পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) আদায়ের সন পরিবর্তন করা হচ্ছে। পহেলা বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত সময়ের খাজনা আদায়ের তারিখ পরিবর্তন করে ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন নতুন তারিখ নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে ভুমি মন্ত্রণালয়।
এদিকে ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষিজমির কোনো কর বা খাজনা দিতে হবে না এবং বাণিজ্যকভাবে মৎস্যচাষ,চিংড়িচাষ, হাসমুরগী ও গবাদিপশুর খামার বিশেষকার্যে ব্যবহারে করিলে উক্ত জমির ভুমি উন্নয়ন করে হার বাষিক প্রতি শতাংশ ২টাকা করে নিতে প্রস্তাব করা হয়েছে।
বর্তমানে বাংলা সালকে ভিত্তি করে খাজনা আদায় করা হয়। অর্থাৎ ১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত সময়ের খাজনা আদায় করা হয়। খসড়া আইনে ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন নির্ধারণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে (তহশিলদার) বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে ভূমি উন্নয়ন কর আইন, ২০১৮’এর খসড়া পরীক্ষা- নিরীক্ষার করা হয়েছে।
গতকাল রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আইন)এর সভাপতিতে ভূমি উন্নয়ন কর আইন-২০১৮এর খসড়া পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এটি আইনের পরীক্ষা- নিরীক্ষার বিষয়ে দ্বিতীয় সভা করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
খসড়া অনুয়ায়ী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বছর শুরু হওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করে জমি ব্যবহারের প্রকৃতি পরিবর্তন বা শ্রেণি বদল হলে তা আমলে নিয়ে ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) নির্ধারণ করবেন। করের এ তালিকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনুমোদন করলে তা জনসাধারণের জন্য প্রকাশ ও প্রচার করা হবে। জেলা প্রশাসক (ডিসি) প্রচলিত পদ্ধতিতে এ কাজটি বাস্তবায়ন করে আসছেন। তাদের কাছে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
ভূমি সচিব মো. আব্দুল জলিল ইনকিলাবকে বলেন, ভুমি উন্নয়ন কর আইন পাস হলে সরকারের রাজস্ব আয় আরো বৃদ্ধি পাবে। তবে ইংরাজি তারিখ হয়তে মাননীয় প্রধানন্ত্রী রাখবে না তিনি হয়তে বাংলা সন রাখতে বলবেন। সচিব বলেন, আমরা আইনের খসড়া করেছি অধ্যাদেশের সঙ্গে মিল রেখে। ভূমি উন্নয়ন কর ধার্য ও আদায়ের জন্য প্রণীত এ খসড়া আইনের প্রায় সব বিষয়ই বর্তমানে চালু রয়েছে। এমনকি ভূমি উন্নয়নের যে কর বর্তমানে প্রচলিত রয়েছে, তা-ই খসড়া আইনে বহাল রাখা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খসড়া আইনে খাজনা আদায়ের বছর নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃটিশ আমল থেকে বাংলা সালকে ভিত্তি করে সারাদেশে খাজনা আদায় করা হয়। অর্থাৎ ১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত সময়ের খাজনা আদায় করা হয়। খসড়া আইনে ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন নির্ধারণ করা হয়েছে।
বর্তমানে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হয় ১৯৭৬ সালের ভূমি উন্নয়ন কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী। আদালতের নির্দেশে সামরিক শাসনামলে প্রণীত অধ্যাদেশ আইনে রূপান্তর করা হচ্ছে। এই বাধ্যবাদকতার জন্য বিভিন্ন অধ্যাদেশের সমন্বয়ে ভূমি উন্নয়ন কর আইনের খসড়া করা হয়েছে। এ আইনে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি এবং বান্দবান জেলাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত খসড়াটির বিষয়বস্তু, ভাষার বিন্যাস এবং অন্যান্য আইনের সঙ্গে সংগতি বৈপরীত্যসহ সকল বিষয়ের উপর লিখিত মতামত নেয়া হয়। যা আগামীতে মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে, অর্থবছর অনুযায়ী ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হবে। আগের বছরের কর অনাদায়ী থাকলে তা আদায় না করে নতুন কর আদায় করা যাবে না। ভূমি মালিক ইচ্ছা করলে তিন বছরের কর একসঙ্গে দিতে পারবেন। তবে পরে কর বাড়লে তা পরিশোধ করতে হবে। বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর শতকরা ছয় টাকা ২৫ পয়সা হারে সুদসহ আদায় করতে হবে। একাধিক বছরের বকেয়ার ক্ষেত্রে চক্রবৃদ্ধি সুদসহ আদায় করতে হবে।
ভূমির খন্ডিতকরণ রোধ করার জন্য একটি দাগে ভূমি মালিকের সর্বনিম্ন জমির পরিমাণ ১ শতাংশ উৎসাহিত করা হবে। ভূমি মালিকের জমি ১ শতাংশের কম অর্থাৎ শতাংশের ভগ্নাংশ থাকলে তা পূর্ণ শতাংশ গণ্য করে কর নির্ধারণ করা হবে। যে সব প্রতিষ্ঠানকে ভুমি কর দিতে হবে না। সে গুলো হচ্ছে, করবস্থান, শ্মশান, মসজিদ, ঈদগাহ, সর্বজনীন মন্দির, গির্জা বা সাধারণের প্রার্থনার স্থান ভূমি উন্নয়ন কর থেকে অব্যাহতি পাবে।
তবে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, গোত্রীয়, দলীয় ও সা¤প্রদায়িকভিত্তিক উপাসনালয় বা সমাধিক্ষেত্রকে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে এবং দান ও দর্শনীর অর্থে পরিচালিত উপসনালয় বা সমাধিক্ষেত্রের বেলায়ও কর দিতে হবে।
খসড়া আইনে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের জন্য সার্টিফিকেট মামলা বহাল রাখা হয়েছে। ভূমির মালিক স্বপ্রণোদিত হয়ে বকেয়া কর পরিশোধ না করলে তা আদায়ের জন্য ১৯১৩ সালের সরকারি পাওনা আদায় আইন অনুযায়ী সার্টিফিকেট মামলা করতে পারবে। অন্য কোনো আইনে যা-ই থাকুক না কেন, এ আইনের আওতায় ভূমি উন্নয়ন কর কখনো তামাদি হবে না।
ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কর নির্ধারণী তালিকা প্রকাশের পর কোনো ব্যক্তি সংক্ষব্ধ হলে ৩০ দিনের মধ্যে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) ধারা-১৫ এর উপধারা(২) এর নির্ধারিত কোর্ট ফিসহ আবেদন করতে পারবেন। সহকারী কমিশনার আবেদন পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করবেন। সহকারী কমিশনারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) কাছে আপিল করতে পারবেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৪৫ দিনের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনার এবং বিভাগীয় কমিশনারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৯০ দিনের মধ্যে ভূমি আপিল বোর্ডে আপিল করা যাবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের আপিল ৩০ দিনের মধ্যে এবং বিভাগীয় কমিশনারের অপিল ৪৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি না হলে তাদের কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই পরবর্তী কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করা যাবে। ভূমি আপিল বোর্ড ১৮০ দিনের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করবে।
বর্তমানে ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষিজমির কোনো কর বা খাজনা দিতে হয় না। খসড়া আইনেও এ বিধান বহাল রাখা হয়েছে। এ ছাড়া অকৃষিজমিকে বাণিজ্যিক, শিল্প এবং আবাসিক ও অন্যান্য এই তিন শ্রেণিতে ভাগ করে প্রতি শতক জমির ওপর নির্ধারিত হারে কর আদায় করার বিধান যুক্ত হয়েছে। বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত জমির ভূমি উন্নয়ন করের হার ক-ধাপে ৩০০ টাকা, খ-ধাপে ২৫০ টাকা, গ-ধাপে ২০০ টাকা, ঘ-ধাপে ১০০ টাকা, ঙ-ধাপে ৬০ টাকা এবং চ-ধাপে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। শিল্পের কাজে ব্যবহৃত জমির ভূমি উন্নয়ন করের হার ক ও খ-ধাপে ১৫০ টাকা, গ-ধাপে ১২৫ টাকা, ঘ-ধাপে ৭৫ টাকা, ঙ-ধাপে ৪০ টাকা এবং চ-ধাপে ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অবাসিক ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত জমির উন্নয়ন কর ক-ধাপে ৬০ টাকা, খ-ধাপে ৫০ টাকা, গ-ধাপে ৪০ টাকা, ঘ-ধাপে ২০ টাকা, ঙ-ধাপে ১৫ টাকা ও চ-ধাপে ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কোনো জমির মালিকের একই মৌজায় অনেক জমি থাকলে তা একত্রিত করিয়া ভুমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ ও আদায় করতে পারবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।