Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্থনৈতিক অঞ্চলে আসছে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যাচাইয়ে বাংলাদেশ সফরে আসছেন একদল ভারতীয় ব্যবসায়ী। চলতি বছরের মে মাসে ভারত সফরের সময়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য সেদেশের ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে আহ্বানে সাড়া দিয়েই বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, সরকারি ও বেসরকারি মালিকানায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বাইরে সম্পূর্ণ বিদেশী উদ্যোগে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া হচ্ছে। মে মাসে ভারত সফরে গিয়ে সেখান থেকে বিনিয়োগ আহ্বান করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সে সময় দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনাকালে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় ভারতীয় বিনিয়োগের জন্য জমি বরাদ্দের বিষয়টিও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। মূলত প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বানে সাড়া দিয়েই ভারতীয় ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ সফরে আসছে।
সূত্রমতে, স¤প্রতি বেজা কার্যালয়ে এ নিয়ে একটি চিঠি পাঠায় ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি)। সেখানে মে মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের বরাত দিয়ে এখানে বিনিয়োগের সম্ভাবনার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় বেশকিছু প্রকল্প সম্পন্নের পাশাপাশি নতুন প্রকল্প শনাক্ত করা নিয়ে ভারত সফর চলাকালে প্রধানমন্ত্রীর উল্লেখ করা কিছু তথ্যের বরাতও দেয়া হয়েছে চিঠিতে। চিঠিতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সেপ্টেম্বরে দু’দিনব্যাপী বাংলাদেশ সফর ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যাচাইয়ে আলোচনার বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করা হয়।
চিঠিতে আইসিসি ও ইন্ডিয়া-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (আইবিসিসিআই) যৌথ আয়োজনে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, আইসিসি অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিষয়ে বিস্তারিত জানার ক্ষেত্রে বেজার সহযোগিতা চায়। ভিজুয়াল প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিদ্যমান অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থাও বুঝতে চায় আইসিসি। এরপর ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা প্রয়োজন বোধ করলে কিছু স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করতে পারেন বলেও জানিয়েছে আইসিসি।
ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সফরে সম্ভাব্য কর্মসূচিগুলোর মধ্যে রয়েছে-‘টেক্সটেক ইন্ডিয়া’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ, বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা নিয়ে আলোচনা, দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে সেমিনারে অংশগ্রহণ, অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা, অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে কর, কর্মসংস্থান ও শ্রমসংক্রান্ত নিয়মনীতি নিয়ে আলোচনা এবং বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিটুবি আলোচনা ও বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ।
সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারি ও বেসরকারি দুই পর্যায়েই আলোচনা করছে বেজা। এক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে আলোচনা অনেক আগে থেকেই চলছে। এর আগে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নের জন্য এক হাজার একরের ওপর জমি চেয়েছিল ভারত। অর্থনৈতিক অঞ্চল দেয়া হলে বিনিয়োগ করা হবে বলে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারতের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান অয়েল। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এরই ভিত্তিতে মিরসরাইয়ে ভারতের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্যোগ নিয়েছে বেজা।
আগামী ১৫ বছরের মধ্যে সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সরকারি পর্যায়ে চীন, ভারত, সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা ও এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আগ্রহ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসছেন। এখন পর্যন্ত এ ধরনের প্রকল্প নিয়ে দেশী-বিদেশী উভয় ধরনের উদ্যোক্তাই বেশ আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। যেসব দেশের উদ্যোক্তাদের মধ্যে এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে একেবারে সামনের সারিতেই রয়েছেন চীনা উদ্যোক্তারা। এরই মধ্যে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা বে ইকোনমিক জোনের শিল্প-কারখানা থেকে পণ্য রফতানি শুরু করেছে চীনা খেলনা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান মেইগো বাংলাদেশ লিমিটেড। এছাড়া চায়নিজ ইকোনমিক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনের অবকাঠামো উন্নয়নের কাজও চলছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ১১টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রাক-যোগ্যতা লাইসেন্স দিয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে দেয়া হয়েছে চূড়ান্ত লাইসেন্স। এখন পর্যন্ত ৮০ হাজার একরেরও বেশি জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে স্থান নির্বাচন হয়েছে মোট ৯৯টি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ