বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের ‘ফাঁসাতে’ কামরানের সমর্থক নামধারী ‘সন্ত্রাসী ও প্রশাসনের কিছু সদস্যের যোগসাজশে নানা অপকর্ম করা হচ্ছে’ সিলেটে। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ধারাবাহিকভাবে শান্ত নগরীকে অশান্ত করা কিসের আলামত ?
শুক্রবার রাত ১০টায় নগরীর কাজীটুলাস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে নিজের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তুলে বিএনপি নেতা আরিফ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আমার নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব থাকা সকল পর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, গ্রেফতার, বাসাবাড়িতে তল্লাশির মাত্রা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার দলীয় মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সমর্থক নামধারী সন্ত্রাসী ও প্রশাসনের কিছু সংখ্যক সদস্যদের যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে আমার নির্বাচন পরিচালনায় নিয়োজিত থাকা দলীয় নেতাকর্মীদের ফাঁসাতে ককটেল হামলা, কার্যালয় পুড়ানোসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। এ অবস্থায় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটারদের অবাধে ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে আমি শঙ্কিত।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভোটের দিন আমার পুলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা, গ্রেফতার, গুম করে কেন্দ্র দখল করে ফলাফল সরকার দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে নেয়ার পাঁয়তারা চলছে বলে আশঙ্কা করছি। এরই ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যেই বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, বাসাবাড়িতে তল্লাশি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী কামরানের কর্মীবাহিনী দিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কুশিঘাটে নিজের নির্বাচনী অফিস পুড়িয়ে মিথ্যা ও কাল্পনিক নাটক সাজিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। বিএনপির দুই কর্মীর খোঁজ করতে গিয়ে শাহজালাল উপশহরে ডিবি পুলিশের কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হলেও পরদিন বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের উপর মিথ্যা মামলা দেয়া হলো। একইভাবে দক্ষিণ সুরমায় পুলিশের উপর ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপির ৪৮ নেতাকর্মীর নামোল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করে একটি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে আরিফ উল্লেখ করেন, ‘সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর চৌকিদেখীতে নিজের (কামরান) কার্যালয়ে নিজেদের বাহিনী দিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। গত ১১ জুলাই হাসান মার্কেট এলাকায় আমার নির্বাচনী পোস্টার সাঁটাতে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমার তিন কর্মীকে আটকে রেখে মারধর ও একজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। খবর পেয়ে আমার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দদের নিয়ে আমি বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থান করি। জানি না, আর কতো নাটকীয় ঘটনা সৃষ্টি করা হচ্ছে ! আমি এখন শঙ্কিত।’
আরিফ প্রশ্ন তুলেন, ‘ধারাবাহিকভাবে শান্ত নগরীকে অশান্ত করা কিসের আলামত? নগরবাসী তা ভালো করেই জানেন। ককটেল, আগুন সন্ত্রাস, প্রশাসনের একপেশে আচরণ বন্ধ না হলে নগরবাসীকে সাথে নিয়ে সমুচিত জবাব দেয়া হবে।’
সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে শুক্রবার প্রকাশিত বিভিন্ন অনলাইন প্রকাশিত ‘হত্যা মামলায় কারাগারে থেকেও আসামি কাজী মেরাজ!’ শীর্ষক সংবাদের ফটোকপি দেখিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী প্রশ্ন তুলেন, ‘যে লোক কারাগারে আছে, তাকে কেন আসামি করা হলো ? সে কিভাবে আসামি হয়?’
গত বুধবার রাতে দক্ষিণ সুরমার মোমিনখলায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপির ৪৮ নেতাকর্মীর নামোল্লেখ করে মামলা করে পুলিশ। ওই মামলার আসামি করা হয়েছে কাজী মেরাজকে। তবে তিনি গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন।
সকল ‘ভয়ভীতি’ উপেক্ষা করে ৩০ জুলাই ভোট কেন্দ্রে যেতে নগরবাসীর প্রতি আহবান জানান আরিফ।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এম এ হক, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক এমপি শফি আহমদ চৌধুরী, সাবেক এমপি আবুল কাহের চৌধুরী, ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান ্ও ২০ দলীয় জোট সমন্বয়কারী এডভোকেট আব্দুর রকিব, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেক, সালেহ আজমদ খসরু, এমরান আহমদ চৌধুরী, সৈয়দ মঈদ উদ্দিন সোহেল সহ ২০ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।