Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ, আহত ৫, কারখানা ছুটি ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার, সাভার | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৮, ৬:২৩ পিএম

সাভারের আশুলিয়ায় এআর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানার সুপার ভাইজারের মানিব্যাগ চুরি যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক সুইং অপারেটরকে মারধরের ঘটনায় শ্রমিকদের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ ছড়িয়ে পরে। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে কারখানার মালিকপক্ষের নির্দেশে সিকিউরিটিরা শ্রমিকদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকরা। এতে ৫ শ্রমিক আহত হয়েছে বলে শ্রমিকরা জানায়। পরে থানা পুলিশ ও শিল্প পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনায় কারখানাটি একদিনের জন্য ছুটি ঘোষনা করে উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রবিবার সকাল সোয়া ৮টায় আশুলিয়ার জিরাবো পুকুরপাড় এলাকার এআর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেড নামে ডেনিম জিন্স প্যান্ট তৈরির কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে কারখানার শ্রমিকরা বলেন, শনিবার দুপুরে কারখানাটির সুপারভাইজার সবুজ আহমেদ শিমুল প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে টয়লেটে যান। এরপরপরই একই ফ্লোরের সুইং অপারেটর সেতুও টয়লেটে যায়। একটু পরে সুপারভাইজার এসে সেতুকে জানায়, টয়লেটে সে তার মানিব্যাগ ফেলে এসেছে। আর সে মানিব্যাগ সেতু নিয়েছে কিনা জানতে চায়? এতে সেতু ওই মানিব্যাগ পায়নি বলে জানালে, তাদের মাঝে কথা কাটা-কাটি হয় এবং অপারেটর সেতুকে মারধর করে। এ বিষয় কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে সেতু ও তার কয়েকজন সহকর্মী শ্রমিক মানিব্যাগ না নেয়ার পরও সেতুকে মারধর করা হয়েছে জানিয়ে এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন শ্রমিকরা। এ অভিযোগের কোন সুরাহা না করে শ্রমিকদের ওপর মিথ্যা দোষারোপ করেন এবং কয়েকজন শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্তের নোটিশ দেন।
রোববার সকালে শ্রমিকরা কারখানা গেটে গিয়ে দেখতে পান বরখাস্তের নোটিশ। এতে শ্রমিকরা ক্ষুব্দ হয়ে কারখানার অভ্যন্তরে বিক্ষোভের চেষ্টা চালায়। এসময় মালিকপক্ষের নির্দেশে শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। ঘটনায় শ্রমিকরাও কারখানার উৎপাদন বন্ধ রেখে চড়াও হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এসময় ৫ শ্রমিক আহত হওয়ায় তাদেরকে নিকটস্থ ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়। ঘটনায় কারখানার নিরাপত্তা প্রধান কামাল হোসেনকে শ্রকিকরা মারধর করে। এ ঘটনার পর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সদস্যরা শ্রমিকদের লক্ষ্য করে ৬ রাউন্ড গুলি ছুড়ে।
এ বিষয়ে কারখানার মহাব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, এআর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেড কারখানায় প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক রয়েছে। কারখানার সুইং সেকশনের সুপারভাইজার সবুজ এর মানিব্যাগটি অপারেটর সেতু নিয়েছে বলে প্রমান পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মারধরের সত্যতা তিনি স্বীকার করে বলেন, রোববার সকাল সোয়া ৮টায় শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশের পর উৎপাদন বন্ধ রেখে ভাংচুর চালায়। এসময় তাদের বাঁধা দিলে শ্রমিকরা কারখানার নিরাপত্তা ইনচার্জ কামালকে বেদম মারধর করে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ছোড়ে। তবে ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। এ অবস্থায় কারখানা একদিনের (রোববার) জন্য ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে।
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল আউয়াল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কারখানার নিরাপত্তাকর্মীরা গুলিবর্ষন করেছে। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ বা শ্রমিকদের পক্ষ হতে কোন অভিযোগ থানায় দায়ের করেনি এবং ঘটনায় কেউ আটকও হয়নি। তবে ঘটনাস্থলে এখন স্বাভাবিক পরিস্থিতি রয়েছে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রমিক অসন্তোষ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ