বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান (৩৪) হত্যাকাÐে জড়িত অভিযোগে তিন নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলÑ মিজান শেখ, মেহেরুন্নেছা স্বর্ণা ওরফে আফরিন ওরফে আন্নাফি, সুরাইয়া আক্তার কেয়া ও ফারিয়া বিনতে মীম। গত বুধবার রাজধানীর বাড্ডা ও হাজারীবাগ এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
এ নিয়ে হত্যায় জড়িত মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হল। এর আগে রহমত উল্লাহ নামে এক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গ্রেফতারকৃতরা সবাই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল বাতেন।
গত ৮ জুলাই মামুন রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে নিখোঁজ হন। পরে ১০ জুলাই গাজীপুরের কালীগঞ্জের উলুখোলার এক জঙ্গলে মামুনের পোড়া মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আবদুল বাতে বলেন, মামুন টেলিভিশনের বিভিন্ন ক্রাইম সিরিয়ালে অভিনয় করতেন। সেই সুবাদে বছর পাঁচেক আগে রহমত উল্লাহর সঙ্গে তার পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়। পরে রহমতের পরিচিত মেহেরুন্নেছা ওরফে আন্নাফির সঙ্গেও মামুনের পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এই পরিচয়ের সূত্র ধরে ৮ জুলাই আফরিন রহমতকে তার বাসায় জন্মদিনের দাওয়াত দেয়। তখন রহমত মামুনকে সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার দাওয়াত দেয়।
আবদুল বাতেন বলেন, ঘটনার দিন রহমতউল্লাহ নিজের গাড়ি নিয়ে এবং মামুন মোটরসাইকেল নিয়ে আফরিনের বনানীর বাসায় যায়। পরে স্বপন, মিজান, দিদার ও আতিক বাসায় আসে। তারা রহমতকে ফাঁসিয়ে বøাকমেইল করতে চেয়েছিল। কিন্তু মামুন নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিলে তারা পরিবকল্পনা পরিবর্তন করে। পরে মিজান, সুরাইয়া, মীম মিলে মামুনকে বেধম পেটায়। রাত ১২টার দিকে মামুন মারা যায়। তখন রহমত উল্লাহ নিজে ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে তাদের সঙ্গে আতাত করে।
হত্যাকাÐের বিবরণে আবদুল বাতেন বলেন, মামুনের লাশ গাড়িতে করে নিয়ে প্রথমে রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসে যায়। তারা সেখানে খাওয়া-দাওয়া করে। সেখানে মামুনের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার পরিকল্পনা করে মিজান। পরে সেনানিবাসের একটি পাম্প থেকে তারা পেট্রোল কেনে। সন্ধ্যার দিকে তারা গাড়ি নিয়ে কালীগঞ্জের দিকে যায়। জঙ্গলের ভেতরে লাশ নামিয়ে তাতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুন ধরিয়ে বের হওয়ার সময় তারা রহমতকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তার টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়।
বাতেন বলেন, হত্যাকাÐ শেষে ১০ জুলাই রহমত বাসায় ফিরলে ডিবি পুলিশ তাকে আটক করে এবং মামুন নিখোঁজের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরবর্তীতে তার তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার তিন নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা মামুনকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় স্বপন, দিদার ও আতিক পলাতক রয়েছে। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে। হত্যায় জড়িতদের মধ্যে মিজান পুলিশের একজন সাবেক বরখাস্তকৃত পরির্দশক। এছাড়া দিদার, স্বপন ও আতিক এক সময়ে সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, নজরুল নামে এক লোক দুই মাস আগে বনানীর ওই বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল। তবে এ হত্যার সঙ্গে নজরুলের কোন সম্পৃক্ততা নেই। মানুষকে ফাঁসিয়ে অর্থ আদায় করা চক্রের লক্ষ্য ছিল।
এদিকে গতকাল বিকেলে গ্রেফতারকৃত চার আসামীকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শেখ মাহবুবুর রহমান। এ সময় ফারিয়া বিনতে মিম ওরফে মাইশা, মিজানুর রহমান ও মেহেরুন নেসা স্বর্ণা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। পরে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। অপর আসামি সুরাইয়া আক্তার কেয়া জবানবন্দি না দেওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কায়সারুল ইসলাম তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।