Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবশেষে স্বল্পমাত্রায় চালু জিকে সেচ প্রকল্প

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রির্পোটার : | প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

পদ্মা নদীর পানি বাড়তে থাকায় স্বল্পমাত্রায় চালু হয়েছে দেশের বড় সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে)। গত ১ এপ্রিল থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি পাবে বাংলাদেশ। আগের ১১ দিন ভারত একইভাবে ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি নিয়েছে। চুক্তি মোতাবেক সেই সময় বাংলাদেশের প্রাপ্যতা ছিল মাত্র ২৩ হাজার ৫৪৪ কিউসেক। গত শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শূন্য থেকে ধীরে ধীরে বাড়িয়ে ভ্যান অ্যাঙ্গেল (পাম্প চালানো স্ইুচ) বাড়িয়ে ১০ শতাংশে দিয়ে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। বিষয়টি জানান পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘পদ্মায় পানি কিছুটা বাড়লেও পাম্প হাউসের ইনটেক চ্যানেলে এখনো ৪ দশমিক ২ মিটার আরএল (রিডিউসড লেভেল) পানি পাওয়া যাচ্ছে। ভ্যান অ্যাঙ্গেল ১০ শতাংশ দিয়ে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে ডিসচার্জ চ্যানেলের পানি সরবরাহ ১২ দশমিক ২৫ থেকে বেড়ে ১৩ দশমিক ২৫ মিটার আরএল হয়েছে। ১৪ দশমিক ৫ মিটার আরএল হলে পূর্ণমাত্রায় সেচ সরবরাহ করা যায়। পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভ্যান অ্যাঙ্গেল বাড়ানো হবে।’
এই প্রকল্পের আওতায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদী থেকে পানি এনে চার জেলার কৃষকদের সরবরাহ করা হয়। কিন্তু পদ্মায় পানি একেবারে কমে যাওয়ায় গত ২৬ মার্চ থেকে পাম্প বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে, যৌথ নদী কমিশনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এখন ৩৫ হাজার কিউসেক (প্রতি সেকেন্ড এক ঘনফুট) পানি পাচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি পাবে বাংলাদেশ। আগের ১১ দিন ভারত একইভাবে ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি নিয়েছে। চুক্তি মোতাবেক সেই সময় বাংলাদেশের প্রাপ্যতা ছিল মাত্র ২৩ হাজার ৫৪৪ কিউসেক।
সীমিত আকারে পাম্প চালু হওয়ার খবরে আনন্দিত কুষ্টিয়া জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘ধানে এখন থোড় আসার সময়, নিয়মিত পানি দিতে পারলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।’ জিকে সেচ প্রকল্পের পাম্প দুটি গত ১৫ ও ১৭ জানুয়ারি চালু করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় বোরো মৌসুমে এবার কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলায় ১৯৪ কিলোমিটার প্রধান খালের মাধ্যমে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচসুবিধা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। ভেড়ামারায় অবস্থিত এই পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, পাম্প দুটি একসঙ্গে সেকেন্ডে ১ হাজার ২০০ কিউসেক পানি সরবরাহ করতে সক্ষম। চালুর পর থেকে ১০ মাস এগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে চালানোর কথা ছিল।
কিন্তু পদ্মায় পানির লেভেল কমে আসায় ২৬ মার্চ সন্ধ্যার পর থেকে পাম্প দুটির সরবরাহ শূন্যে নেমে আসে। ওই সপ্তাহে পদ্মায় পানি পাওয়া গেছে ৪ দশমিক ১ থেকে ৪ দশমিক ১৮ মিটার আরএল পর্যন্ত। ‘৪ দশমিক ৫ মিটার আরএল এর নিচে নামলেই পাম্প মেশিনের কয়েল ও বিয়ারিং-এর তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে, শব্দ হচ্ছে ও ঝাঁকুনি দিচ্ছে। এ কারণেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পাম্প দুটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি’, বলেন প্রকৌশলী মিজানুর।
পাম্প বন্ধ রাখায় চরম বেকায়দায় পড়েছেন চার জেলার কৃষক। বাধ্য হয়ে অনেকেই শ্যালো পাম্প দিয়ে পানি তুলে সেচ দিচ্ছেন। যেসব এলাকায় জিকে প্রকল্পের পানির সরবরাহ আছে, তারা এই পানির ওপর ভরসা করেই বোরো ধান, পেঁয়াজ ও ভুট্টা চাষ করেন। হঠাৎ পানি বন্ধ হওয়ায় তারা চিন্তায় পড়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জিকে সেচ প্রকল্প
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ