Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলে এক চতুর্থাংশ জমি সেচের আওতায়

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আবাদযোগ্য জমির এক চতুর্থাংশ এখনো সেচ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। তারপরও দক্ষিণাঞ্চল প্রায় ৭ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উদ্বৃত্ত এলাকা। সেচের আওতায় অর্ধেক জমি আনা হলে দক্ষিণাঞ্চলে কমপক্ষে ১৫ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উদ্বৃত্ত হতে পারে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে পুরো দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলার প্রায় সাড়ে ১২ লাখ হেক্টর জমির মধ্যে সেচযোগ্য হচ্ছে সোয়া ৮ লাখ হেক্টর। অথচ মাত্র ১ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় রয়েছে। আর গোটা দক্ষিণাঞ্চলে মাত্র ১টি গভীর নলকূপের সাহায্যে ১৫ হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া হচ্ছে। অগভীর ২৯টি নলকূপের সাহায্যে সেচ পাচ্ছে ২৯ হেক্টর জমি। এর মধ্যে ১৭টি হচ্ছে বিদ্যুতায়িত।
সম্প্রতি বরিশাল ও পটুয়াখালীতে ‘বরিশাল বিভাগে ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের ভ‚মিকা ও ভবিষ্যৎ সম্ভবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে খাদ্য উদ্বৃত্ত দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি সেক্টরের এসব তথ্য উঠে এসেছে। সেমিনারে সেচের আওতায় মাত্র ১ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টর জমি থাকার বিষয়টিকে অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক বলে এ থেকে উত্তরণে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশের মধ্যে পতিত জমি পুনরুদ্ধার করে আবাদের পাশাপাশি সেচের এলাকা বর্ধিত করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। খাল পুনঃখনন ও সংরক্ষণের মাধ্যমে সেচের পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়াও সুপারিশে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে সেচের পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিএডিসি’র কার্যক্রম জোরদার করার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়। সকল বেড়ি বাঁধ ও স্লইস গেট মেরামত এবং বিএডিসি’র সেচনালাগুলো সারা বছর কার্যকর রাখার কথাও বলা হয় সেমিনারে। সেচ নালার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিরও সুপারিশ করা হয়।
দক্ষিণাঞ্চলের উপক‚লীয় লবণাক্ত এলাকাগুলোতে নোনা পানির অনুপ্রবেশ বন্ধে রাবার ড্যাম, হাইড্রোলিক এলিভেটেড ড্যাম, রেগুলেটর এবং ওয়াটার পাসেসসহ সবধরণের ওয়াটার কন্ট্রোল স্ট্রাকচার কার্যকর রাখার পাশাপশি বিদ্যমান অবকাঠামোর সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দক্ষিণাঞ্চলে সেচবাদকৃত ১ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে মাত্র ২১০ হেক্টরে ৩০টি গভীর ও অগভীর নলকূপ থেকে ভ‚গর্ভস্থ পানি উত্তলন করা হচ্ছে। এর মধ্যে মাত্র ১৭টি বিদ্যুতায়িত। অবশিষ্ট প্রায় ১ লাখ ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া হয় ৯ হাজার ৭৮১টি ক্ষুদ্র যন্ত্রের সাহায্যে। এর মধ্যে ২৯৮টি হচ্ছে বিদ্যুতায়িত। অবশিষ্ট যন্ত্রগুলো ডিজেল চালিত।
দক্ষিণাঞ্চলে সেচে ব্যয় দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে বেশী। এ কারনেও কৃষকদের মধ্যে সেচে চাষাবাদের দিকে আগ্রহ কম। ডিজেলে ভর্তুকি নেই এবং সেচ ব্যয় বেশী। আবার সেচকাজে ব্যবহৃত বিদ্যুতে ২৫ ভাগ পর্যন্ত সরকারি ভর্তুকিও রয়েছে। তবে বরিশাল ও ঝালকাঠীতে কূপ ও পুরনো পদ্ধতির ডোঙ্গার সাহায্যেও প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ডিএই’র বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক শেখ ওমর ফারুখ ইনকিলাবকে জানান, বর্তমানে সেচের আতওতায় জমির পরিমান কিছু বেড়েছে। ডিএই বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথেই দেখছে। সকল ব্লক সুপাভাইজারদের কৃষকদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রেখে সেচাবাদ বৃদ্ধির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সেচ

১৩ এপ্রিল, ২০১৯
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ