পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : মিশরের দু’টি কৌশলগত দ্বীপ সউদি আরবকে দেয়ার ঘোষণা করার পর স্বৈরশাসক আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসির পদত্যাগ দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে মিশরের জনগণ। গত দুই বছরের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল মিশর বিক্রির জন্য নয়। এ সময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। বিক্ষোভের সময় অন্তত শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে তারা মিশরের পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রাখছে।
গত সপ্তাহে লোহিত সাগরে মিশরের দখলে থাকা দুটি দ্বীপ সউদি আরবকে হস্তান্তর করার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশটি। ২৫ এপ্রিল আবার বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়েছে। গত শুক্রবার বিক্ষোভে ইসলামপন্থিদের পাশাপাশি অংশ নেয় সেকুলাররাও, যারা এক সময় সিসির সমর্থক ছিল। সিসি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, লোহিত সাগরের ওই দ্বীপ দুটি মিশরের ছিল না, ছিল সউদি আরবের। মিশর শুধু এর পাহারাদার ছিল। তবে সমালোচকরা বলছেন, সউদি আরবের সাহায্য ও বিনিয়োগের বিনিময়ে দ্বীপ দুটি রিয়াদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। গত সপ্তাহে মিশর সফর করেন সউদি আরবের বাদশাহ সালমান। এ সময় মিশরের প্রেসিডেন্ট তার নির্বাহী ক্ষমতাবলে সউদিকে লোহিত সাগরের দুটি দ্বীপ উপহার হিসেবে প্রদান করেন। ১৯৫০ সাল থেকে দ্বীপ দুটি মিশরের দখলে ছিল। মিশরের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিরান ও সানাফারি দ্বীপ দুটি সউদি পানি সীমায় অবস্থিত হওয়ার কারণেই এগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাজধানী কায়রোতে সিসির পদত্যাগ দাবিতে শুক্রবার বিক্ষোভ করেছে কয়েক হাজার লোক। এ সময় তারা সিসি পদত্যাগ কর এবং আমরাই আমাদের জমির মালিক বলে শ্লোগান দেয়। কায়রোর মতো আলেকজান্দ্রিয়ায়ও ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে। কায়রো ও আলেকজান্দ্রিয়া থেকে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, তারা তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র দেশটির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। রাজধানী কায়রোতে বিক্ষোভে অংশ নেয় হাজার হাজার মানুষ। এদের অনেকে ২০১১ সালের আরব বসন্তের অনুসরণে শ্লোগান দেন জনগণ সরকারের পতন চায়। সিসিকে পতিত স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের সাথে তুলনা করে অনেকের শ্লোগান ছিল সিসি-মোবারক।
খবরে বলা হয়, লোহিত সাগরের দ্বীপ দুটি সউদি আবরকে হস্তান্তর করার ঘোষণাকে মিশরীয়রা দেখছে জাতির আত্মসমর্পণ হিসেবে। ফলে এতে তাদের জাত্যাভিমানে আঘাত লেগেছে। বন্দুকের নলের মাথায় ক্ষমতা দখলকারী সিসির শাসনে মিশরের অর্থনীতি দুরবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আর মানবাধিকারের অবস্থা তো আরো করুণ। এর আগে এএফপি জানায়, মিশরে সিসি সরকার লোহিত সাগরের দুটি বিতর্কিত দ্বীপের মালিকানা সউদি আরবের হাতে তুলে দিয়েছে। দেশটির বৃহত্তম রাজনৈতিক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের কঠোর বিরোধিতা উপেক্ষা করে তিরান এবং সানাফির দ্বীপের মালিকানা তুলে দেয়া হলো। কায়রো-রিয়াদ গত শুক্রবার দু’দেশের পানিসীমা সংক্রান্ত একটি চুক্তি করেছে। চুক্তিতে যে পানিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে সে অনুযায়ী দ্বীপ দু’টি সউদি সীমানায় পড়েছে বলে মিশরের মন্ত্রিসভা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আস-সিসি এবং সউদি রাজা সালমান বিন আবদুল আজিজের উপস্থিতিতে সউদি আরবের সঙ্গে এ চুক্তিতে সই করেন মিশরের প্রধানমন্ত্রী শরীফ ইসমাইল। ইজিপ্ট ডেইলি নিউজ, নিউইয়র্ক টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।