Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঢাবি শিক্ষকদের পদযাত্রা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

সাংবিধানিক ভাবেই যে কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার আর যদি কেউ সেই অধিকার হরণ করে তবে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর যে ভাবে হামলা করা হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখ ও লজ্জাজনক। স্বাধীনতার পর দেশে এ ধরনের লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেনি। গতকাল চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রদের উপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ’র ব্যানারে আয়োজিত পদযাত্রা শেষে জাতীয় শহীদ মিনারে আয়েজিত এক সমাবেশে শিক্ষকরা এসব কথা বলেন। পদযাত্রাটি ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন, আন্তর্জাতিক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আকমল হোসাইন, একই বিভাগের সহোযোগী অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, ঢাবির ইংরেজি বিভাগের সাবকে শিক্ষক অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আইন বিভাগের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসনিম সিরাজ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান, ইউল্যাবের ভিজিটিং প্রফেসর অধ্যাপক আসফার হোসেন প্রমূখ।
অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মতো যৌক্তিক আন্দোলনে যে ধরনের হামলা করা হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। স্বাধীনতার পর এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেছে বলে জানা নেই। তিনি বলেন, সরকার ছাত্রদের দাবি মেনে নিলেও এ দাবি বাস্তবায়নে কোন কমিটি গঠন করেনি। শিক্ষার্থীরা যখন আবারও আন্দোলন করেছে তখন সরকার কমিটি গঠন করেছে। তারা যদি এই আন্দোলন কন্টিনিউ না করতো তাহলে এই কমিটিও গঠন করা হতোনা। তাদের এ যৌক্তিক আন্দোলনে তাদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় তিনি হামলাকারীদের গ্রেফতারের করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, সাংবিধানিক ভাবেই যে কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার আর যদি কেউ সেই অধিকার হরণ করে তবে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। কোটা সংস্কার এর ন্যায় সংগত আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের সন্তানরা চার ধরনের অন্যায়ের শিকার হয়েছেন। প্রথম অন্যায় হচ্ছে- তাদেরকে হাতুড়িপেটা করা হয়েছে, মেয়েদের শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা হয়েছে। দি¦তীয় অন্যায় হচ্ছে আহতদের চিকিৎসা প্রদানে বাধা দেয়া হয়েছে। তৃতীয় অন্যায় হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানীমূলক মামলা দেওয়া হয়েছে, চতুর্থ অন্যায় তাদেরকে নানারকম অপবাদ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান বলেন, সবচেয়ে ভাল ছাত্ররাই ঢাবির শিক্ষক হন। কিন্তু যারা ক্ষমতাসীন দলের শিক্ষক তারা সব সময় শিক্ষার্থী বিরোধী হয়। অথচ শিক্ষার্থীদের পক্ষে দাঁড়ানো সকল শিক্ষকের নৈতিক দায়িত্ব, কারণ শিক্ষার্থী ছাড়া শিক্ষক অস্তিত্বহীন। ঢাবি প্রশাসনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, মস্তিস্কহীন প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ আমাদের পরিচালনা করেছে। যার ফলে বারবার এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে।
ইউল্যাবের ভিজিটিং প্রফেসর অধ্যাপক আসফার হোসেন বলেন, কিছু কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে পারেন না, কারণ তারা সরকারের অনুগত ভৃত্য। আরেকদল আছে যারা আসতে চায়, কিন্তু ভয় পায়। সব মিলিয়ে দেশ একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
এসময় সমাবেশ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গিতি আরা নাসরিন। দাবিগুলো হলো- কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলাকারীদের বিচার, আন্দোলনকারীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, হামলায় আহতদের চিকিৎসা সেবা প্রদান, নারী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নকারীদের বিচার ও দ্রুত কোটা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে দেয়া।##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাবি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ