পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রবীণ সাংবাদিক ও সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ারের লাশ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় দেশে পৌছেছে। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে তাকে দেশে আনা হয়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদন। ওই দিন বাদ জোহর জাতীয় প্রেসক্লাবে নামাজের জানাজা এবং বাদ আসর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে। বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন সাংবাদিকতার বাতিঘর হিসেবে পরিচিত গোলাম সারওয়ার। সাংবাদিকতার দিকপালের বিদায়ে সাংবাদিক সমাজ শোকে নিশ্চুপ।
প্রথিতযশা এই সাংবাদিকের লাশ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের এসকিউ-৪৪৬ ফ্লাইটে দেশে পৌঁছে। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় তার উত্তরার বাসভবনে। সেখান থেকে লাশ রাখা হবে বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে। আজ বুধবার গোলাম সারওয়ারের লাশ নিয়ে যাওয়া হবে তার প্রিয় জন্মস্থান বরিশালের বানারীপাড়ায়। সেখানে শ্রদ্ধা ও জানাজার পর তার ঢাকায় নিয়ে আসা হবে।
আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় গোলাম সারওয়ারের লাশ নিয়ে আসা হবে তার প্রিয় কর্মস্থল সমকাল কার্যালয়ে। সেখানে সহকর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় সকাল ১১টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সর্বস্তরের জণগণের শ্রদ্ধার জন্য রাখা হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। শ্রদ্ধা জানানোর পর সেখান থেকে লাশ নিয়ে যাওয়া হবে জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে। দীর্ঘ কর্মময় জীবনের অনেকটা সময় তিনি এখানে কাটিয়েছেন।
সংবাদকর্মীরা সেখানে গোলাম সারওয়ারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। বাদ জোহর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বাদ আসর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে সাংবাদিকতার এই দিকপালকে।
উল্লেথ্য, গত ৩ আগস্ট মধ্যরাতে সমকাল সম্পাদককে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়। পরদিন সকালে তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসার পর তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতিও হয়েছিল। কিন্তু গত রোববার হঠাৎ করে তার রক্তচাপ কমে যায়। কিডনিও স্বাভাবিকভাবে কাজ করছিল না। এ অবস্থায় সোমবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। এর আগে ২৯ জুলাই মধ্যরাতে দেশবরেণ্য সাংবাদিক, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি গোলাম সারওয়ার রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন। একুশে পদকজয়ী গোলাম সারওয়ার বার্তা সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন দৈনিক ইত্তেফাকে। এরপর দৈনিক যুগান্তরের মাধ্যমে সম্পাদকের খাতায় নাম লেখান তিনি। সর্বশেষ তিনি ছিলেন সমকালের সম্পাদক। গোলাম সারওয়ারের মৃত্যুতে গতকালও শোক জানিয়েছে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ), ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাাব), বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বিভিন্ন সংগঠন।
সাংবাদিক গোলাম সারোয়ারের মৃত্যুতে সম্পাদক পরিষদের শোক
সম্পাদক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সমকাল সম্পাদক গোলাম সারোয়ারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছে সম্পাদক পরিষদ।
এমন এক মুহূর্তে বিশেষ করে যখন তার প্রাজ্ঞ্য দিক নির্দেশনা ও সুদক্ষ পরিচালনা শক্তি অত্যন্ত বেশি প্রয়োজন, সে মুহূর্তে তার ইন্তেকালে বাংলাদেশ সাংবাদিকতা জগতে অপূরণীয় ক্ষতি হল। সাংবাদিকদের অধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় তিনি সবসময় কাজ করে গেছেন । তিনি নিয়োজিত পেশার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন।
১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বাংলা সাহিত্যের উপরে স্নাতক ও স্নাতকত্তোর ডিগ্রী অর্জন করেন। দৈনিক আজাদের বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন, পরবর্তীতে দৈনিক সংবাদ এবং দৈনিক ইত্তেফাকে কাজ করেন। ১৯৯৯ সালে যুগান্তরে সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৫ সালে তিনি সমকালে প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সমকালে সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য তিনি ২০১৪ সালে ্রএকুশে পদকেগ্ধ ভূষিত হন। প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) এর চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণের মান উন্নয়নে জড়িত ছিলেন।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি গোলাম সারোয়ার বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের আপিল বিভাগের সদস্য ছিলেন এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেশ কয়েকবার কাজ করেছেন। তিনি বেশ কয়েকটি বই লেখেন। ‘সম্পাদকের জবানবন্দি’, ‘অমিয়গরল’, ‘আমার যত কথা’, এবং ‘স্বপ্ন বেঁচে থাক’ তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে কর্মজীবনে গোলাম সারোয়ার একটি সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার রেখে গেছেন যা আগামী বছরগুলোতে সাংবাদিকদের অনুপ্রাণিত করবে। আমরা তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। তার আত্মার মাগফিরাতের জন্য সর্বশক্তিমানের কাছে প্রার্থনা করি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।