Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাটে শতভাগ দেশী গরু

মিজানুর রহমান তোতা : | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

কোরবানির পশুহাট জমতে শুরু করেছে। গ্রামের রাস্তায়, খামারীতে, কৃষকের বাড়িতে ও পশুহাটগুলোতে গরু-ছাগল বেচাকেনা শুরু হয়েছে পুরোদমে। চারিদিকে শুধু গরু আর গরু। এবার হাটে শতভাগ গরু দেশী। ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীরা মোটেও সুবিধা করতে পারেনি। সীমান্তের করিডোর দিয়ে গরু ঢোকা কার্যত বন্ধ। বিজিবি সীমান্তে গরু করিডোরগুলোতে নজরদারি বাড়িয়েছে। ভারতীয় গরু যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। ভারতীয় গরু আমদানীর সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাদের বক্তব্য হলো‘ করিডোরে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভারতীয় গরুর ব্যবসা করবো না। দেশী গরুর ব্যবসায় কম লাভ নয়। তাই আর নয়। কোরবানির পশুহাট দেশী গরু ছাগলে ভরে গেছে। এ চিত্র সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের।
প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সুত্রে জানা গেছে, বেশীরভাগ মানুষ কোরবানির পশু ক্রয় করছেন দেশীয়। তাও আবার হাটের চেয়ে বেশী ক্রয় করতে দেখা যাচ্ছে গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃৃষকের লালন পালন করা গরু ও ছাগল। ক’দিন আগেও খামারী ও কৃষকের মাথায় হাত উঠেছিল, দুশ্চিন্তায় পড়েছিল ভারতীয় গরু ঢোকার কারণে। সে চিত্র পাল্টে যাচ্ছে। শতভাগ ক্রেতার ঝোঁক বেশী দেশীয় গরুর দিকে।
দক্ষিণ-পশ্চিমের পশুহাট যশোর উপশহর, নওয়াপাড়া, রাজারহাট, বারীনগর, চৌগাছা, মনিরামপুর খুলনার ফুলতলা, সাতক্ষীরার কলারোয়া, ঝিনাইদহের বারোবাজার, কালীগঞ্জ, মহেশপুর, কোটচাঁদপুর, খালিসপুর, হাটগোপালপুর, ভাটই, গাড়াগঞ্জ, শেখপাড়া ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগরসহ বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাট এখন জমজমাট। দেশী গরু বিক্রেতা বারীনগরের হাসমত আলী বললেন, গতবারও টুকটাক ভারতীয় গরু হাটে দেখা যেত, এবার হাটে তো ভারতীয় গরু দেখছি না। সব দেশী গরু। সবারই ধারণা যে, ভারতীয় গরুর গোশতে আঁশ মোটা, স্বাদ কম, আর দেশী গরুর গোশতের স্বাদই আলাদা। প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, গরু ও ছাগল পালনকারী ব্যক্তি ও পরিবারের সংখ্যা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় ৬ লাখ। এর বাইরে ভেড়া ও মহিষ পালনকারী কৃষক রয়েছে অসংখ্য।
ক্রেতা ও বিক্রেতাদের বক্তব্য, সামগ্রিক গ্রামীণ অর্থনীতিতে মন্দাভাব বিরাজ করছে। তবুও ঈমানী দায়িত্ব পালন করার জন্য মানুষ পশু কোরবানী করেন। যশোর বারীনগর হাটে গরু বিক্রি করতে আসা নিশ্চিন্তপুর গ্রামের লিয়াকত আলী বললেন, স্থানীয় বাজারে ভারতীয় গরু নেই। তাছাড়া এবার গ্রামে বাড়ি বাড়ি গরু ও ছাগল ক্রয় করতে বেশী দেখা যাচ্ছে। কোরবানির পশুহাটে ব্যাপক আমদানী তবু ক্রেতা খুবই কম। একাধিক সুত্র জানায়, দেশী গরু ও ছাগল পালন আগের চেয়ে বেড়েছে অনেক। প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগের উপ পরিচালক কল্যাণ কুমার ফৌজদার জানান, গোটা অঞ্চলে ৬২ হাজার ৩শ’ খামারে কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। গরু, ছাগল ও ভেড়া রয়েছে ৮ লাখ ১০ হাজার ৫ শ’ ২৩ টি। কোরবানীর পশু সংকটতো প্রশ্নই ওঠে না। বরং এ অঞ্চল থেকে বিশেষ করে যশোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গার গরু ও ছাগল যাচ্ছে ঢাকার গাবতলী পশু হাটে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ