পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
০ পর্যায়ক্রমে মিলবে ২০ থেকে ৫০ কোটি ঘনফুট
সমুদ্রে অবস্থানরত জাহাজের টার্মিনাল থেকে সরাসরি পাইপলাইনে এলএনজির (ভাসমান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) পরীক্ষামূলক সরবরাহ শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম হয়ে গ্রিড লাইনে গ্যাস যেতে পারে আর দুয়েক দিনের মধ্যে। এ সময়ের মধ্যেই পাইপলাইনে গ্যাসের স্বাভাবিক চাপ তৈরি হবে বলে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী। ছয় দফা তারিখ পিছিয়ে প্রায় চার মাস পর এলএনজি সরবরাহের প্রক্রিয়া অবশেষে গত সোমবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করা হয়। এর আগে কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপের মাতারবাড়ীর অদূরে অবস্থানরত এলএনজিবাহী জাহাজের টার্মিনাল পয়েন্ট থেকে রূপান্তরিত গ্যাস সরবরাহের সময় সমুদ্রের তলদেশে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনে মাঝে মাঝে যেসব ফুটো ও ত্রæটি-বিচ্যুতি ধরা পড়ে তা মেরামত করা হয়েছে।
আমেরিকান এক্সিলারেট এনার্জি কোম্পানির প্রকৌশলী ও ডুবুরীদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় মেরামত কাজ সম্পন্ন হয়। তাছাড়া চট্টগ্রাম অংশে গ্রিড পাইপলাইন স্থাপন ও ত্রæটি সারানোসহ শেষ করা হয় যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা। বর্তমানে পরীক্ষামূলক ও এরপর পুরোদমে এলএনজি থেকে রূপান্তরিত গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রম চালু হলে দেশে গ্যাসের ঘাটতি কিছুটা হলেও নিরসন হবে। বিশেষ করে শিল্প-কারখানা প্রধান চট্টগ্রাম অঞ্চলে দীর্ঘদিনের গ্যাস সঙ্কট লাঘব এবং উৎপাদনের চাকা সচল হবে এমনটি আশা করছে পেট্রোবাংলা এবং কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
গত ২৪ এপ্রিল এলএনজিবাহী দেশে প্রথম ও এ যাবত সর্ববৃহৎ জাহাজ ‘এমটি এক্সিলেন্স’ মহেশখালীর কাছে সমুদ্রে এসে পৌঁছায়। এক লাখ ৩৬ হাজার ৯শ’ ঘনমিটার এলএনজি বহনকারী টার্মিনালযুক্ত জাহাজটি কাতার থেকে এলএনজির প্রথম আমদানি চালান নিয়ে আসে। কিন্তু জাহাজ থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস রূপান্তর এবং সরবরাহ শুরু না হতেই দেখা দেয় একের পর এক বিপত্তি। জাহাজের সাথে যুক্ত টার্মিনাল থেকে সাগরের তলদেশে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বেশ কয়েকটি ফুটো ও বিভিন্ন ত্রæটি-বিচ্যুতি। উত্তাল সাগরে মেরামত কাজে দফায় দফায় ঘটে ব্যাঘাত। চট্টগ্রামে গ্রিড লাইনের কাজেও দেখা দেয় ত্রæটি ও জটিলতা।
এ অবস্থায় প্রথম দফায় ২৫ অথবা ২৬ এপ্রিল, দ্বিতীয় দফায় ১০ মে, তৃতীয় দফায় ২৬ মে, চতুর্থ বার ৬ থেকে ১২ জুনের মধ্যে, পঞ্চম দফায় ২২ অথবা ২৩ জুন এবং সর্বশেষ ষষ্ঠ দফায় জুলাই মাসের মাঝামাঝি কিংবা শেষে তারিখ নির্ধারণ করা সত্তে¡ও এলএনজি টার্মিনাল গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। এলএনজি নিয়ে বেলজিয়ামের পতাকাবাহী বিশাল জাহাজ ‘এক্সিলেন্সে’র প্রায় চার মাস অলস অপেক্ষার কারণে পরিচালন ব্যয় ও আনুষঙ্গিক খরচ, জাহাজকে সহায়তাকারী ৫টি টাগ পরিচালনা ব্যয় বাবদ দৈনিক লোকসান গুণতে হয়েছে ৪০ হাজার ডলার হারে। সে হিসাবে এলএনজির আমদানিকারক সংস্থা পেট্রেবাংলার লোকসান হয়েছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। তাছাড়া এই বিলম্বের কারণে কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের আরও কয়েকটি দেশ এবং মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর থেকে এলএনজির পরবর্তী চালান দেশে এসে পৌঁছাও বিলম্বিত এবং এখনো অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) মহেশখালী স্টেশন থেকে ৯১ কিলোমিটার পাইপলাইন দিয়ে চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা হয়ে এলএনজি উৎস থেকে সীতাকুÐে জাতীয় গ্যাসগ্রিডের সঙ্গে যুক্ত হবে। টার্মিনাল থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে ধাপে ধাপে দৈনিক ২০ থেকে ৩০ কোটি ঘনফুট এবং পর্যায়ক্রমে তা ৫শ’ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। মাতারবাড়ী টার্মিনালের রি-গ্যাসিফিকেশন ক্ষমতা বর্তমানে দৈনিক ৫শ’ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি ঘনফুট। তবে এই রূপান্তর ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
১৫ বছরের চুক্তির আওতায় রি-গ্যাসিফিকেশন চার্জ নেবে এক্সিলারেট এনার্জি। ‘এক্সিলেন্স’ জাহাজটি টার্মিনাল নিয়ে সাগরে অবস্থান করবে। সাগরে ভাসমান টার্মিনালের অবস্থান থেকে সাড়ে ৪ কিলোমিটার সমুদ্র তলদেশের পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস জিটিসিএল স্টেশনে যাবে। কক্সবাজারের মহেশখালী থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা পর্যন্ত ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ৯১ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন আগেই এবং আনোয়ারা থেকে চট্টগ্রামের সীতাকুÐ পর্যন্ত ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের আরও ৩০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করে ইতোমধ্যে সফল পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
দেশে বর্তমানে দৈনিক ৩৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে ২৬৫ থেকে ২৭৫ ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। চট্টগ্রামে ৫০ কোটি ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে মিলছে মাত্র ২০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। এলএনজি উৎস থেকে অর্ধেক অর্থাৎ ২৫ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করে শিল্পাঞ্চল সমৃদ্ধ চট্টগ্রামের ঘাটতি নিরসনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বাকি অর্ধেক যাবে জাতীয় গ্রিডে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা, কোরিয়ান ইপিজেডসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বহুজাতিক শিল্প প্রতিষ্ঠান এলএনজির দিকে তাকিয়ে আছে। হাজার কোটি টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করেও গ্যাসের অভাবে উৎপাদনে যেতে পারছে না নতুন স্থাপিত কয়েক শ’ শিল্প-কারখানা। ব্যাহত হচ্ছে রফতানি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।