পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বপ্ন ভাঙার কষ্ট নিয়ে আহাজারি করে যাচ্ছেন পায়েলের মা কহিনুর বেগম। ছেলেকে এইভাবে হারাবেন ভাবতেও পারছেন না তিনি। ছেলের স্মৃতি নিয়ে মায়ের শোকের মাতম তাই থামছেই না। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার জিজ্ঞাসা, আমার আহত ছেলেকে চিকিৎসা না দিয়ে এইভাবে মেরে ফেললো ওরা, এরা কি মানুষ? পায়েল তো কোন অপরাধ করেনি তাহলে কেন তাকে এইভাবে মেরে ফেলা হলো? বাবা গোলাম মাওলা ২৬ বছর ধরে কাতার প্রবাসী, ছেলের খুনের খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন দেশে। ছেলের স্মৃতি নিয়ে তিনিও কেঁদে চলেছেন অঝোরে। ইচ্ছা ছিলো ছেলেকে অস্ট্রেলিয়া পড়াতে পাঠাবেন সেই স্বপ্ন পূরণ হতে দিলোনা মানুষরূপী কিছু অমানুষ।
নির্মমভাবে হত্যা করেছে তার ছেলেকে। বড় ভাই মোস্তফার নবজাত কন্যা সন্তানকে দেখতে চট্টগ্রামের বাসায় আসেন পায়েল। ২২ জুলাই ক্লাশ থাকায় ২১ জুলাই রাতের বাসে ফিরছিলেন ঢাকায়। নর্থ-সাউথ ভার্সিটির বিবিএ পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র পায়েলের ক্যম্পাসে আর ফেরা হলোনা। চলে গেলেন না ফেরার দেশে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের ভলভো গাড়ির চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের নির্মমতার শিকার পায়েল প্রাণ হারান। ঘটনার নয়দিন পার হলেও শোক কমেনি পায়েলের পরিবারে। হাসিখুশি পরিবারের নেমে এসেছে কালো ছায়া শোক আর ক্ষোভে ফুঁসছে পরিবারের সকল সদস্য। পায়েলের প্রতিবেশী আর বন্ধুরাও মেনে নিতে পারছেনা পায়েলের এভাবে চলে যাওয়া। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের উপযুক্ত বিচার দাবী করেছেন তারা। আর কোন মায়ের কোল যেন এভাবে খালি না হয়- সেই দাবীতে মানববন্ধন, সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তারা। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, তার স্কুল মুসলিম হাই স্কুল ও গ্রামের বাড়ি স›দ্বীপে পালিত হয়েছে নানা কর্মসূচি। পরিবহন খাতের এরকম নৈরাজ্যের কারণে ফুঁসে উঠেছে সারাদেশ। চলছে পায়েল হত্যার বিচারের দাবীতে নানা কর্মসূচি।
সড়কে অবরোধ, জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি
বিশেষ সংবাদদাতা জানান, শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় রাজধানীর বিমানবন্দর, সাইন্স ল্যাবরেটরি এবং বাড্ডার সড়ক দিনভর অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। একই সময় সহপাঠী সাইদুর রহমান পায়েল হত্যার বিচারের দাবিতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্রধান গেটের সামনে অবস্থান নেয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার দুপুর ২টা থেকে বসুন্ধরা গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে হানিফ পরিবহনের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানান তারা। পৌনে ৩ ঘণ্টা সড়কে অবস্থানের পর পুলিশের ধাওয়ায় সড়ক থেকে সরে যান তারা। ভাটারা থানার ওসি এস এম কামরুজ্জামান জানান, শিক্ষার্থীরা সড়কে বিক্ষোভ করেছিল। ১ঘন্টার পর ঊঠে যায় এবং যান চলাচল শুরু করে। এদিকে বসুন্ধরার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবস্থান নেয়ায় তীব্র যানজট দেখা যায় রাস্তার দু’পাশে। যানজট একদিকে রামপুরা আর অপর দিকে কুড়িলে গিয়ে ঠেকে। তারা হানিফ পরিবহন ও চালকসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। গত ২১ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে বন্ধুর সঙ্গে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন পায়েল। পথে রাত ৪টার দিকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকায় যানজটে পড়ে বাসটি। এ সময় জরুরি প্রয়োজনে বাস থেকে নিচে নামেন পায়েল। কিছুক্ষণ পর যানজট কমলে বাসটি ছেড়ে দেয়। বাস ধরতে দ্রুত দৌড়ে আসেন পায়েল। বাসে উঠতে গিয়ে মুখে আঘাত পান। মুখ থেকে রক্ত ঝরছিল। এ অবস্থায় ওই বাসের সহযোগীরা তাকে ধরে খালের পানিতে ফেলে দেন। এরপর থেকে আর পায়েলকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ২৩ জুলাই সকালে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর খাল থেকে পায়েলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।