মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মা-বাবার কাছে শিশুদের অবিলম্বে ফেরত এবং অভিবাসন-বিরোধী সকল কর্মকান্ড স্থগিতের দাবিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিক্ষোভে উত্তাল। গত শনিবার একযোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ট্রাম্প-বিরোধী শ্লোগানে রাজপথ মুখরিত ছিল। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ নারী-পুরুষ এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী।
গতকাল বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের খবরে বলা হয়, অভিবাসীদের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জিরো টলারেন্স নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসি ছাড়াও সিএনএন ও আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স বিক্ষোভের বিস্তারিত খবর দিয়েছে। শনিবার দেশটির ৫০টিরও বেশি শহরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে কয়েক লাখ মানুষ। তারা ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা করেন। পাশাপাশি বন্দিশালায় আটক অভিবাসী শিশুদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।
ট্রাম্পের বিতর্কিত অভিবাসী নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হোয়াইট হাউসের সামনে জড়ো হন দশ হাজারের বেশি মানুষ। এতে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপশি সাধারণ মার্কিনিরাও অংশ নেন। তারা ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা ছাড়াও তার পদত্যাগ দাবি করেন। প্রতিবাদ বিক্ষোভে শিশুদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
ওয়াশিংটন ছাড়াও বড় ধরণের বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে নিউইয়র্কেও। ওয়াশিংটন ডিসি, বোস্টন, ফিলাডেলফিয়া, ডালাস, লসএঞ্জেলেস, মায়ামি, আটলান্টা, ডেট্রয়েট, শিকাগো, ফিনিক্স ও আটলান্টিক সিটিসহ বিভিন্ন সিটির কর্মসূচি থেকে কংগ্রেসম্যানদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানানো হয় ইমিগ্রেশনের জটিলতা অবসানে যথাযথ বিল পাসের জন্যে। অন্যথায় আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে ব্যালট বিপ্লব ঘটানো হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়।
একটি মানবাধিকার সংগঠনের আয়োজনে বিক্ষোভে অংশ নেন বহু প্রতিবাদকারী। তারা ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিকে লজ্জাজনক আখ্যা দিয়ে অনতিবিলম্বে বাতিলের দাবি জানান। বিক্ষোভকারীরা বলেন, দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা এখানে সবাই একত্রিত হয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রে যা হচ্ছে, তা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ সমস্যা আমরা একা সমাধান করতে পারবো না। সবাইকে এর বিরুদ্ধে সরব হতে হবে।
মানবাধিকার কর্মী শার্পটন বলেন, ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে পরিষ্কার বার্তা দিতে চাই, আমরা সবাই মিলে আমেরিকা গড়ে তুলবো। অভিবাসীদের রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। এ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য সবার প্রতি আহŸান জানাবো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্য শহরগুলোতেও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন কয়েক হাজার মানুষ। তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা ধরণের শ্লেøাগান দেন। শনিবার যুক্তরাষ্ট্র এবং সারা বিশ্বে প্রায় সাতশ’র মতো স্থানে অভিবাসী বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৭ সপ্তাহে ২৬০০ শিশুকে কেড়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন। এছাড়াও আরও প্রায় ২০ হাজার শিশু ডিটেনশন সেন্টারে অবর্ণনীয় দুর্দশায় রয়েছে। তাদের অভিভাবকরা আশ্রয় না পাওয়ায় এমন করুণ পরিস্থিতির অবতারণা হয়েছে। যদিও প্রচলিত আইন অনুযায়ী ৪৫ দিনের মধ্যে আশ্রয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলে সংশ্লিষ্টদের প্যারলে মুক্তি দেয়ার কথা।
ট্রাম্প প্রশাসনের বিশেষ নির্দেশে সে সব রীতি এখন প্রায় অকার্যকর। এরই মধ্যে গত বুধবার একজন ফেডারেল বিচারক রুল জারি করে পরিবার বিচ্ছিন্ন করণের আচরণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এতে বলা হয়, ৩০ দিনের মধ্যে শিশুদেরকে মা-বাবার কাছে ফেরত দিতে হবে।
এর আগে ২০ জুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ ধরনের একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করলেও ৩০ জুন পর্যন্ত তার কোন প্রতিফলন ঘটেনি বলে এসব বিক্ষোভ থেকে উল্লেখ করা হয়। ওয়ালস্ট্রিট জার্নালও সরেজমিনে অনুসন্ধান করে একই সত্যতা জানতে পেরেছে। জানা গেছে, ট্রাম্পের ওই আদেশের পর মাত্র ৬ শিশুকে অভিভাবকের কাছে ফেরত দেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।