মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীন সরকার সম্প্রতি দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় নিনজিয়া প্রদেশে নতুন ও বিরাট একটি মসজিদ পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর প্রতিবাদে সেখানে হাজার হাজার হুই মুসলিম সরকারবিরোধী বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করেছে।
অনেকগুলো গম্বুজ ও মিনার নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য রীতিতে তৈরি উইজুর প্রধান মসজিদটি ছিল দৃষ্টিনন্দন একটি স্থাপত্য। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে, এটি তৈরি করার আগে কর্তৃপক্ষ থেকে যথাযথ অনুমতি দেয়া হয়নি। গত ৩ আগস্ট মসজিদটিকে নোটিশ দেয়ার সময় এ কথা জানানো হয়। এতে আরো বলা হয়, ১০ আগস্ট এটি ভেঙে ফেলা হবে।
সরকারি নির্দেশটি স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়। কিন্তু সরকারের সাথে মসজিদের প্রতিনিধিদের আলোচনা কোনো ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়। সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, যদি মসজিদের গম্বুজগুলোকে চীনা রীতিতে তৈরি প্যাগোডার মতো করে বদলে দেয়া হয় তাহলে মসজিদ আরো সম্প্রসারণেরও অনুমতি দেয়া হবে। কিন্তু মুসলমানরা সরকারের ওই দাবি প্রত্যাখ্যান করে।
গতকাল শুক্রবার সকাল হতেই স্থানীয় মুসলমানেরা মসজিদের কাছে জড়ো হতে থাকে। শহরের মেয়র দুপুরে তার সাথে বৈঠকের বসার ব্যাপারে মতো দেন। মুসলমানেরা কোনোভাবেই মসজিদ পাল্টে ফেলার এই সরকারি পরিকল্পনার সাথে একমত হতে সম্মত নন। তারা বলেন, যদি আমরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হই, তাহলে আমরা আমাদের ধর্মীয় চেতনাকেই যেন বিক্রি করে ফেলব।
তবে সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সরকার কেবল চায় এ স্থাপনা তার নিয়ম মেনে পুনর্নিমিত হোক। জনগণের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ব্যাপারে ঐক্য হয়নি। চীনা কর্মকর্তারা বলেন, এই মসজিদের মতো বিদেশী নকশার অনুকরণে ইসলামিকরণ থেকে তারা মুসলমানদের বিরত রাখতে চান। একই সাথে তারা চান সবাই যেন ‘চীনা’ পদ্ধতিতে নিজ নিজ ধর্মের চর্চা করে।
মসজিদ ইস্যুতে গত বৃহস্পতিবার থেকেই স্থানীয় জনসাধারণ মসজিদ চত্বরে জড়ো হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। সেখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও উপস্থিত রয়েছে।
উল্লেখ্য, হুই মুসলিমরা চীনের অন্য অংশের মুসলমানদের চেয়ে কিছুটা ভালো অবস্থানে রয়েছে। তারা সেখানে সরকারের সাথে সুসম্পর্ক ধরে রেখেছে। অনেকে সরকারি কর্মকাণ্ডেও অংশগ্রহণ করছে। সে তুলনায় জিনজিয়াংয়ের উইঘুর মুসলমানরা সরকারের পক্ষ থেকে অনেক বেশি চাপের মধ্যে রয়েছে। হাজার হাজার উইঘুর মুসলমান জিনজিয়াংয়ের বন্দিশিবিরগুলোতে আটক রয়েছে।
তবে চীনা কর্তৃপক্ষ এখন আশঙ্কা করছে, হুই মুসলিম সম্প্রদায়ও ধীরে ধীরে বড় আকার ধারণ করতে পারে, নিনজিয়া ও পার্শ্ববর্তী গানসু প্রদেশের মুসলমানরা মিলে একটি বড় শক্তি হিসেবে আত্ম প্রকাশ করতে পারে।
চীনে আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মের ক্ষেত্রে স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে দেশটি কথিত মৌলবাদের উত্থান ও সহিংসতার আশঙ্কায় মুসলিমবহুল এলাকাগুলোতে নিয়ন্ত্রণ অনেক বেশি কঠোর করেছে। সম্প্রতি চীন সরকার সেদেশের মসজিদে কম বয়সীদের ধর্মীয় শিক্ষা নিষিদ্ধ করেছে, নামাজের সময় লাউড স্পিকার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং মসজিদগুলোতে আরবীয় নিদর্শন থাকার বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ফেলেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।