মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
থাইল্যান্ডের দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আটকা ১২ জন ফুটবলার এবং তাদের কোচকে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সর্বশেষ অভূতপূর্ব এ অভিযানে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় মোট ছয় কিশোরকে বাইরে নিয়ে আসা হয়েছে। গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ১৩ বিদেশি ডুবুরি ও থাইল্যান্ডের নৌবাহিনীর অভিজাত শাখা থাই নেভি সিলের পাঁচ সদস্য এই উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩৭ মিনিটে প্রথম, ৫টা ৫০ মিনিটে দ্বিতীয় এবং এর ১৬ মিনিট পর তৃতীয় কিশোরকে গুহার ভেতর থেকে বাইরে নিয়ে আসা হয়।
এর কিছুক্ষণ পর আরো তিন কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। দেশটির উত্তরাঞ্চলের থ্যাম লুয়াং গুহা থেকে উদ্ধারের পর প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা। পরে দ্রুত সেখান থেকে হেলিকপ্টারযোগে মং জেলার চিয়াংরাই প্রাচ্যানুকরোহ হাসপাতালে নেয়া হয়।
উদ্ধারকারী দলের জ্যেষ্ঠ এক সদস্য বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘গুহার ভেতর থেকে ছয় কিশোরকে বের করে নিয়ে আসা হয়েছে বলে আমি তথ্য পেয়েছি।’ তবে প্রথম দফায় চারজনকে উদ্ধারের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন উদ্ধার মিশনের কর্মকর্তা লে. জেনারেল কংচিপ ট্যানট্রাওয়ানিত। তিনি বলেছেন, দুর্বল কিশোরদের প্রথম দফায় উদ্ধার করা হয়েছে। বিবিসির ড্যান জনসন বলেছেন, গুহা এলাকা থেকে প্রায় এক ঘণ্টার পথ জেলার প্রধান হাসপাতাল। কিশোরদের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে অপেক্ষা করছেন।
অভিযান শুরুর আগে গুহার বাইরে প্রস্তুত রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স। উদ্ধার তৎপরতায় সংশ্লিষ্ট এক সূত্রের বরাত দিয়ে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, পৃথক কয়েকটি দলে ভাগ করে আটকে পড়াদের বের করে আনার চেষ্টা হবে। ১৪ বছরের কিশোর স্যামকে বের করে আনা হবে সবার আগে, সবশেষে বের হবেন কোচ একাপল চান্থাওং।
এর আগে উদ্ধার মিশনের প্রধান ন্যারংস্যাক ওসোত্তানাকর্ন বলেন, গুহার উদ্ধার পথের জটিলতা ও অভিযানে নানামূখী সমস্যার কারণে এটা বলা যাচ্ছে না যে, কিশোরদের প্রথম দলকে বের করে আনতে ঠিক কত সময় লাগতে পারে। এছাড়া গুহাটি সাপের মতো এমনভাবে পেঁচানো এবং এর ভেতরে এতো ফাটল থাকায় উদ্ধারকারীদের জন্যে যেকোন সময়বিপদ ডেকে আনতে পারে।
উদ্ধার মিশনের যৌথ কমান্ড সেন্টারের প্রধান ন্যারংস্যাক ওসোত্তানাকর্ন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, ‘থাই নেভি সিলের পাঁচস সদস্যসহ বিদেশি ১৩ ডুবুরি সকাল ১০টায় গুহায় প্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে ১০জন চেম্বার-৯ (যেখানে কিশোররা আটকা আছেন) ও মাঝপথে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত চেম্বার-৬ এর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন। অন্য তিন ডুবুরি অভিযানে যোগ দিয়েছেন স্থানীয় সময় দুপুর ২টায়।
এছাড়াও থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, চীন এবং ইউরোপ থেকে অংশ নেয়া ডুবুরিদের অপর একটি দল গুহার প্রবেশপথ চেম্বার-৩ এ অবস্থান করছেন। চেম্বার-২ এবং চেম্বার-৩ এর মাঝে সংকীর্ণ ও উঁচু-নিচু জলমগ্ন পথে রশি বসিয়ে সহায়তা করবে এই দলটি।তবে ঠিক কী উপায়ে তাদের বের করে আনা হবে, সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, গুহার ভেতর গভীর পানিতে ডুবুরিদের সহায়তায় এবং অল্প পানিতে হাঁটিয়ে তাদেরকে বের করে আনা হবে। একে একে সব কিশোরকে বের করে আনতে তিন-চার দিন সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধারকারীরা এ অভিযানকে ‘হয় এখনই, নয়তো কখনোই নয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এরই মধ্যে গুহার আশপাশ থেকে সকলকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। সাংবাদিকদেরকে নির্দিষ্ট স্থানে থাকতে বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান কমান্ডার নারোংসাক ওসোতানাকোর্ন আরো জানান, প্রতি কিশোরের সঙ্গে দুজন করে ডুবুরি থাকবেন। পুরো গুহার বিভিন্ন জায়গায় বাড়তি অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে যাতে কোনভাবেই যাত্রাপথে অক্সিজেন সংকটে পড়তে না হয়। বিবিসির একজন প্রতিবেদক জানিয়েছেন, ১৫ দিন ধরে গুহায় আটকে থাকা কিশোরদেরকে নিয়ে ফেরার পথে গুহার একটি জায়গায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়া হবে। পরে সেখান থেকে শেষ দফা যাত্রায় তাদেরকে বাইরে বের করে আনা হবে। বাইরে বের করে আনার পর সোজা হাসপাতালে পাঠানো হবে কিশোরদের।
আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, অভিযানের শুরুতে পানির নিচে সংকীর্ণ পথ পাড়ি দিতে হবে কিশোরদের, যেটিকে সবচেয়ে ঝুঁকিপ‚র্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। উদ্ধার অভিযানে কিশোরদের বের করে আনার সময় থেকে তাদের দীর্ঘ সময় অক্সিজেন মাস্ক পরে পানির নিচে ডুব দিতে হবে। এ ধরনের অভিজ্ঞতা তাদের কারোরই আগে ছিল না। গুহার প্রবেশপথ থেকে ‘তৃতীয় চেম্বার’ বা অভিযান শুরুর এলাকার দিকে যেতে হলে দেড় কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে উদ্ধারকারীদের। এ পুরো পথটুকু পুরোপুরি শুকনো নয়, তবে বেশিরভাগটাই হেঁটে পার হওয়া যাবে। আর ‘তৃতীয় চেম্বার’ থেকে শিশুদের কাছে পৌঁছাতে হলে তাদেরকে যেতে হবে আরও ১.৭ কিলোমিটার।
ওসাতানাকর্ন জানান, ‘গতকাল পানির উচ্চতা সবচেয়ে কম মাত্রার ছিল।’ তবে ওই শিশুদেরকে তৃতীয় চেম্বারে আসতে ১.৭ কিলোমিটার পথ পুরোটা সাঁতরে আসতে হবে কিনা তা জানাননি ওসাতানাকর্ন। তিনি বলেছেন, বেশিরভাগ পথই হেঁটে পার হওয়ার উপযোগী।
চূড়ান্ত অভিযান ঘোষণা করার পর থাই নেভি সিলের ফেসবুক পেজে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে উদ্ধারকারীরা একে অপরের হাত ধরে আছেন। গুহার প্রবেশ মুখে নতুন একটি সাদা পতাকা ওড়ানো হয়েছে। ইতিবাচকতা প্রদর্শন করতে এটি একটি বৌদ্ধ চিহ্ন। পুরো থাইল্যান্ড ও বিশ্বব্যাপী অসংখ্য মানুষ এ উদ্ধার অভিযানের সফলতা কামনা করছেন। উদ্ধারকৃত কিশোরদের ১শ’ কিমি দূরে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েকটি হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, গার্ডিয়ান
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।