পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
সিরিয়া প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরোধী তিনটি সামরিক গোষ্ঠী একত্রিত হয়ে সবচেয়ে বড় সামরিক জোট গড়েছে। বুধবার এই সামরিক ফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে। তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, এই জোটে ১ লাখ শক্তিশালী সেনা রয়েছে যারা সিরিয়ায় মধ্যাঞ্চল হামা ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদবিলে সক্রিয়। আসাদবিরোধী এক সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, ফ্রি সিরিয়া আর্মি (এফএসএ)-র উদ্যোগে গঠিত দ্য ন্যাশনাল ফ্রন্ট অব লিবারেশন জোটে যোগ দিয়েছে সিরিয়ান লিবারেশন ফ্রন্ট ও সুকুল আল-শাম ব্রিগেড। এই জোটের লক্ষ্য এফএফএ’র বিচ্ছিন্ন শাখাগুলোকে একত্রিত করা। এই ফ্রন্ট পরিচালিত হবে ফাদলাহ আল-হাজির নেতৃত্বে। ২০১১ সালে গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভে আসাদ সরকারের অভিযান ও নিপীড়নের মুখে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। যা আসাদ ও বিরোধীদের সামরিক সংঘাতে লিপ্ত করে। গৃহযুদ্ধের সময় আসাদকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে ইরান এবং ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে আসাদের হয়ে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। অপর দিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সেনাবাহিনীর উদ্দেশে বলেছেন, সাত বছর ধরে চলে আসা গৃহযুদ্ধে তারা বিজয়ের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন। স¤প্রতি বিদ্রোহীদের কাছ থেকে অধিকৃত স্থানগুলোর বেশির ভাগই পুনরুদ্ধার করার পর এ ঘোষণা দেন বাশার। গত বছরের শুরুর দিকে বাশারের সরকারি বাহিনীর সিরিয়ার মাত্র ১৭ শতাংশে নিয়ন্ত্রণ থাকলেও একের পর এক আক্রমণে বিরোধীদের অনেক শক্তিশালী ঘাঁটি থেকে হটিয়ে দিয়েছে। ফলে বর্তমানে দেশটির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অঞ্চল আবারো নিজের দখলে নিয়েছেন বাশার বাহিনী। সেনাবাহিনীর সর্বস্তরের সৈনিকদের প্রতি এক খোলা চিঠিতে সিরীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের বিজয়ের ক্ষণ খুবই সন্নিকটে। তারা (বিদ্রোহীরা) শেষতক পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। আপনারা তাদের পরাজয়ের তেতো স্বাদ উপহার দেয়ার পর অপমানিত, পশ্চাদপদ ও গøানির সঙ্গে লেজ গুটিয়ে পালাতে তারা বাধ্য হয়েছে। তবে বাশারের বাহিনীকে বিদ্রোহীদের কাছ থেকে অঞ্চলগুলো পুনর্দখলে কোনো ভূমিযুদ্ধ করতে হয়নি। একের পর এক বিমান হামলায় বিধ্বস্ত বিদ্রোহীরা সহজেই আত্মসমর্পণ করে বাশারের মিত্র রাশিয়ার প্রতিরক্ষায় নিজেদের অধিকৃত অঞ্চলগুলো ছেড়ে যেতে সম্মত হয়। রাশিয়ার বিমান আক্রমণ ছাড়াও বাশারের আরেক মিত্র ইরানের সামরিক পরামর্শ এবং লেবানন, ইরান, ইরাক ও আফগানিস্তানের মিলিশিয়াদের সহায়তায় সরকারি বাহিনী শক্তিশালী হয়। সরকারি বাহিনী এখন বিদ্রোহীদের দখলে থাকা অবশিষ্ট অঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে জিহাদিদের অধিকৃত স্থানগুলো দখলে নিচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে দক্ষিণাঞ্চলেই প্রথমবারের মতো বাশারবিরোধী বিক্ষোভের সূচনা হয়েছিল। গত সপ্তাহে বাশার বিদ্রোহীদের হাতে থাকা একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ইদলিব প্রদেশে একই রকম আক্রমণের প্রতিজ্ঞা করেন। তবে বাশারের মিত্র মস্কো অদূরভবিষ্যতে ওই অঞ্চলে বড় ধরনের আক্রমণের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে। বিশ্বের পরাশক্তিগুলো ২০১৭ সালে যে চার অঞ্চলকে ডি-এসকেলেশন অঞ্চল বলে ঘোষণা দিয়েছিল, ইদলিব তার মধ্যে একটি এবং এখন পর্যন্ত এখানেই বিদ্রোহীদের গুরুত্বপূর্ণ উপস্থিতি রয়েছে। আনাদোলু, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।