Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অন্তহীন সমস্যায় বড়দল বাজারের ব্যবসায়ীরা

আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থেকে জি এম মুজিবুর রহমান | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

আশাশুনি উপজেলার বৃহত্তর পুরাতন মোকাম বড়দল বাজারের ব্যবসায়ীরা নানাবিধ সমস্যা বুকে ধারণ করে কষ্টকর পরিবেশে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে পুরতান ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
দক্ষিণ খুলনার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মোকাম বড়দল বাজার। বাজারটিতে প্রায় সাড়ে ৪ শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বহু এনজিও, বীমা, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও ধনবান মানুষের বসবাস। বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা কপোতাক্ষ ও মরিচ্চাপ নদী এখন নাব্যতা সঙ্কটে ভুগছে। ফলে এলাকার সকল বাজারের ব্যবাসীরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকারী ব্যবসায়ীরা পন্য নিয়ে সহজে ভিড়তে পারছে না। তবে সড়ক পথে যতটুকু সম্ভব ব্যবসায়ীদের যাতয়াত অটুট রয়েছে। প্রতিদিন বিশেষ করে সাপ্তাহিক হাটের দিনে এখানে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়ে থাকে।
অনেকগুলো দুঃখের মধ্যে অন্যতম দুঃখ বাজারটিতে কোন ব্যাংকের শাখা নেই। বড়দল, কাদাকাটি, খাজরা, আনুলিয়া, প্রতাপনগর ও দরগাহপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এলাকায় কোন ব্যাংকের শাখা না থাকায় অর্থ লেনদেন নিয়ে খুবই সমস্যায় রয়েছেন। এসব এলাকার মানুষকে দূরবর্তী আশাশুনি, গুনাকরকাটি বা বুধহাটা বাজারে অবস্থিত ব্যাংকে লেনদেন করতে হয়। যা অনেক কষ্টকর। অনেকে ঝক্কি-ঝামেলা মাথায় নিয়ে বাধ্য হয়ে ঐসব ব্যাংকে লেনদেন করে থাকেন।
সরকারের কর্মসৃজন কর্মসূচির শ্রমিক, বিধবা-বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীভাতাসহ বিভিন্ন ভাতাভোগিরা ১০ থেকে ৩০/৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে তাদের ভাতার টাকা ওঠাতে ঐ সব ব্যাংকে যেতে বাধ্য হয়ে থাকেন। যেটি দুরূহ ও ব্যয়বহুল। বাজারের ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের শাখার অভাবে ব্যবসায়িক টাকা লেনেদেনে চরম বিপাকে রয়েছেন। এলাকার মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে না পেরে বিপদ সংকুল জীবন যাপন করছেন। এনিয়ে পত্র-পত্রিকায় লেখলেখি, বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন-নিবেদন করা হয়েছে। এমনকি বাজারে কৃষি ব্যাংকের শাখা স্থাপনের দাবিতে বড়দল মেইন সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আ. আলিম মোল্যা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার লিয়াকত আলি, গ্রামীন ব্যাংক ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম, উন্নয়ন প্রচেষ্টার ম্যানেজার শফিয়ার রহমান, আশা ম্যানেজার শিবপদ চক্রবর্তী, ইউপি সদস্য, ব্যবাসায়ীবৃন্দ, বাজার কমিটির সেক্রেটারী কাজল, বড়দল প্রেসক্লাব সভাপতি শফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণ মানববন্ধনে অংশ নেন। এলাকাবাসীসহ সকল প্রতিষ্ঠানের মানুষের প্রাণের দাবি অবিলম্বে বড়দল বাজারে কৃষি ব্যাংকের একটি শাখা স্থাপনের মাধ্যমে এলাকাবাসীর দুঃখ ও দুর্গতি লাঘবে ব্যবস্থা নেয়া হোক।
এছাড়া বাজারের চাঁদনী সেটের ছাউনি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পনিতে ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। মাছ ও মাংসের সেট, চাঁনদী সেটের পাশে মাছ ও মাংসের পট্টি ও কাপড় পট্টি পানিতে তলিয়ে থাকায় হাটু পানি ও কাদামাটিতে কষ্টকর পরিবেশে ক্রেতারা অন্য বাজারে যেতে বাধ্য হন। মনোহরী ও কাঁচামাল পট্টি নদীর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে থাকে। ব্যবসাীরা তাদের ব্যবসার দোকান বসিয়ে থাকেন খুটির উপর গোলপাতার ছাউনি দিয়ে। আঁধাপাকা কিংবা পাকা ঘর নির্মাণ করতে গেলেই চাঁদাবাজী ও সরকারি বিধি-নিষেধের কারণে হয়ে ওঠে না। ফলে বাজারটি এখন ছোবড়া ঘরের বাজারে পরিণত হতে চলেছে। পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় পুরা বাজারটি পানি ও কাঁদামাটিতে চরম বিপদাপন্ন হয়ে ওঠছে। চাঁদনী সেট, অভ্যান্তরীণ সড়ক নির্মাণ, পয়ঃনিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা এবং নদীগুলো পুনঃখনন না করায় নৌপথ রুদ্ধসহ নানাবিধ সমস্যা দীর্ঘকালের। এসব অন্তহীন সমস্যা নিরসনে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ আশা করছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যবসায়ী


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ