পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুফল মিলছে তথ্য আপা প্রকল্পের। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারীদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞানের ব্যবহারে উৎসাহিত করছে। তাদের মাঝে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্যের আদান প্রদান করা ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে, প্রকল্পটিতে আছে বেশকিছু দুর্বল দিকও। এসব দুর্বল দিক কাটিয়ে উঠতে পারলে গ্রামীণ নারীদের আরও সচেতন করা সম্ভব হতো। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রভাব মূল্যায়ন সমীক্ষায় উঠে এসেছে এ চিত্র।
‘তথ্য আপা: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন’ প্রকল্পের মূল্যায়ন করে গত জুন মাসে প্রতিবেদনটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। আইএমইডির প্রতিবেদন প্রসঙ্গে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আইএমইডির মূল্যায়ন প্রতিবেদনগুলো ভালো হচ্ছে। তাদের দেওয়া সুপারিশগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয়গুলো ভবিষ্যৎ প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এসব সুপারিশ কাজে লাগায়।
প্রতিবেদনে প্রকল্পটির শক্তিশালী দিক হিসেবে বলা হয়েছে, এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩টি জেলার ১৩টি উপজেলায় তথ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসব তথ্য কেন্দ্রে নারীদের তথ্য সহকারীদের দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে। তথ্য কেন্দ্রে সার্ভিস বা সেবাগুলো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হয়। এছাড়া নারীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইন, কৃষি ও ব্যবসা বিষয়ক পরামর্শ দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গ্রামীণ নারীদের মাঝে তথ্যের আদান প্রদানের জন্য ডোর টু ডোর সেবা দেওয়া হয়। বিভিন্ন সফটওয়্যার তৈরির মাধ্যমে ১৩টি উপজেলার বাইরে সারাদেশের নারীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
প্রকল্পের মাধ্যমে সৃষ্ট সুযোগ : আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তথ্য আপা প্রকল্পের অন্যতম প্রধান সুবিধা হল আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। সফটওয়্যারগুলো শুধুমাত্র গ্রামীণ নারীদেরই নয়, বাংলাদেশের সকল স্তরের নারীদের তথ্যে প্রবেশ ও জ্ঞান চর্চার দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। তাদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার উত্তর জানতেও তাৎক্ষণিক সাহায্যের জন্য প্রকল্পের মাধ্যমে তৈরি সফটওয়্যার সার্বক্ষণিক অনলাইনে রাখা হয়েছিল। প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারী উদ্যোক্তা গড়ে তোলার মাধ্যমে নারীদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব ছিল।
এছাড়া, গ্রামীণ নারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করা। দেশের যে কোনো স্থান থেকে কল সেন্টারে ফোন করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ব্যবসা, জেন্ডার, আইন বিষয়ক পরামর্শকদের সাথে যোগাযোগ করা। কল সেন্টারের মাধ্যমে সেবাগ্রহীতা সশরীরে হাজির না হয়েও কোনো রকম সংকোচ ছাড়াই তাদের সকল ধরনের ব্যক্তিগত সমস্যার বিষয়ে পরামর্শকদের পরামর্শ চাইতে সক্ষম হয়েছিলেন। তথ্য সহকারীগণ ডোর টু ডোর সেবা দিতে রক্ষণশীল ও বৃদ্ধ নারীদের বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা দিয়েছেন।
প্রকল্পের দুর্বল দিক: প্রতিবেদনে বলা হয়েছে প্রকল্প প্রণয়নে কোনো ফিজিবিলিটি (সম্ভাব্যতা যাচাই) স্টাডি করা হয়নি। প্রকল্প বাস্তবায়ন পরবর্তী প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে ডিপিপিতে কোনো দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো কৌশল ব্যবহার করা হয়নি। বিভিন্ন সময়ে তথ্য আপা প্রকল্পের ওয়েব পোর্টালটি বন্ধ ছিল। উপজেলা পর্যায়ে তথ্য কেন্দ্রগুলো স্থাপন করা হয়েছিল। তথ্য কেন্দ্রগুলো ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থাপন করা গেলে, কম সুযোগ প্রাপ্ত নারীদের তথ্য প্রযুক্তি সেবা দেয়া ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হতো।
তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টি করতে বিভিন্ন ই-সার্ভিস ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। ই-কমার্স প্লাটফরমের ব্যবহারের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের তৈরি পণ্য দেশে ও বিদেশে পরিচিত ও নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব ছিল। খুব কম সময়ে উপকারভোগীরা কল সেন্টারের সেবা নিতে পারত। প্রকল্পের মাধ্যমে স্থাপিত কেন্দ্রীয় কল সেন্টারটির সেবা সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চালু থাকত। প্রকল্পের শেষ পর্যায়ে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি শেষ হওয়ায় মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনগুলো থেকে উপকারভোগীরা যথাযথ সেবা নিতে পারেনি।
তথ্য আপা প্রকল্পটি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় মহিলা সংস্থা দুই কোটি ২৩ লাখ টাকা খরচে ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য ২০১১ সালে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুমোদন দেয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১৩ কোটি ২২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এবং ২০১১ সালের জুলাই হতে ২০১১ সালের জুন ২০১৫ পর্যন্ত নির্ধারণ করে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধিত প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় সংশোধিত প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে ৬ মাস মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।