পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের অগ্রগতি দেখতে চায় ব্রিটেন। বৃটিশ পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দপ্তর প্রকাশিত এ বছরের বার্ষিক মানবাধিকার ও গণতন্ত্রবিষয়ক প্রতিবেদনে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদনের শেষাংশে বাংলাদেশে চলতি বছরে অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি স্থান পায়। সেখানে নির্বাচন ছাড়াও বৃটেনের অগ্রধিকার হিসেবে রোহিঙ্গা ইস্যু, লৈঙ্গিক সমতায় অগ্রগতি, কন্যা শিশুর পড়ালেখা, আধুনিক দাসত্ব মোকাবিলায় কাজ করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দেয়ার কথাও উল্লেখ রয়েছে। মত প্রকাশসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক স্বাধীনতাকে সমর্থন এবং দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যাপারে বৃটেনের তাগিদ থাকবে বলে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে।
বার্ষিক ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় গত সোমবার রাতে। প্রতিবেদন প্রচ্ছদে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলিম নারী ও তার শিশুর ছবি। বৃটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী লর্ড আহমেদ বৃটিশ পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ অফিসে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। যাতে ২০১৭ সালের বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি মূল্যায়ন রয়েছে। ওই বছরে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি উল্লেখ করে বলা হয়- বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ওপর সরকারের চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘সরকারি এজেন্সিগুলোর’ গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতন অব্যাহত থাকার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে। মৃত্যুদন্ড ব্যবস্থা বিলোপের উদ্যোগেও বাংলাদেশের কোনো অগ্রগতি নেই।
এ বছরে বাংলাদেশে বড় ধরনের কোনো সন্ত্রাসী হামলা না হওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করে ব্রিটেনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধর্মীয় বৈচিত্রের ওপর গুরুত্বারোপের লক্ষ্যে পোপ ফ্রান্সিসের গত বছরের বাংলাদেশ সফর সফল হয়েছে। গত বছরের আগস্ট থেকে ৬ লাখ ৮৮ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমকে আশ্রয় ও সহায়তা দেয়ায় যুক্তরাজ্য সরকার বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রশংসা করছে। প্রতিবেদনে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের বরাত দিয়ে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা অব্যাহত থাকার কথা বলা হয়। নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতন কমানোর ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি উল্লেখ করে বলা হয়- গত বছর ২৫৩টি মৃত্যুদন্ডাদেশ এবং ৬টি কার্যকর করা হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে মামলা দেয়ার অভিযোগ করে আসছে।
ব্রিটিশ সরকারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সাংবিধানিক একটি মামলা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত নভেম্বর মাসে চাপের মুখে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে। বিচারব্যবস্থা থেকে দুর্নীতি দূর করার ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।’ লন্ডনের প্রতিবেদনে ২০১৭ সালে বৈশ্বিক গণমাধ্যম স্বাধীনতায় বাংলাদেশের দুই ধাপ অবনতির তথ্য তুলে ধরা হয়। সরকার ৫৭ ধারা বিলোপ করে যে নতুন আইনের প্রস্তাব করেছে তা নিয়েও মানবাধিকার কর্মীদের উদ্বেগের কথা স্থান পায়। এ দেশে নারী ও কন্যাশিশুদের ওপর সহিংসতার উচ্চহারের কথা উল্লেখ করে ব্রিটিশ সরকারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮০ ভাগেরও বেশি বাংলাদেশি নারী ও কন্যাশিশু স্বামী বা সঙ্গীর দ্বারা শারীরিক, মানসিক, যৌন বা আর্থিকভাবে নিপীড়নের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছে। রোহিঙ্গা শিবিরে নারীরা বড় ধরনের ঝুঁকিতে আছে। তাদের অনেকেই মিয়ানমারে বর্বর নিপীড়নের শিকার হয়েছে। যুক্তরাজ্য তাদের সহায়তার জন্য জাতিসংঘ ও অন্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতির বড় ধরনের অবনতি হয়েছে। সেখানে জাতিগত নিধনযজ্ঞ, ধর্মীয় ও অন্যান্য স্বাধীনতায় বিধি নিষেধে বৃটেন অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।