন। তিনি ভারতীয় পত্রিকা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাবেক সম্পাদক ছিলেন। তার আত্মজীবনী ‘বিয়ন্ড দ্য লাইনস’ বা সীমার ওপারেসহ তার লেখা ১৫টি বই রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘ইন্ডিয়া আফটার নেহরু’, ‘ইমার্জেন্সি রিটোল্ড’, ‘ডিসট্যান্ট নেবারস: এ টেল অব দ্য সাবকন্টিনেন্ট’ প্রভৃতি। তাঁর কলাম ‘বিটুইন দ্য লাইন’ দেশ-বিদেশের ১৭টি ভাষার ৮০টি পত্রিকায় ছাপা হত। তার লেখা রাজনৈতিক বিশ্লেষণের জন্য প্রসিদ্ধ।
ঢাকায় ইনকিলাব ভবন থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক দি টেলিগ্রাফ এবং দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় তিনি কলাম লিখেছেন। তিনি একবার দৈনিক ইনকিলাব পরিদর্শন করেন এবং সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করেন।
কুলদীপ নায়ারের লেখনী তাকে গণতন্ত্র, তথ্য অধিকার ও মানবাধিকারের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। ভারতে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিরোধে তার কলম ছিল সর্বদাই নিরাপস। উল্লেখ্য, ১৯৭৫-৭৭ সালে ভারতে জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে তাকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়।
বিশিষ্ট ভারতীয় ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ তাকে অর্থ ও খ্যাতির প্রলোভন মুক্ত বিবেক দ্বারা চালিত এক সাংবাদিক বলে আখ্যায়িত করেছেন।
২০১৫ সালে অষ্টমবারের মতো রামনাথ গোয়েংকা এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। বিশিষ্ট এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে টুইট করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংও তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।