পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ভারতকে মোকাবেলার জন্য চীন তার ‘সব মওসুমের বন্ধু’ পাকিস্তানকে সর্বাত্মক সহায়তা দিচ্ছে। এর সর্বশেষ সংযোজন হলো: ভারত মহাসাগরে ভারতীয় নৌবাহিনীকে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে ফেলতে পাকিস্তানের জন্য ৮টি সাবমেরিন নির্মাণ করছে চীন।
সূত্র জানায়, প্রজেক্ট হাঙ্গর-এর অধীনে চীনের কয়েকটি শিপইয়ার্ডে নির্মাণাধিন সাবমেরিনগুলো শিগগিরই পাকিস্তানকে হস্তান্তর করা হবে। বর্তমানে ভারতের কাছে ১৬টি সাবমেরিন রয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের আছে ১০টি। পানির নীচে যুদ্ধক্ষমতা বাড়াতে পাকিস্তান যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নতুন সাবমেরিন সংগ্রহের প্রচেষ্টা তারই অংশ।
এমন এক সময় পাকিস্তানকে এসব সাবমেরিন দেয়া হচ্ছে যখন ভারতীয় সীমান্ত বরাবর চীনা সেনাদের চাপ বাড়ছে। নতুন সাবমেরিন পাকিস্তানের নৌযুদ্ধের সামর্থ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য নতুন মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। মাত্র কিছু দিন আগে পাকিস্তানের জন্য দুটি রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করেছে চীন। এসব স্যাটেলাইট দিয়ে ভারতের উপর নজরদারিও করা যাবে। পাকিস্তান ২০১১ সালের আগস্টে প্রথম যোগাযোগ উপগ্রহ পাকস্যাট-১আর উৎক্ষেপনের পর এবারের দুটি স্যাটেলাইট ইসলামাবাদ ও বেইজিংয়ের মধ্যে মহাকাশ সহযোগিতা ক্ষেত্রে সর্বশেষ সংযোজন। চীনের লং মার্চ-২সি রকেটের মাধ্যমে পিআরএসএস-১ ও পাকটেস-১এ স্যাটেলাইট দুটি উৎক্ষেপন করা হয়। পিআরএসএস-১ হলো পাকিস্তানের কাছে বিক্রি করা চীনের প্রথম অপটিক্যাল রিমোট সেনসিং স্যাটলাইট। চায়না একাডেমি অব স্পেস টেকনলজি এই প্রথম কোন বিদেশী ক্রেতার জন্য এ ধরনের স্যাটেলাইট তৈরি করেছে।
বলা হচ্ছে যে চীন সরকারের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ চায়না পাকিস্তান ইকনমিক করিডোর (সিপিইসি)-সংশ্লিষ্ট রিমোট সেন্সিং তথ্য সরবরাহ করবে পিআরএসএস-১। ৫০ বিলিয়ন ডলারের সিপিইসি প্রকল্প চীনের শিনজিয়াং প্রদেশকে পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের গোয়াদার বন্দরের সঙ্গে যুক্ত করবে। ফলে সরাসরি আরব সাগরে প্রবেশের সুযোগ পাবে চীন। এই স্যাটেলাইটের ক্যামেরা দিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকার ছবি তোলা যাবে। ইনফরমেশন সিকিউরিটি ডিজাইনের পিআরএএস-১ এর ডেটা এনক্রিপ্ট করা যাবে।
পাকিস্তান, চীন সীমান্তে আরো সেনা মোতায়েনের উদ্যোগ ভারতের
তীব্র উত্তেজনার সময় পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় মোতেয়েনের জন্য ভারত তার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও ইন্দো-তিবেতান বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি)–এর আরো ১৭টি নতুন ব্যাটালিয়ন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারি সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্তে পাহারা দেয় বিএসএফ। অন্যদিকে চীনের সঙ্গে ৩,৪৮৮ কিলোমিটার লাইন অব এ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) পাহারার দায়িত্ব আইটিবিপি’র উপর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে দুই গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত নিরাপদ রাখতে সরকার দুই সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর আরো ১৭টি নতুন ব্যাটালিয়ন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতায় ভারত উদ্বিগ্ন। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরে চীনের ভৌত উপস্থিতি বৃদ্ধি সম্পর্কিত গোয়েন্দা রিপোর্ট রয়েছে। তিনি আরো বলেন যে চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে ঘনিষ্ঠতাকে দেশ দুটির মধ্যে সম্ভাব্য সামরিক মিত্রতা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, বিএসএফ ও আইটিবিপি’র নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজ শিগগিরই শুরু হবে এবং তাদেরকে এক বছরের মধ্যে মোতায়েন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অতিরিক্ত ব্যাটালিয়নগুলো দুই স্পর্শকাতর সীমান্তে আরো ভালোভাবে টহল ও অতিরিক্ত নজরদারি বজায় রাখতে সহায়ক হবে। প্রতিটি ব্যাটালিয়নে ১০০০-এর মতো জওয়ান থাকবে। কর্মকর্তাটি বলেন, রিক্রুটমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করতে শিগগিরই দুই বাহিনীর প্রধানকে নির্দেশ দেয়া হবে।
এলএসি’তে চীনা সেনাবাহিনীর ঘন ঘন লঙ্ঘনের ঘটনার পর গত বছর থেকে আইটিবিপি ও বিএসএফ সরকারের কাছে আরো ব্যাটালিয়ন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে। পাকিস্তান সীমান্তে প্রায়ই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এক বিএসএফ কর্মকর্তা বলেন, অতিরিক্ত ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অন্প্রুবেশ ও চোরাচালান রোধেও সাহায্য করবে। এই দুই আধাসামরিক বাহিনী পাকিস্তান ও চীনের বিরুদ্ধে ফার্স্ট লাইন অব ডিফেন্স। এরপর রয়েছে সেনাবাহিনী। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।