পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কক্সবাজারে আবারো সরগরম মাদকের ব্যবসা। দেশে চলমান মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান শিথিল হওয়ায় এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। জড়িয়ে পড়ছে পুরনো সেই পেশায়। তাদের সেই রাজ প্রাসাদগুলোতে আবারো বৃদ্ধি পেয়েছে সেবক ও ব্যবসায়ীদের আনাগোনা। এসব প্রাসাদে নামমাত্র অভিযান চালিয়ে শূন্য হাতে ফিরছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আবার কখনো ধরা পড়লেও বের হয়ে আসে বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্যের সহযোগিতা ও আইনের ফাঁক ফুঁকরে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, গত মে মাসে মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা মিয়ানমার, দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারত ও সউদী আরবে পালিয়ে গেছে। অনেকে ট্রলারে সমুদ্রপথে মিয়ানমারে আশ্রয় নিয়েছে। গত জুন মাসে টেকনাফের ইয়াবা গডফাদারদের প্রাসাদে কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু প্রাসাদের মালিক কোনো রাজা বা রানীর দেখা পাওয়া যায়নি। নিষ্ফল অভিযানে প্রাসাদের পাহারাদারের শুধু দেখা মিলেছে বলে জানা গেছে।আবার কোন কোনোটায় তা-ও মেলেনি। প্রাসাদগুলোয় ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে। খাঁ খাঁ করছে চারদিক।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রণজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী একরাম, আবদুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, আবুল কালাম ওরফে কালা ও জাফর আলমসহ ২০-২৫ জনের রাজপ্রাসাদের মতো বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। তাদের কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে ওসি বলেন, কোনো মাদক ব্যবসায়ীকেই ছাড় দেওয়া হবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত ইয়াবা বন্ধ না হবে, ততক্ষণ এ অভিযান চলবে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে। এ অভিযানে কোনো ধরনের পেশি শক্তিই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। মাদক ব্যবসায়ী বা ইয়াবার গডফাদার যতই শক্তিশালী হোক তাদের খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া চলছে।
জানা গেছে, মরণ নেশা ইয়াবার ব্যবসা করে টেকনাফের অনেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। রিক্সাচালক থেকে শুরু করে কুলি মজুর পর্যন্ত এখন কোটিপতি। নিজ এলাকায় তারা রাজ প্রাসাদতুল্য বাড়ি নির্মাণ ছাড়াও ঢাকা চট্টগ্রামে গড়েছে বিলাসবহুল বাড়ি। কিন্তু মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হলে রাতের আঁধারে তারা পালিয়ে যায়। এ কারণে রাজ প্রাসাদগুলো বর্তমানে রাজা-রানী শূন্য হয়ে পড়ে। কিন্তু ইদানিং মাদক বিরোধী অভিযান থমকে যাওয়ায় তারা সুযোগ বুঝে এলাকায় ফিরছে।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলার শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রকাশ্যে এলাকায় ফিরে আবারো সক্রিয়দের মধ্যে কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ ডিককুলের আবু নফর ওরফে রোহিঙ্গা নফর হাজি, বাস টার্মিনালের আবুল কালাম ওরফে ইয়াবা কালাম, টেকনাফ কাউন্সিলর মৌলভী মুজিবুর রহমান (৪০), মো. সফিক (২৪) ও ফয়সাল। টেকনাফ সাবরাং কাটাবনিয়া ফিশিং ঘাট নিয়ন্ত্রক ইয়াবাকারবারি ফয়েজ উল্লাহ, রঙ্গীখালী হেলাল আহমদ (৩৪), টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান লেঙ্গুরবিলের মো. জাফর আহমদ (৬০), তার তিন ছেলে, সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ভাগ্নে সাহেদুর রহমান নিপু (২৪), টেকনাফ ডেইল পাড়ার মো. আমিন (৩৭), নুরুল আমিন (৩৪), মৌলভীপাড়ার মো. একরাম হোসেন (৩০), একই এলাকার আবদুর রহমান (২৭), নাজিরপাড়ার ছৈয়দ হোসেন মেম্বার (৪২), পশ্চিম লেদা ইউপি সদস্য মো. নুরুল হুদা (৩৫), মো. নুরুল কবির (৩৬), বাজারপাড়ার মুহাম্মদ শাহ মালু (৫০), নির্মল ধর (৫৫), উলুমচামরী এলাকার আবদুল হামিদ (৩৫), পশ্চিম সিকদার পাড়ার ছৈয়দ আহমদ ছৈয়তু (৫৪), সদর ইউনিয়নের ইয়াবা গডফাদার এনামুল হক এনাম মেম্বার, নাজিরপাড়ার মৌলভী নুরুল হক ভুট্টু, জিয়াউর রহমান, দুধু মিয়া, নয়াপাড়ার শামসুল আলম মার্কিন (৪৭), শাহেদ কামাল (৩০), বাহারছড়ার মৌলভী আজিজ (৪০), তার ভাই ইয়াবা গডফাদার মৌলভী রফিক উদ্দিন (৪০), কচুবনিয়ার মৌলভী বশির ওরফে ডাইলা (৪৪), খানকারপাড়ার মৌলভী বোরহান (৪৬),কক্সবাজারের রামু মিঠাছড়ির ইউনুচ ভুট্টো (৪২), তার ছোট ভাই নুরুল আজিম (২৬), উত্তর মিঠাছড়ির ইয়াবা ছৈয়দ ওরফে বার্মাইয়া ছৈয়দ (৪৫), জোয়ারিয়ানালা এমএম নুরুচ ছাফ (৫৫), রামু মাদকদ্রব্য অফিসের পাশে রাশেদুল ইসলাম বাবুইন্যা (২৮), মন্ডল পাড়ার বাবু ওরফে মলই বাবু (২৭), মিয়াজীপাড়া সালেক (২৬), রামুর কচ্ছপিয়ার নুরুল আমিন কোম্পানি (৫০), মহেশখালীর পুটিবিলার মৌলভী জহির উদ্দীন, গোরকঘাটা সিকদার পাড়ার মো. সালাহ উদ্দীন (৪২), চকরিয়ার আজিজুল হক সোহেল, চকরিয়া পৌরসভার রেজাউল করিমসহ আরো অনেক ইয়াবা কারবারি এখন প্রকাশ্যে এলাকায় চলে এসেছে ।
এছাড়া এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে, হাজী সাইফুল করিম (৩৮), তার ভাই রেজাউল করিম ও তাদের ভগ্নিপতি সাইফুল ইসলাম (৪২)। সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ভাই মো. আবদুস শুক্কুর (৩৮), আবদুল আমিন, কামরুল হাসান রাসেল (৩২), পুরান পল্লানপাড়ার শাহ আলম ওরফে দেবাল্যা (২৮), আবদুল হাকিম ওরফে ডাকাত আবদুল হাকিম (৪০), গোদারবিলের জিয়াউর রহমান ও ভাই আবদুর রহমান (২৬),জালিয়াপাড়ার রেজাউল করিম রেজা, জাফর আলম ওরফে টিটি জাফর (৩৪), জুলেখা আলম জুমু (২৬)সহ সহস্রাধিক ইয়াবা কারবারি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।