পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এবার চীনের অর্থায়নে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থায়ী কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে। গত মাসে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা ছিল রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর। সময়ের মধ্যে শেষ না হওয়ায় নির্মাণের সময় আরো দুই বছর বাড়িয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে সরকার। একই সঙ্গে প্রকল্পের ব্যয় ২৭৫ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৩০৩ কোটি টাকা করা হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের আগে নির্মাণ শেষ হলে ২০১৯ সালে এখানেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘বাংলাদেশ-চায়না এক্সিবিশন সেন্টার’ নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্পটি সংশোধিত আকারে অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন।
সূত্র মতে, যানজট এড়ানোর পাশাপাশি বৃহত্তর পরিসরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থান পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা শুরু হয় ২০০৯ সাল থেকে। ঢাকার প্রাণকেন্দ্র আগারগাঁও থেকে সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি শহরের মধ্যে বেশ কয়েকটি স্থানের নাম নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। দীর্ঘ আলোচনার পর রাজধানীর পাশে পূর্বাচল উপশহরে বাণিজ্য মেলার স্থায়ী ঠিকানা চূড়ান্ত করা হয়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য থেকে জানা যায়, প্রকল্পে ৪৭৫ কোটি দেবে সরকার, চীন সরকার প্রকল্প সাহায্য হিসেবে দেবে ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা, ইপিবির নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ২০২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। শুরুতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৯৬ কোটি ১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১৩৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা, চীনা সরকারের প্রকল্প সাহায্য ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং ইপিবির নিজস্ব তহবিল থেকে ৩২ কোটি ১৩ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল।
১৯৯৫ সাল থেকে ইপিবি আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ সচিবালয় নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানে হয়ে আসছিল। কিন্তু এই বাণিজ্যমেলা আয়োজনের জন্য প্রতি বছরই টেন্ডার দিয়ে কোটি টাকা ব্যয় করে অস্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করা হতো।
১৯৯৮ সালে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তেজগাঁওস্থ পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় মেলার স্থায়ী প্রাঙ্গণ নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০০৯ সালে তেজগাঁওস্থ পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় ৩৯ দশমিক ৪৫ একর জমির ওপর ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়। চীন সেখানে ২১০ কোটি টাকা দিতে সম্মত হয়েছিল। একই বছর ৯ ডিসেম্বর একনেক প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। কিন্তু সিভিল এভিয়েশন থেকে আপত্তির কারণে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয়। পরবর্তীতে এটির স্থায়ী কেন্দ্র করার জন্য বড় আকারের জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত ঢাকার অদূরে পূর্বাচল উপশহরে স্থায়ী কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রকল্পের নির্মাণকাজ ২০১৫ সালের জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০১৮ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। প্রকল্পের প্রথম সংশোধিত প্রস্তাবে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার সময়সীমা ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জটিলতা কোথায় গতকাল একনেক পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ একর জমি বরাদ্দ দেন। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে দেখা গেছে, ওই জমির মধ্যে বাণিজ্য মেলার হবে না। আরো ১৫ একর জমির প্রয়োজন হবে। বাড়তি ১৫ একর জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে সময় লেগেছে। এছাড়া আগের নকশায় ছিল ভূ-গর্ভস্থ পার্কিং ব্যবস্থা করা হবে। সেটি সংশোধন করে এখন সাফের্স কার পার্কিং করা করা হয়েছে। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী আরো জানান, এই প্রকল্পের আওতায় সম্মেলন কক্ষ, ডরমেটরি, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, কালভার্টসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
এদিকে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় খানজাহান আলী বিমানবন্দর প্রকল্পটি সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল একনেক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। আগে সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল, নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার।
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য বলছে, খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পটি সরকার নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৫ সালের ৫ মে একনেক সভায় ৫৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। কিন্তু এই প্রকল্পটিও জমি অধিগ্রহণের জটিলতায় বেশি দূর এগুতে পারেনি। অবশেষে সরকার প্রকল্পটি পিপিপির ভিত্তিতে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার এখন শুধু জমির ব্যবস্থা করবে। বাকি কাজ হবে পিপিপিতে। জমি অধিগ্রহণের জন্য ২১৭ কোটি টাকা ব্যয় রেখে গতকাল একনেকে প্রকল্পটি সংশোধিত আকারে অনুমোদন দেওয়া হয়।
একনেক সভায় দেশের ৩৭ জেলার সার্কিট হাউজের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ শিরোনামের আলাদা একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ১৭০ কোটি টাকা। সার্কিট হাউজগুলো বেশিরভাগই তিন থেকে চারতলা ভিত বিশিষ্ট। সেগুলো আরা এক তলা ঊধ্বমুখী করা হবে। ২০২০ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। একনেক সভা শেষে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, সভায় দুই হাজার ৯২০ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ছয়টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে আসবে দুই হাজার ৭০ কোটি টাকা। বাকি টাকা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়ার আশা করছে সরকার।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো- ২৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে মাইজদি-রাজগঞ্জ-ছয়ানী বসুরহাট-চন্দ্রগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ককে যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ, ৬৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন এবং ৩১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সারা দেশে পুরনো খাদ্য গুদাম ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।