পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত নওয়াজকে কারাগারে রাখতে বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করছে সেনাবাহিনী; স্বয়ং একজন বিচারপতি এই অভিযোগ তুলেছেন। হাইকোর্টের বিচারপতি শওকত আজিজ সিদ্দিকী সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র (ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স) বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুললেও দাবির পক্ষে কোনও প্রমাণ হাজির করেননি। অভিযোগের সময় সুনির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তির নামও উল্লেখ করেননি তিনি। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, একজন সিনিয়র বিচারপতির এমন মন্তব্য খুবই তাৎপর্যপ‚র্ণ এবং বিরল। উল্লেখ্য, বিচারপতি শওকত আজিজ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে দ’ুটি অভিযোগ মীমাংসার অপেক্ষায় রয়েছে যার একটি সেনাবিরোধী মন্তব্যের কারণে।
ডন জানিয়েছে, শনিবার রাওয়ালপিন্ডি জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনে বক্তব্য দেন ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শওকত আজিজ সিদ্দিকী। সে সময় তিনি অভিযোগ করেন, আসন্ন নির্বাচনের সময়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও তার মেয়েকে কারাগারে রাখতে আইএসআই ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ আনোয়ার খান কাসির কাছে হাজির হয়েছিলেন। বিচারপতি শওকত দাবি করেন, প্রধান বিচারপতির কাছে গিয়ে ওই সংস্থা বলেছে, তারা চায় না নওয়াজ শরিফ ও তার মেয়ে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত বাইরে আসুক। তার দাবি অনুযায়ী, শওকত আজিজ সিদ্দিকীকে নওয়াজের আপিল শুনানির বেঞ্চে যুক্ত না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
শওকত আজিজ বলেন, আজকের যুগে বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পুরোপুরিভাবে জড়িত আইএসআই। তাদের কর্মীরা নিজেদের ইচ্ছামত বেঞ্চ গঠন করতে পারছে। তবে বিচারিক বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুললেও নিজের বক্তব্যে তার কোনও প্রমাণ দেননি তিনি।
লন্ডনে কেনা চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের ম‚ল্য পরিশোধে দেওয়া অর্থের উৎস দেখাতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে ৬ জুলাই নওয়াজ শরিফকে ১০ বছরের কারাদন্ড দেয় পাকিস্তানের অ্যাকাউন্টিবিলিটি আদালত। মেয়ে মরিয়মকে দেওয়া হয় ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড। ১৩ জুলাই লন্ডন থেকে আবুধাবি হয়ে দেশে ফিরে গ্রেফতার হলে নওয়াজ ও মরিয়মকে কারাগারে পাঠানো হয়। তাদের আপিলের শুনানির তারিখও আগামী ২৫ জুলাইয়ের নির্বাচনের পর নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, দুর্নীতি নয়, নওয়াজের পরিণতির কারণ সেনা বিরোধিতা। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন সেনাপ্রধান পারভেজ মোশাররফকে বরখাস্ত করার মাধ্যমে যার স‚চনা করেছিলেন নওয়াজ। সেনাবাহিনীর নওয়াজবিরোধী ভ‚মিকাও কারও অজানা নয়। সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক প্রধানমন্ত্রিত্বে অযোগ্য ঘোষণা করার পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সেনাবাহিনীর নওয়াজবিরোধী অবস্থানের কথা উঠে আসে।
শনিবার কারও নাম উল্লেখ না করে বিচারপতি শওকত অভিযোগ করেন, ‘আমি জানি কার বার্তা কে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘অ্যাকাউন্টিবিলিটি আদালতের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ ইসলামাবাদ হাইকোর্টের কাছ থেকে কেন নিয়ে নেওয়া হলো?’ তিনি অভিযোগ করেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে আর এখন তা ‘বন্দুকধারী ব্যক্তি’দের নিয়ন্ত্রণে। বিচারপতি শওকত সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল যদি আপনি আমাদের নিশ্চিত করেন যে আপনার রায় আমাদের পক্ষে আসবে তাহলে আপনার বিরুদ্ধে আরোপিত অভিযোগগুলো শেষ করে দেওয়া হবে।’ সেপ্টেম্বর নাগাদ তাকে প্রধান বিচারপতি বানানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন শওকত।
নিজের দায়বদ্ধতা আর দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে বলতে গিয়ে বিচারপতি শওকত বলেন, একমাত্র বারই সত্যিকারভাবে তাকে দায়বদ্ধ করতে পারে। আর দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গুরুত্বপ‚র্ণ একটি রায় ঘোষণার পর বিশেষ একটি গ্রুপ এই অভিযোগ নিয়ে হইচই শুরু করে। তিনি বলেন, বার যদি তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার প্রমাণ পায় তাহলে তিনি পদত্যাগ করবেন।
আইএসপিআর
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) দপ্তর রোববার জানায়, ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শওকত আজিজ সিদ্দিকী যে অভিযোগ করেছেন তার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য জন্য সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করা হয়েছে।
আইএসপিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর বলেন টুইটারে জানান, ইসলমাবাদ হাইকোর্টের একজন সম্মানিত বিচারক বিচার বিভাগ ও প্রধান গোয়েন্দা সংস্থাসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সমূহের পবিত্রতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষার জন্য এ অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও তদনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্যসুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসার পাকিস্তান ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষের (পেমরা) কাছে বিচারপতি শওকতের বক্তৃতার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ চেয়ে পাঠিয়েছন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।