পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পোস্টার, ব্যানার আর প্লাকাডে মুড়ে গেছে নগরী। হাজার হাজার নয় লাখ লাখ পোস্টার, প্লাকার্ড। মেয়র কাউন্সিলর মহিলা কাউন্সিলর সবার পোস্টার। রাজপথ থেকে গলিপথ কোথাও ফাঁকা নেই। অনেকে পোস্টার করে দর্শনীয় স্থানে লাগাতে পারেনি।
নগরঘুরে দেখা যায় প্রচার প্রচারণায় আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী এ পর্যন্ত এগিয়ে আছেন। নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত হলফনামায় খায়রুজ্জামান লিটন নগরীর বিকল্প অফসেট থেকে দেড় লাখ পোস্টার এক লাখ লিফলেট এবং পনের লাখ হ্যান্ডবিল ছাপাবেন বলে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নগরীর প্রভাত প্রিন্টিং প্রেস হতে ষাট হাজার পোস্টার একলাখ লিফলেট আর ত্রিশ লাখ হ্যান্ডবিল ছাপাবেন বলে উল্লেখ করেছেন। তবে বাস্তবে এদের প্রচারপত্র আরো বেশী ছাপা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। মেয়র প্রার্থীর বাইরে রয়েছে কাউন্সিলর প্রার্থী। সব মিলিয়ে দুইশো সতের প্রার্থীর পোস্টার লিফলেট কি অবস্থা হবে তা সহজেই অনুমেয়। আবার বর্ষার কথা ভেবে তৈরী করা হয়েছে লমিনেটেড পোস্টার প্লাকার্ড। প্রতীক বরাদ্দের পর ছাপাখানাগুলো পার করছে ব্যস্ত সময়।
মার্কা সম্বলিত পোস্টার লিফলেট নিয়ে ছুটছেন নিজ নিজ ওয়ার্ডের ভোটারদের কাছে। রাজনৈতিক সিডরে বিপযস্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা সিটি নির্বাচনের সুবাদে ফের মাঠে সক্রিয় হচ্ছেন। অনেকদিন পর নগরীতে বিএনপির প্রচারণার মাইকিং দেখা যায়। ধানের শীষে ভোট চেয়ে ফিরছে অলিগলি। ব্যস্ত আওয়ামী লীগের প্রচারণা সেল। তারাও নামিয়েছে প্রচুর মাইক। অটোরিক্সার মাথায় মাইক লাগিয়ে গায়ে পোস্টার ঝুলিয়ে চালাচ্ছে প্রচারণা। প্রার্থীর গুনগান করে নৌকায় ভোট চাইছেন। কদর বেড়েছে প্রচারকর্মী ভরঘুরে বেকার ছেলে মেয়েদের। গতকালও কজন মহিলাকে দেখা গেল রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধের নীচের বস্তিতে মিছিল করে প্রচারণা চালাতে। এদের আনা হয়েছে জনপ্রতি পঞ্চাশ একশো টাকা আর নাস্তার খরচ দিয়ে।
বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগ : নির্বাচন কমিশনে এক মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ
বিএনপি ২০দলীয় জোটের মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। এসময়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু, মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, শওকত আলী, আলী হোসেন হাজী শহীদ আলম, প্রমুখ। ১নং ওয়ার্ডেও কাশিয়াডাঙ্গা, আদুবুড়ি, কাঁঠালবাড়িয়া, সাহজীপাড়া, হারুপুর, সায়েরগাছা, রায়পাড়া, পূর্বপাড়া, গোলজারবাগ, পুরাপাড়া, মুন্সিপাড়া, হড়গ্রাম ও পীরসাহেব পাড়াসহ অত্র ওয়ার্ডে অন্যান্য পাড়ার প্রতিটি বাড়িতে যান এবং ধানের শীষে ভোট দিয়ে ২০দলীয় জোট প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে বিজীয় করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেন। সংযোগকালে স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা ধানের শীষে পক্ষে স্লোগান দেন। বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ১নং ওয়ার্ডসহ অন্যান্য ওয়ার্ডে বিএনপি মেয়র প্রার্থীর পোস্টার, ব্যানার, ও ফেস্টুন সরকার দলীয় প্রার্থীর সন্ত্রাসীর টাঙ্গাতে বাধা প্রদান করছে। কোথায় এগুলো টাঙ্গালে তারা ছেঁড়া নষ্ট করে ফেলছে। এছাড়াও ভোটারদের এখন থেকেই ধানের শীষে ভোট দিতে নিষেধ করছে। এমনকি ভোট কেন্দ্রে না যাওয়া জন্য ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছে। গেলেও নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা শুরু করেছে।
নির্বাচনে বিএনপি’র অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি সর্বদা জনপ্রিয়, সুশৃংখল একটি দল। এছাড়াও দলের মধ্যে কোন দন্দ বা কোন্দল নেই। বিএনপি নেতারা এখন পূর্বের থেকে অনেক একতাবদ্ধ ও সংগঠিত। সুষ্ঠ নির্বাচন তারা আসা করছেন। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে বিএনপি প্রার্থী প্রায় ৭০হাজার ভোটে বিজয়ী হবে। তিনি আরো বলেন, রাজশাহীতে কোনভাবেই বিশৃংখলা করতে দেওয়া হবেনা। বিএনপি নেতাকর্মীরা জীবন দিয়ে হলেও সরকারের নীলনক্সা ও প্রহসনের নির্বাচন রুখে দেবে বলে জানান এই নেতা।
এদিকে, রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এক মেয়র প্রার্থীর কর্মীদের বিরুদ্ধে আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে রিটানিং অফিসার আমিরুল ইসলামের কাছে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে থেকে দরখাস্তটি পৌঁছান বুলবুলের নির্বাচনী সমন্বয়ক ও জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জাল হোসেন তপু। এতে নৌকা প্রতীক সমর্থিত কর্মীদের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগ আনেন তিনি ।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গতকাল বেলা ১১টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে ১৩নং ওয়ার্ডে শহীদ নাজমুল হক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণালীর পিছনের মোড় পর্যন্ত, গত ৯ জুলাই রাত ৮টার দিকে ৪ নং ওয়ার্ড বহরমপুর (বুলনপুর) এলাকায় সিহাবের বাড়ীর পাশে গাড়ি ভাঙচুর (গাড়ি নং- রাজ মেট্রো-ন-১১০১২২), গত ১০ জুলাই ২০নং ওয়ার্ডে বেলদারপাড়ায় ধানের শীষ প্রতীকের টাঙ্গানো ফেস্টুন ভাঙচুর এবং ঝুলানো পোস্টার ছেঁড়া। এসব এলাকায় ধানের শীষ প্রতীকের লাগানো পোস্টার, ফেস্টুন, খুলে ফেলা এবং কোথাও কোথাও লাগাতে বাধাসহ কর্মীদের লাঞ্ছিত করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া ওই রাতে(১০ জুলাই) অলকার মোড় হইতে আলুপট্টির মোড় পর্যন্ত ধানের শীষ প্রতীকের সকল ফেস্টুন, রাজশাহী সিটি কলেজ গেট হইতে সার্ভে ইন্সটিটিউট পর্যন্ত লাগানো ধানের শীষ প্রতীকের সকল ফেস্টুন, ৬নং ওয়ার্ডে জিপিও’র সামনে, ১৯ নং ওয়ার্ড ছোট বনগ্রাম এলাকায়, ২৭নং ওয়ার্ড বালিয়াপুকুর এলাকায় ও ৩০নং ওয়ার্ড বিনোদপুর বাজারে ধানের শীষ প্রতীকের প্রচার মাইক এর কর্মীদের চড়থাপ্পর মারা হয় এবং প্রচার কাজে বাধা দেওয়া হয়। রিটানিং অফিসার আমিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ তদন্ত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের গণসংযোগ
রাজশাহীর উন্নয়নের স্বার্থে নৌকায় ভোট চেয়ে নগরীর আরডিএ মার্কেটে গণসংযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত, মহাজোট সমর্থিত মেয়র প্রার্থী, সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। গতকাল সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নগরীর আরডিএ মার্কেটে গণসংযোগ করেন তিনি।
বেলা সাড়ে ১১টায় আরডিএ মার্কেটের প্রধান ফটকের সামনের দোকানগুলো থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। আরডিএ মার্কেটের ভেতরসহ আশপাশের বিভিন্ন দোকানে দোকানে যান, নগরীর উন্নয়নে নৌকায় মার্কায় ভোট চান লিটন। আরডিএ মার্কেট সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির ফরিদ মাসুদ হাসান বলেন, ‘আরডিএ মার্কেটের সব ব্যবসায়ী লিটনের ভাইয়ের জন্যে ঐক্যবদ্ধ। যে মানুষ নগরীর উন্নয়নে কোনো অবদান রাখতে পারেন না, ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ান না, তাকে এবার ব্যবসায়ীরা ভোট দেবেন না। আমরা ব্যবসায়ীরা দলমত নির্বিশেষে খায়রুজ্জামান লিটন ভাইকে ভোট দেবো।’
গণসংযোগের সময় এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে ছিলেন আরডিএ মার্কেট সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সদস্য ফরিদ মাসুদ হাসান, ৯ং ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম রাশেদুল হাসান তুরু, ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য রাজিব হাসান, সুলতান আহম্মেদ, এসএম গোলাম আওলিয়া ওলি, বোয়ালিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান কালু, ১২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হাসান প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।