জাতীয় গ্রীডে গোলযোগের কারণে গতকাল দুপুর ১১টা ৫৫মিনিটে দেশের পশ্চিম জোনের ২১টি জেলায় একযোগে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবারহ বন্ধ হয়ে যায়। ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় দুপুর ১টার দিকে চাহিদার এক পঞ্চমাংশেরও কম সরবারহ শুরু করা হলেও পরিস্থিতি স্বভাবিক হতে সন্ধা গড়িয়ে যায়। জাতীয় গ্রীডের এ গোলযোগের কারণে বরিশাল, ভোলা, খুলনা, ভেড়ামাড়া, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরসহ পশ্চিম জোনের সবগুলো উৎপাদন ইউনিট একযোগে বন্ধ হয়ে যায়। গত শুক্রবারও জাতীয় গ্রীডের বরিশাল-গোয়ালপাড়া ১৩২কেভী সঞ্চালন লাইনে গোলযোগের কারণে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ ছিল। সব উৎপাদন ইউনিটও একযোগে বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর ১১টা ৫৫মিনিটের সময় আকষ্মিকভাবেই জাতীয় গ্রীড লাইনে ফ্রিকোন্সেী কমে গিয়ে ট্রিপ করার সাথে পশ্চিম জোনের সবগুলো উৎপাদন ইউনিটও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এ অঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষ একযোগে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবগুলো ছোট-বড় হাসপাতালসহ পানি সরবারহ ব্যবস্থা বিপর্যয়ের কবলে পড়ে। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতেই উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবসা-বাণিজ্যেও চরম বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। দুপুর ১২টা ৩৫মিনিটের দিকে পূর্বজোন থেকে সামান্য কিছু বিদ্যুৎ এনে আঞ্চলিক লোড ডেসপাস সেন্টার হয়ে পর্যায়ক্রমে পশ্চিম জোনের সবগুলো ২৩০কেভী ও ১৩২কেভী সঞ্চালন লাইনসহ গ্রীড সাব-স্টেশনগুলো চালু করা সম্ভব হয়। এরপরে সীমিত আকারে কিছু জরুরি পরিসেবার ফিডারে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হয়। তবে উৎপাদন ইউনিটগুলো ট্রিপ করায় তা চালু করতে সময় লেগেছে ২-৩ঘণ্টা। পূর্বজোন থেকেও চাহিদা মাফিক পশ্চিম জোনে বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব হচ্ছিলনা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পশ্চিম জোনের ২১ জেলায় চাহিদা প্রায় এক হাজার মেগাওয়াটের স্থলে সরববারহ ছিল ৮শ মেগায়াটের মত। পর্যয়ক্রমে বরিশাল, খুলনা ও ভেড়ামাড়ার উৎপাদন ইউনিটগুলো সচল করা সম্ভব হলেও ভোলার ২২৫মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার স্টেশনটির দুটি ইউনিট সন্ধার আগে সচল করা সম্ভব হয়নি। তৃতীয় থার্মাল পাওয়ার ইউনিটটি উৎপাদনে আসতে সময় লাগে আরো কমপক্ষে ৪৮ঘণ্টা। গত শুক্রবার বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে এক দফা গ্রীড বিপর্যয়ের সাত দিনের মাথায় গতকাল দ্বিতীয় দফায় আবারো বড় বিপর্যয়ে বিদ্যুতের চরম হাহাকার নেমে আসে।