Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামে পানিবদ্ধতা নিরসনে মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে সংশয়

জনগণকে অন্ধকারে রেখেছে সিডিএ

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

স্বচ্ছতার স্বার্থে চট্টগ্রামে পানিবদ্ধতা নিরসনে নেওয়া প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার মেগাপ্রকল্প জনগণের সামনে উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম। গতকাল (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ কর্তৃক প্রকল্পটির যথাযথ বাস্তবায়ন নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন। আগামী তিন বছরে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়। এই পকল্পের আওতায় কি কি কাজ হবে, প্রতিটি কাজ শেষ করতে কত সময় লাগবে, প্রকল্পের বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের পরিমাণ কত সবকিছু নাগরিকদের সামনে তুলে ধরার দাবিও জানান বিশিষ্টজনদের নিয়ে গঠিত এই সংগঠনের নেতারা।
সংগঠনের সভাপতি ও ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর মু. সিকান্দার খান বলেন, পানিবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পরিকল্পনা যেন অবশ্যই বাস্তবায়িত হয়। অনেকে বড় বাজেটের প্রকল্প এনে মানুষকে খুশি করে। অথচ কাজ শেষে বাস্তব অবস্থার উন্নতি হয় না। পানিবদ্ধতা নিরসনের এই মেগাপ্রকল্প বিষয়ে সাধারণ মানুষ কিছুই জানে না। জনগণকে অবশ্যই বিস্তারিত জানাতে হবে। তিনি বলেন, কাজের দায়িত্ব সেনাবাহিনী দেওয়া হয়েছে এ অজুহাতে সিডিএ চুপ করে থাকলে হবে না। সব কাজে আর্মিকে জড়ানো কি ঠিক ? এ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে তার রক্ষণাবেক্ষণ কিভাবে হবে তা নিশ্চিত করার উপরও জোর দেন ফোরাম সভাপতি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্থপতি জেরিনা হোসাইন বলেন, আমরা প্রকল্পের বিরোধিতা করছি না। আমরা শুধু এই যে হাজার হাজার কোটি টাকার মেগাপ্রকল্প, সেটা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটা জানতে চাই। প্রকল্পের কারিগরি, প্রাতিষ্ঠানিক সব বিষয়ে স্পষ্টভাবে জানতে চাই। কারণ না জানলে, ভুল কোথায় আছে কিংবা গ্যাপ কোথাও আছে কি না? সেটা না জানলে তো আমরা সহযোগিতা করতে পারব না। তিন বছরে এটার কাজ শেষ হবে কি না সেটা জানাতে হবে। তিন বছর পর এর ধারাবাহিকতা কে রক্ষা করবে ? কারণ ইতোমধ্যে সিডিএ ও সিটি করপোরেশন দুই মেরুতে অবস্থান নিয়েছে। সিডিএ কাজ শেষ করার পর সিটি করপোরেশন যদি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব না নেয়, তাহলে কি হবে? আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে চাই।জেরিনা হোসাইন বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে দাবি করি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে উন্নয়নের একটা কর্মপরিকল্পনা থাকে, যেখানে জনগণকে জানানো ও নাগরিকের মতামত নেওয়া বাধ্যতামূলক। উন্নয়নের ক্ষেত্রে যেন গণতান্ত্রিক ধারা বজায় থাকে, সেটা আমরা নিশ্চিত করার দাবি করছি। সংগঠনের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী বলেন, মেগাপ্রজেক্ট মেগাচ্ছন্ন অবস্থায় আছে। আমরা এই প্রজেক্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন। কোন কাজটা আগে হবে, সেটা আমাদের জানাতে হবে। আগে কি খাল-নালা পরিস্কার হবে নাকি অবৈধ দখলমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে সেটা তো আমাদের জানাতে হবে। এই প্রকল্পে শুভঙ্করের কোন ফাঁক আছে কি না সেটাও জানাতে হবে। কোন খাতে কত ব্যয় করা হচ্ছে সেটা জনগণকে জানাতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া। এতে বলা হয়, নতুন খাল খনন, পরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণ, বর্জ ব্যবস্থাপনা, খাল-ড্রেন, পাহাড় ব্যবস্থাপনা, খাল দখল ও পাহাড় কাটা প্রতিরোধ এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণ রোধ করা না গেলে এই প্রকল্পের সুফল পাওয়া নিয়ে সংশয় থেকে যাবে। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি শামসুল হোছাইন, নির্বাহী সদস্য প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার ও শাহরিয়ার খালেদ। দেলোয়ার মজুমদার বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ করছে সিডিএ। আমরা এর বিরোধিতা করছি না। আমরা শুধু বলছি, এত হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, সেটা জনবান্ধব হতে হবে। জনগণকে এর সুফল পেতে হবে।
প্রসঙ্গত ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, স¤প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ নামে পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গত ৯ আগস্ট একনেকের অনুমোদন পায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ