বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রধান বিরোধী শিবির থেকে ভোট বর্জনের ঘোষনার পরে বরিশালের ভোট গ্রহন কেন্দ্রগুলো ইতোমধ্যেই শুনশান ফাঁকা। মহাজোট প্রার্থীর কর্মীরা ভেতরেবাইরে অবস্থান করছে। পুলিশ সহ আইনশৃংখলা বাহিনীও ঢিলেঢালাভাবে কেন্দ্রে অবস্থান করছে। ভোট কর্মীরা অপেক্ষা করছেন ঘড়ির কাটা বিকেল ৪টায় পৌছার। কোন কোন কেন্দ্রের বুথে মহাজোটের কর্মীরা নির্বিঘ্নে ব্যালট পেপারে তাদের প্রতিকে সীল মারছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
গতকাল সকাল ৮টায় নগরীর ১২৩টি কেন্দ্রের সাড়ে ৭শ বুথে সুন্দর পরিবেশেই ভোট গ্রহন শুরু হলেও ঘনটা খানেকের মধ্যে চালচিত্র পরিবর্তন হতে শুরু করে। সকাল থেকে নারী-পুরুষ ভোটাররা কেন্দ্রের বাইরে লাইনে দাড়িয়ে ভোট দেয়ার জন্য অপেক্ষা করলেও সকাল ৯টার মধ্যেই ভোটারদের ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে সীল মারা শুরু হয়। বেমীরভাগ মলিা বুথে মহাজোটের পুরুষ পোলিং এজন্টরা ব্যালট পেপার নিয়ে নিজেরা সীল দিতে শুরু করেন। অনেকে এজেন্ট ব্যালট বই সহ নিয়ে সীল মেরে বাক্সে বরে ফেলে। আবার অনেক বুথের ভোট দেয়ার গোপন কক্ষে ঐসব পোলিং এজেন্ট ঢুকে তাদের সামনে ব্যালট পোরে সীল দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগের দৃশ্য ছিল প্রায় সর্বত্রই।
রিটার্নিং অফিসার কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে এসব অনিয়ম দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করে ম্যাজিষ্ট্রেটদের তলব করলেও তেমন কোন কাজ হয়নি। পরে তিনি নিজ অফিসে অবস্থান নেন। এমনকি তিনি আর কোন কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন না বলেও সাংবাদিকদের জানান। ইতোমধ্যে নগরীর সরকারী বালকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে বাসদ প্রার্থী ডা. মনিষা চক্রবর্তি নৌকা প্রতিকে সীল মারা বেশ কিছু ব্যালট পেপার উদ্ধার করেন। সেখানে তার ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে।
এঅবস্থায় ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব বেলা ১১টার পরে নগরীর টাউন হল কেন্দ্রের বাইরে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ ভোট বর্জনের ঘোষনা দেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ২০দলীয় জোট প্রার্থী মজিবুর রহমান সারোয়ারও প্রেস ক্লাবে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষনা দেন। সারোয়ার অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার দেশের গনতন্ত্র ও নির্বাচনী ব্যাবস্থাকে ধংশ করে দিয়েছে, এভাবে চলতে পারেনা’ । তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে বার বার অভিযোগ করেছি, নির্বাচন স্থগিত করতে। কিন্তু তারা আমলে নেয়নি’। তাই নির্বাচন কমিশনের প্রতি নিন্দা জানিয়ে ভোট প্রত্যাখ্যান ও বর্জনের ঘোষনা দেন সারোয়ার।
সকাল ৮টার পরে নগরীর বেশীরভাগ ভোট কেন্দ্র ও বুথে যখন চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চলছিল, তখন নির্বাচনী কর্মকর্তাগন বুথ ও কেন্দ্রে অসহায়ের মত সব দেখছিলেন। বিপুল সংখ্যক আইনÑশৃংখলা বাহিনী কেন্দ্রে রয়েছেন। আর সাইরেন বাজিয়ে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও আইনÑশৃংখলা বাহিনী নগরী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
কিন্তু প্রায় কোন কেন্দ্রেই ভোটার নেই। দুপুর ১২টার দিকে ২০দলীয় জোট প্রার্থী সারোয়ার ভোট বর্জনের ঘোষনা দেয়ার পরে তার পোলিং এজেন্টগনও কেন্দ্র ত্যাগ করেন। এর অল্প সময়ের মধ্যেই ভোট কেন্দ্রগুলোও ফাঁকা হতে শুরু করে। দুপুর ১টার আগেই নগরীর প্রায় সব ভোট কেন্দ্রে নিরবতা নেমে আসে। দুপুর সোয়া ১টার দিকে নগরীর সাবেরা খাতুন বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলালের সাথে দেখা হলে তিনি কুশল বিনিময় করে বলেন, ‘কোন প্রশ্ন করবেন না, এখন উত্তর দিতে পারব না’।
২০১৩সালের ১৫জুন সিটি নির্বাচনের পরে বরিশাল মহানগরীর মানুষ আরে কোন ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪-এর জাতীয় নির্বাচনে সদর আসনে ভোট হয়নি। একই আসনে উপ-নির্বাচনে ভোট দিতে হয়নি। সদর উপজেলা নির্বাচনেও নগরবাশীর ভোট দেয়ার সুযোগ ছিলনা। আশাহত বরিশাল মহানগরীর ভোট বঞ্চিত ভোটাররা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।