পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পদ্মা সেতুর অগ্রগতি নিয়ে ভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে সেতু বিভাগ ও ব্যবস্থাপনা পরামর্শকের প্রতিবেদনে। সেতুৃ বিভাগ বলছে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থাপনা পরামর্শক রেন্ডাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস বলছে, জুন পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে ৬০ দশমিক ২৭ শতাংশ। স¤প্রতি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আর্থিক ভিত্তিতে হিসাব করা এ অগ্রগতির সাথে ভৌত তথা বাস্তব অগ্রগতির সঠিক কোনো তথ্য নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেতু বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে ৬৫ শতাংশ। জুন পর্যন্ত এর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল ৯২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থাপনা পরামর্শক রেন্ডাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস বলছে, জুন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের অগ্রগতি হয়েছে ৬০ দশকি ২৭ শতাংশ। এ দুই রকম তথ্যে বাস্তব তথা ভৌত কাঠামোর অগ্রগতি কতোটুকু হয়েছে তা নিশ্চিত নয়। এতে করে বর্তমানে নির্মাণকাজ কতোটুকু পিছিয়ে আছে তাও নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে, নদী শাসনের অগ্রগতির ক্ষেত্রেও দুই রকমের তথ্য দেয়া হয়েছে। সেতু বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন পর্যন্ত নদী শাসনের কাজ হয়েছে ৪১ দশকি ৩৮ শতাংশ। আর রেন্ডাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস বলছে, উল্লেখিত সময়ে নদী শাসনের কাজ হয়েছে ৩৮ দশমিক ০৫ শতাংশ। জুন পর্যন্ত নদী শাসনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮০ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
প্রকল্পটির নদী শাসন প্যাকেজের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। সে অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ইতোমধ্যে নদী শাসনের কাজ শেষ করতে অতিরিক্ত ১৮ মাস সময় চেয়েছে চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। তবে কবে নাগাদ এ কাজ শেষ হবে তা অনেকটা অনিশ্চিত বলে মনে করছে রেন্ডাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, জুনে মূল সেতুর কাজ হয়েছে মাত্র দশমিক ৯৪ শতাংশ। যদিও ওই মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক দশমিক ৭৩ শতাংশ। আর জুনে নদী শাসনের কাজ হয়েছে দশমিক ৯৫ শতাংশ। যদিও ওই মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই দশমিক ৯২ শতাংশ।
সূত্র জানায়, মূল সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য অতিরিক্ত ৩১ মাস সময় চেয়ে গত ১ মে কর্মপরিকল্পনা জমা দিয়েছে চায়না মেজর ব্রিজ। এক্ষেত্রে ২০২১ সালের জুনে পদ্মা সেতু নির্মাণকাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সেতু বিভাগ বর্ধিত এ সময় দিতে রাজি হয়নি। এক্ষেত্রে পরবর্তী ১২ মাস কাজ পর্যবেক্ষণ করে বর্ধিত সময় নির্ধারণের কথা জানিয়েছে সেতু বিভাগ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকার চেয়েছিল জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে চলতি বছরের শেষ দিকে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে। একই সাথে উদ্বোধনের দিন থেকেই পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচলের লক্ষ্যও নির্ধারণ করা ছিল। কিন্তু নির্মাণকাজের ধরি গতির কারণে এখন সেখান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে সরকার।
সূত্র জানায়, মূলত নকশা জটিলতায় পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ পিছিয়ে গেছে। শুরু থেকেই নদী শাসনে সিনোহাইড্রোর কাজে ছিল শ্লথ গতি। সেতু বিভাগের তথ্যমতে, মূল অবকাঠামোর জন্য নদীতে ৪০টি পিলারের জন্য ২৪০টি পাইল নির্মাণের কথা ছিল। তবে ২২টি পিলারের পাইলের তলদেশে কাদার স্তর ধরা পড়ায় সেগুলোর নকশায় পরিবর্তন আনা হয়। পরে একটি করে পাইলের সংখ্যা বাড়ানো হয়। বর্তমানে ৪০ পিলারের জন্য পাইলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬২টি। এর মধ্যে ১৫০টির নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। পিলার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে ১০টি। এর মধ্যে জাজিরা প্রান্তে ৬টি পিলারের ওপর পাঁচটি স্প্যান বসানো হয়েছে। আরও ১০টি স্প্যান নির্মাণ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, মূল সেতুর জন্য মাওয়া ও জাজিরায় শেষ প্রান্তের দুই পিলারে ১৬টি করে ৩২টি পাইল করতে হবে। এর মধ্যে ২২টি সম্পন্ন হয়েছে। আর জাজিরা ভায়াডাক্টে (উড়ালপথ) পিলার হবে ৪০টি এবং মাওয়ায় হবে ৩৭টি। এজন্য যথাক্রমে ১৯৩টি ও ১৭২টি পাইল করতে হবে। এর মধ্যে জাজিরা ভায়াডাক্টের মাত্র চারটি পাইল সম্পন্ন হয়েছে। এ হিসাবে সার্বিকভাবে সেতুর নির্মাণকাজের অগ্রগতি হয়েছে ৫৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এতে করে চলতি বছরের ডিসেম্বরে অর্ধৈক সেতুই দৃশ্যমান হবে কি-না তা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে।
পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষর হয় ২০১৪ সালের জুনে। চলতি বছর নভেম্বরে এ কাজ শেষ করার কথা ছিল। প্রকল্পটির আওতায় মূল সেতু নির্মাণের চুক্তিমূল্য ধরা হয়েছে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। নদী শাসনের চুক্তি মূল্য ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত দুই প্যাকেজের আওতায় ব্যয় হয়েছে যথাক্রমে ৬ হাজার ৯০৭ কোটি ৮১ লাখ এবং ৩ হাজার ৪০৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। কয়েক দফা বৃদ্ধির পর পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বর্তমানে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। তবে বিলম্বের কারণে আগামীতে এর নির্মাণব্যয় আরও অনেক বেড়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। ####
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।