পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তাসের টেক্কা, প্রতিপক্ষের সুযোগসন্ধানী চাহনি। সর্তক চাল না দিলে ধরা খেতে হবে। সেই কাজ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে করতে চায় সিলেট জামায়াত। একইভাবে নিজেদের প্রার্থীতা দিয়ে বিএনপিকে ধাক্কা মেরে শক্তির জানান দিতে চাচ্ছে সিলেট জামায়াত ইসলামী। সেই টার্গেটে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জোরেসোরে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা। দলের নিবেদিত পুরুষ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি মহিলা জামায়াতের নেতাকর্মীরা বসে নেই ঘরে। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চল সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগঠনের নেতাকর্মীরা এখন নগরীর অলিতে গলিতে। সংগঠনের ভবিষ্যৎ নিয়ে নীতি নির্ধারনী আলাপ আলোচনাও চালাচ্ছেন ভোটের মাঠে। মূলত ভোটের আড়ালে সিলেটে সাংগঠনিক ক্ষমতা বৃদ্ধির মোক্ষম সুযোগ এখন তাদের হাতে।
১৪ দল তথা আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহনের শুরু থেকে সিলেটে জামায়াত-শিবির বলতে গেলে কোনঠাসা। প্রকাশ্যে কিছু করতে গেলই বাধা বিপত্তি। সরকার বিরোধী নাশকতা মামলার ভারে ক্লান্ত তাদের নেতাকর্মীরা। ক্ষমতা কেন্দ্রিক তাদের পদচারনা হয়ে পড়েছিল ধূয়াশায়। বিএনপির ব্যানারে সেই লক্ষ্য নিয়ে পথ চললেও এখন নিজেই দাড়াতে চায় নিজের মতো করে। কারন বিএনপির নিকট থেকে যথার্থ মূল্যায়ন নিয়ে তাদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ দীর্ঘ দিনের। অপরদিকে বিএনপি মনে করে তাদের সাথে জামায়াতের নেতাকর্মীরা থাকলে, প্রশাসনিক হয়রানিতে পড়তে হয় তাদের। তাই সর্ম্পকের বোঝপড়ার মধ্যেও মানসিক দূর্বলতা নিয়ে চলতে হয় বিএনপি নেতৃত্বকে। তাই ক্ষমতার পেছনে রেখে জামায়াতকে নিয়ে চলতে চায় তারা। কিন্তু জামায়াত তাদের চলমান দূর্বলতার মধ্যেও দরাদরিতে আপোষহীন। সেকারনে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যেকার টানাপোড়েন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে প্রকাশ্যে হয়ে পড়ে।
অপরদিকে, জামায়াত শিবির এই দূর্দিনে প্রকাশ্যে রাজনীতিতে শক্তি মত্তা প্রদর্শন না করলেও সমর্থক-সমর্থন বাড়াতে ভিন্ন কৌশলে এগুতে থাকে সিলেটে। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে ব্যাপক হারে সাংগঠনিক কাজে তারা মনোযোগী হয়ে উঠে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এই মুর্হূতে সিলেটে বিপুল সংখ্যক নারী ভোটার তাদের। নির্বাচনে এই ভোটার তাদের গোপন অস্ত্র। এর মধ্যে দিয়ে তারা বিএনপিকে ধাক্কা দিয়ে আগামীর দরকষাকষির পথ সুগম করবে। এব্যাপারে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, বিপুল জন সমর্থন ও উন্নয়নে বলিষ্ট ভূমিকায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর প্রার্থীতা নিয়ে কম্প্রোমাইজ কিভাবে আশা করে জামায়াত? বরং একটি অজুহাতের সুযোগে অপরিনামদর্শি চালে জামায়াত চলছে। বিএনপির প্রার্থী হারলে, দায় কিন্তু জামায়াতের ঘাড়েই পড়বে। তা বৃহত স্বার্থে ২০ দলীয় জোটের জন্য শুভ নয়। সেই খেসারত জামায়াতকে-ই দিতে হবে। এখানে বিএনপি বেকায়দায় ফেলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সুযোগ দেওয়া মতলবে জামায়াত কাজ করছে এমন জনশ্রুতিও রয়েছে।
সংকটাপন্ন এই অবস্থায় অনেকে মনে করেন জামায়াতের সাংগঠনিক কাজ স্থবির। নতুন কর্মী সমর্থক তৈরী হচ্ছে না। এই অবস্থার বিপরীতে ভোটের শক্তি দিয়ে জানান দিতে চায়, তারা ঠিকই আছে, টেক্কা হাত থেকে ফসকে যায়নি।
এব্যাপারে নগর আ‘লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, এ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে তাদের অবস্থান নতুন করে উপলব্ধিতে আসবে। একসময় ব্যাপক ভাবে জামায়াত কার্যক্রম চালাতো। সরকার বিরোধী কর্মকান্ডের মধ্যে দিয়ে তারা গা-ডাকা দেওয়ায় তাদের অবস্থান ধুম্রজালে পড়েছিল। হয়তো নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে নতুন হিসেব নিকেশে উঠবে তারা।
নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ বিএনপির:
রির্টানিং কর্মকর্তার নিকট সিলেট সিটি করপোরেশনে ২০ দলীয় জোট ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি অভিযোগে বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীদের যেভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে, তা আইনসম্মত নয়। এটা সংবিধান ও নির্বাচন আচরণবিধি পরিপন্থী।
বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীদের উপর অত্যাচার, নির্যাতন চলছে এবং অব্যাহতভাবে গণগ্রেফতার করার হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে সাদা পোশাকধারীর বেশে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেভাবে রাতে নেতাদের বাড়িতে গিয়ে বিনা ওয়ারেন্ট ও মামলাবিহীন বিএনপি নেতা-কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে, বাড়ী তল্লাশি করছে এবং আমাদের এজেন্টদের ভয় দেখাচ্ছে যার ফলশ্রুতিতে কেউ বাড়িতে থাকতে পারছে না। এসব ঘটনা আমাদের দেশে আইন সম্মত নয় ও মানবাধিকার পরিপন্থী।
অন্যদিকে অপর এক অভিযোগে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচারণার শুরুতেই বারবার আ.লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের বিরুদ্ধে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ জানানো হলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা দিনদিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অভ্যন্তরে বিশাল স্টেজ, ব্যানার, কয়েক শতাধিক চেয়ার ও বেশ কয়েকটি মাইক বাজিয়ে নৌকার পক্ষে সমাবেশ করছে, যা স্পষ্ট নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন। এছাড়া ওসমানী হাসপাতাল একটি স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান। এখানে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এখানে মাইক বাজিয়ে জনসমাবেশ করা বে-আইনি। উপরোক্ত বিষয়গুলো সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিলেট রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানান তিনি।
বক্তব্যের সুযোগ না পেয়ে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার হামলা:
নার্সেস এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সমর্থনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্যের সুযোগ না দেয়ায় সভা শেষ করার পর অতিথিরা মঞ্চ ত্যাগ করার পর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে ওসমানী মেডিকেল কলেজে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সুজন ও সাব্বিরের নেতৃত্বে এ হামলা আহত হন বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিওমেক) নার্সেস এসোসিয়েশন সিওমেক শাখার সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেক।
হামলা ও মারধোরের সময় হাসপাতালের নার্স ও কর্মীরা এগিয়ে আসলে হামলাকারী স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতারা পালিয়ে যান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।