Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিস্তার ভাঙনে বিলীন ৪ গ্রাম

পীরগাছা (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

রংপুরের পীরগাছায় গত এক সপ্তাহে তিস্তা নদীর ভাঙনে চারটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীনসহ প্রায় আটটি গ্রাম, দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ এবং একটি ক্লিনিক হুমকির মুখে পড়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন ওই ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ফসলি জমিসহ বসতভিটা ভাঙনের কবলে পড়েছে। ফলে নদী পাড়ের লোকজন তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।
উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর পাড়ে অবস্থিত শিবদেব চর, আমিন পাড়া, বৈরাগীপাড়াসহ চারটি গ্রাম গত সাত দিনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ সময় বাড়িঘর ও ফসলি জমিসহ বসতভিটা হারিয়ে প্রায় দুই হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়ে। বর্তমানে নদীগর্ভে বিলীন হওয়া ওইসব পরিবারের লোকজন খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এদিকে থেতরাই, জুয়ান, সদরা, পূর্ব ছাওলা ও চৌমুহনীসহ প্রায় আটটি গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। সেই সাথে গ্রামগুলোতে অবস্থিত একটি মাদরাসা, একটি ক্লিনিক, তিনটি হাটবাজার ও পাঁচটি মসজিদসহ প্রায় তিন হাজার পরিবারের মাঝে নদীভাঙনের আশঙ্কায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। বর্তমানে নদীপাড়ের লোকজন রাত জেগে সম্পদ রক্ষার শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নদীভাঙনে কয়েক শ’ একর কলাবাগান বিলীন হয়ে গেছে। ফলে নদীপাড়ের লোকজন চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে এ ভাঙনের শিকার হতে হচ্ছে প্রতি বছর নদীপাড়ের লোকজনদের। তারা জানান, ছাওলার ১০ নং বোল্ডারের পাড় থেকে আরো তিন কিলোমিটার বোল্ডার দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে নদীশাসন করলে এ গ্রামগুলো রক্ষা হতো। কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিতভাবে ১ নং ও ২ নং বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলেও নদীভাঙনের হাত থেকে গ্রামগুলো রক্ষা পাচ্ছে না।
এলাকাবাসী জরুরি ভিত্তিতে বোল্ডারের মাথা থেকে পূর্ব শিবদেবচর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকা বোল্ডার ফেলে বাঁধ নির্মাণ করে নদীভাঙনের হাত থেকে গ্রামগুলো রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান। তিস্তা নদীর ভাঙনের শিকার নরু বক্স জানান, প্রতি বছর নদীভাঙনের ফলে পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়ন মানচিত্র থেকে ছোট হয়ে আসছে।
এ অঞ্চলে গত পাঁচ বছরে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর ফসলি জমিসহ প্রায় তিন হাজার পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এ ছাড়াও একই গ্রামের আব্দুল বারী, আব্দুর সামাদ, জাবেদ আলী, আ. বাক্কী, আব্দুর রহমান, দুদু মিয়া, আব্দুর রউফ, নুর আমিন ও আফজাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, পাউবো কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে প্রতি বছর এ এলাকাটি তিস্তা নদীর ভাঙনের শিকার হয়। তারা সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তিস্তার ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার দাবি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তিস্তা


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ