Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঘাটে আটকা পশুবাহী ট্রাক

ঠিক সময়ে হাটে পৌঁছা নিয়ে শঙ্কিত ব্যবসায়ীরা কোরবানির পশু কমতি হওয়ার শঙ্কা নেই

বিশেষ সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

মাদারীপুরের কাাঁটালিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে নদী পার হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে সহস্রাধিক যানবাহন। এর মধ্যে বিপুল সংখ্যক কোরবানির পশুবাহী ট্রাকও রয়েছে। আটকা পড়া এসব পশু শেষ সময়ে হাটে নিয়ে কাঙ্খিত দাম পাবেন কি না তা নিয়ে রীতিমতো শঙ্কায় আছেন পশু ব্যবসায়ীরা। এদিকে, ঢাকার ক্রেতাদের ধারণা ঘাটে আটকে পড়া পশুবাহী ট্রাকগুলো ঢাকায় প্রবেশ করলে কোরবানীর পশুর দাম আরও কমবে। সে হিসাবে এবার কোরবানির গরু কমতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের ঈদযাত্রায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে পদ্মার দুই ফেরিঘাটে। গতকাল সোমবার বিকাল পর্যন্ত মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে পার হওয়ার অপেক্ষায় ছিল হাজারেরও বেশি যানবাহন। এসব যানবাহনে মানুষের পাশাপাশি আটকা ছিল বিপুলসংখ্যক কোরবানির পশুবাহী ট্রাক। যার মধ্যে একাধিক পশুর প্রচন্ড গরমে মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে যাত্রীরা। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে পণ্যবাহী যান। যাত্রীবাহী গাড়ি ৪-৫ ঘণ্টায় পার হতে পারলেও দু-তিনদিন অপেক্ষা করেও ফেরির নাগাল পাচ্ছে না পণ্যবোঝাই ট্রাক। দৌলতদিয়া ঘাট থেকে একজন যাত্রী জানান, গতকাল বিকালেও পশুবাহী যানের সারি দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে এক কিলোমিটার দূরের বাইপাস সড়কে গিয়ে ঠেকেছেলি। সকাল ৮টার দিকে যানবাহনের সারি ফেরিঘাট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ রেলগেট পর্যন্ত অন্তত সাত কিলোমিটারে বিস্তৃত ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে যানবাহনের সারির দৈর্ঘ্য খানিকটা কমে পাঁচ কিলোমিটারে নেমে আসে। বিকালের পর যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকায় তা আবার দীর্ঘ হতে থাকে।
মাগুরা থেকে ১৬টি গরু নিয়ে শনিবার দুপুরে রওনা দেন ব্যবসায়ী রহিম উদ্দিন। বিকালে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌঁছেন। ট্রাকবোঝাই গরু নিয়ে রাতভর অপেক্ষা করে গতকাল সোমবার সকালে পদ্মা পার হয়েছেন তিনি। ক্ষুব্ধ এ ব্যবসায়ী বলেন, হাটে যেতে দেরি হয়ে গেল। শেষবেলায় এতগুলো গরু বিক্রি হবে কিনা জানি না।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, রোববার সন্ধ্যার দিকেও দৌলতদিয়া ঘাটে শতাধিক পশুবাহী যানবাহন আটকে থাকতে দেখা গেছে। গতকাল বিকালে এ রিপোর্ট লেখার সময়ও ঘাটে শত শত ট্রাক আটকে ছিল। সে কারণে ঈদের আগে হাটে গরু পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের চোখে-মুখে বিরক্তি, মনে ভয়। প্রচন্ড গরম ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাকে প্রকট করে তুলেছে। গরমের কারণে একাধিক গরু মারা যাওয়ার খবর মিলেছে।
পারাপারে বিলম্বের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডবিøউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক সফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পাঁচটি ফেরিঘাট চালু আছে। যানবাহন পারাপারে ব্যবহৃত হচ্ছে ২০টি ফেরি। ঘাট এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি কমাতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, পারাপারের ক্ষেত্রে কোরবানির পশুবাহী যানবাহনগুলোকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।
একই অবস্থা বিরাজ করছে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী ঘাটে। নাব্য সংকটের কারণে কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া রুটে ফেরি চলাচল কম। বড় ফেরিগুলো বন্ধ রেখে ছোটগুলো চালানো হচ্ছে। এ কারণে পদ্মা পাড়ি দিতেই লেগে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, লক্ষীপুরের মজু চৌধুরীহাট ফেরিঘাট দিয়ে মেঘনা পাড়ি দিতেও লাগছে দীর্ঘ সময়। সেখানে নাব্য সংকট কিংবা জোয়ার-ভাটার কোনো সমস্যা নেই। নেই ফেরি সংকটও। আবার যানবাহনের যে খুব ভিড় থাকছে তা-ও নয়। অভিযোগ রয়েছে, এখানে পারাপারে ধীরগতির কারণ একটি অসাধু চক্র। তারা বাড়তি যাত্রী ও পরিবহনের আশায় ফেরি নিয়ে ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখছে। এতে পশুবাহী ট্রাকও আটকা পড়ছে। অসাধু চক্রের বিষয়টি স্বীকারও করেছেন বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা। মজু চৌধুরীহাট ঘাটের একজন কর্মকর্তা বলেন, সিন্ডিকেটের প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে অনিয়ম করে যাচ্ছে। কেউ কোনো ধরনের ছাড় দিচ্ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গরু

২৪ জুন, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ