পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গা-জ্বালা অসহনীয় ভ্যাপসা গরম চারিদিকে। তাপদাহে ঘামে নাকাল মানুষ। বাতাসে যেন মরুর আগুনের হল্কা লু-হাওয়া বইছে! গরমের দাপটে দুঃসহ হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। অথচ শ্রাবণের এই পয়লা সপ্তাহে ঘনঘোর মেঘের সঙ্গী বজ্রের গর্জন, আকাশভেঙে অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাত আর দমকা শীতল হাওয়া বয়ে যাওয়াই হতো ‘স্বাভাবিক’ আবহাওয়ার চিত্র ও চরিত্র। কবির চোখে শ্রাবণ হবে- ‘শ্রাবণের গগনের গায়, বিদ্যুৎ চমকিয়া যায়, ক্ষণে ক্ষণে শর্বরী শিহরিয়া উঠে হায়’। কিন্তু এই শ্রাবণ তো যেন ভরা বর্ষার চিরপরিচিত সেই শ্রাবণই নয়। গ্রীষ্মের খরতাপকেও হার মানায়। নেই মেঘের ঘনঘটা। নেই বৃষ্টি। আছে শুধুই দিনমান তীর্যক সূর্যের দহন। সর্বত্র বিরাজ করছে অস্বাভাবিক রুক্ষ খটখটে আবহাওয়া।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) সারাদেশেই অকাল খরার দহনে মানুষ বর্ষা ঋতুর মধ্যভাগে এই শ্রাবণ মাসকে ভুলতে বসেন। গত তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বর্ষার স্বাভাবিক বর্ষণের দেখা নেই। গত সোমবার ও মঙ্গলবার লঘুচাপের প্রভাবে কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাত হলেও আবারও চলছে দেশজুড়ে গরমের অসহ্য জ্বালা। ভ্যাপসা গরমের তীব্রতা এত বেশী, ফ্যানের নিচে কিংবা গাছের ছায়ায় বসেও ঘর্মাক্ত ক্লান্ত মানুষকে হাঁপাতে দেখা গেছে।
ইতোমধ্যে তাপমাত্রার পারদ সাড়ে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসকেও ছাড়িয়ে গেছে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ছিঁটেফোঁটা বৃষ্টি ঝরেনি কোথাও। আবহাওয়া-জলবায়ুর ওলট-পালট আচরণে বর্ষায় প্রত্যাশিত স্বাভাবিক বৃষ্টির অভাবে ফল-ফসল, ক্ষেত-খামারের আবাদ ও উৎপাদনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষীরা। ফসলি জমিতে পানির ঘাটতি মেটাতে গিয়ে অসময়ে সেচের পেছনে খরচ বেড়ে গেছে।
ভরা বর্ষায় অব্যাহত তাপদাহ প্রসঙ্গে গতকাল একজন আবহাওয়াবিদ জানান, বর্তমানে বর্ষার নিয়ামক মৌসমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। বাংলাদেশ সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু মাঝারী অবস্থায় বিরাজ করছে। এরআগে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উড়িষ্যা হয়ে ভারতের মধ্যপ্রদেশে কেটে গেছে। এরফলে ভরা বর্ষা মৌসুমেও গরমের দাপট অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে গেছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ওপরে রয়েছে। তাছাড়া বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতার মাত্রা বেশী হওয়ায় ভ্যাপসা গরম এবং এতে ঘাম ঝরছে গ্রীষ্মকালের মতো। গতকাল সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতার হার ছিল ৯৪ শতাংশ। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ঊর্ধ্বে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে ফের একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর সক্রিয় প্রভাবে প্রথমে গরম বাড়লেও পরবর্তী সময়ে মেঘ-বৃষ্টির আবহ তৈরি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। দক্ষিণ এশিয়ার আবহাওয়ায় বিরাজমান এল-নিনোর প্রভাবে (বৃষ্টিপাত রোধকারী অবস্থা) এবার বর্ষায়ও স্বাভাবিক বর্ষণ কমে গেছে। ভারতের বেশিরভাগ রাজ্যে গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে খরা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অথচ নেপালে অতিবৃষ্টিতে বন্যা দেখা দিয়েছে।
চট্টগ্রামসহ কোথাও কোথাও অকালে অতিবর্ষণে বর্ষাকালীন পরিস্থিতি এমনকি পাহাড়ি ঢলে বন্যার সৃষ্টি হয়। বর্ষার আগের সময়ের চেয়ে ভরা বর্ষায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে কম। আবহাওয়ামÐলে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন না হলে এবারের বর্ষায় (জুন-জুলাই-আগস্ট) বাংলাদেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম। এদিকে আবহাওয়া-জলবায়ুর ওলট-পালটের প্রভাবে বাড়ছে রোগ-ব্যাধির প্রকোপ। বাতাসে অতি আর্দ্রতা ও উষ্ণ আবহাওয়া, রাজধানী ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে বাতাসে ধূলোবালির মাত্রা বেড়ে যাওয়া, বিশুদ্ধ পানির অভাবসহ বিভিন্ন কারণে মৌসুমী ভাইরাসজনিত অসুখ-বিসুখ সর্দিকাশি, গলাব্যাথা, প্রদাহজনিত জ্বর, বাতজ্বর, ফ্লু, পেটের পীড়া, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া এবং বিভিন্ন ধরনের ট্রপিক্যাল রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে অনেকেই। হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিনই রোগীর ভিড় বাড়ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।