Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের কথকতা

হোসেন মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৬ এএম

প্রকৃতির বিচিত্র খেয়াল সম্পর্কে জ্ঞানীজন মাত্রেই সচেতন। প্রকৃতি হচ্ছে তা যার গতিপ্রবাহ সরলরৈখিক নয়, যার কোনো ব্যাখ্যা মেলে না। পৃথিবীতে প্রতিদিন সূর্য ওঠে ও অস্ত যায়। রাত ফুরালে দিন, দিনের শেষে রাত। রাতের আকাশে তারার মেলা বসে, চাঁদ আলো ছড়ায়। এ সব ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রকৃতি কঠোর নিয়মানুবর্তী। বিশে^র ৯৮ ভাগেরও বেশি মানুষ প্রকৃতির এ নিয়মানুবর্তিতা দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু বিশে^ এমনও দেশ আছে যেখানে প্রায় ছয় মাস সূর্য অস্তই যায় না। সেখানে বসবাসকারী মানুষ দিনের আলোকেই রাত কল্পনা করে নিয়ে ঘুমায়। তাতে দিব্যি আছে তারা। আমরা যারা ১২-১৩ ঘন্টার সূর্যালোকিত দিন দেখে অভ্যস্ত, আমরা কেউ কেউ হয়ত জানিই না যে বিশে^ ২২ ঘন্টা ব্যাপ্তির দিনও আছে। এ সবই প্রকৃতির খেয়াল। আবার ঘূর্ণিঝড়, সুৃনামি, ভ‚মিকম্প, বন্যা, অগ্ন্যুৎপাত, পাহাড়ধস ইত্যাদি প্রাণঘাতী কান্ড প্রতিনিয়তই সংঘটিত হয়ে চলেছে। এ সব ঘটনা ও বিপুল প্রাণহানি মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এগুলো যখন ও যেখানে ঘটে, বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত ঘটে। মানুষ সতর্ক হওয়ারও সুযোগ পায় না, প্রাণ হারায় বেঘোরে। তখন প্রকৃতিকে মানব-বান্ধব বলে যেমন মনে হয় না তেমনি প্রকৃতিতে কোনো নিয়ম-শৃঙ্খলা আছে বলেও মনে হয় না। মানুষ প্রকৃতির নিষ্ঠুর রূপ দেখে আতংকে শিউরে ওঠে, ভীতি-আতংকে কিছুদিন কুঁকড়ে থাকে। তারপর আবার আগের জীবন শুরু হয়। কিন্তু নিরপরাধ মানুষের প্রাণহানি ও সম্পদের অপূরণীয় ক্ষতি দগদগে ঘা হয়ে তার স্মৃতি আঁকড়ে থাকে।
মানুষের দুর্ভাগ্য যে সে যেমন প্রকৃতির তান্ডবের অসহায় শিকার তেমনি স্বজাতির দ্বারাও সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানুষ মানুষের কত নিষ্ঠুর শত্রæ হতে পারে, মানুষের হাতে মানুষ যে কী ভয়ংকর ক্ষতির শিকার হয় তার প্রমাণ হিসেবে আরো অনেক নৃশংস ঘটনার মধ্যে দূর অতীতের চেঙ্গিস-তৈমুরের তান্ডব, আর নিকট অতীতে ইউরোপে উদ্ভ‚ত দু’টি যুক্তিহীন বিশ^যুদ্ধের সীমাহীন ধ্বংসলীলার কথা বলা যেতে পারে। আর পরিবারে, সমাজে, ব্যবসায়, রাজনীতিতে স্বার্থ, ক্ষমতা, অর্থের লোভে মানুষ মানুষের কি ক্ষতি পারে, কত সহজে একজন আরেকজনকে নিঃস্ব করে পথে বসিয়ে দিতে পারে, কী অবলীলায় একজন আরেকজনের জীবন নিতে পারে তা তো আমরা অহরহই দেখছি। বিশ^ সভ্যতার উৎকর্ষ, ডিজিটাল বিশে^ রূপান্তর, উন্নয়নের জোয়ার প্রভৃতি মানুষের হীন স্বভাব ও পশু চারিত্রে কোনো পরিবর্তন ঘটাতে তো পারেইনি, বরং তাকে আরো ভয়ংকর করে তুলছে। এর মধ্য দিয়েই মানব সমাজ জীবনের পথ পাড়ি দিয়ে চলেছে।
জীবনের পথে চলতে গিয়ে কত মানুষ কতভাবে হারিয়ে যায়, ধূলায় মিশে যায় তার অস্তিত্বের শেষ চিহ্নটুকুও। তাদের সবার খবর কয়জন জানে? বিশেষ ব্যক্তিদের কারো কারো কথা স্মরণ করা হয়, কিন্তু সাধারণজন কি স্মরিত হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করে? তারা মহাকালের অতল গর্ভে চিরকালের জন্য হারিয়ে যায়। মহাকালের মহাসত্য এই যে সকলের স্থান তার স্থায়িত্বের খাতায় হয় না।
তা, মহাকালের এ মহাসত্যকে কে পাত্তা দেয়? না দিয়েছে কোনো কালে কেউ? নাম, খ্যাতি ও ক্ষমতাপিপাসুরা কখনোই কোনো সত্যকে গুরুত্ব দেয় না। ভাবেই না সে কথা। তারা ভাবে নিজের কথা, আর নিজের কথা ভাবতে গিয়ে যা বা যাদের প্রয়োজন তাদের কথা ভাবে। কারণ তা বা তারা না থাকলে তার উল্লম্ফনটা সম্ভব নয়। এ রকমটাই আগে হয়েছে, এখনো হচ্ছে। হচ্ছে আমাদের দেশে, বিশে^র অন্যত্রও। পার্থক্য হচ্ছে, অন্যেরটা অন্যের ব্যাপার, আর আমাদের ভোগান্তি আমাদেরই।
আমরা এখন একটি অবিশ^াস্য সময় অতিক্রম করছি। আমরা স্বাধীন, কিন্তু সব স্বাধীনতা আমাদের নেই। আমরা কথা বলছি, কিন্তু সব কথা বলতে পারছি না। আমরা রাজনীতি করছি, কিন্তু মাঠে নামতে পারছি না। আমরা অপরাধী নই, কিন্তু আমরা নিরাপদ নই। আমাদের আইন আছে, কিন্তু সে আইন সবার জন্য এক রকম নয়। আমরা বাস্স্থানে অবস্থান করছি, কিন্তু আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। আমাদের তুলে নিয়ে যেতে পারে সাদা পোশাক পরা মানুষ, আর ফিরে নাও আসতে পারি। আমরা এক শ্রেণির মানুষ এ অবস্থানে আছি। এই আমরা যখন দেশ সম্পর্কে কথা বলি কিন্তু এই অবস্থান থেকেই কথা বলি। সে কথা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সত্য ও তিক্ত। কিন্তু দেশে আরেক শ্রেণির মানুষ পৃথক অবস্থানে আছে। দেশ সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অন্য। তারা যা বলেন, তা সুন্দর, মিষ্টি। তাদের কথায় দেশের সব ঠিক আছে, কোথাও খারাপ কিছু নেই।
সদ্য সমাপ্ত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনের কথাই ধরুন। ২ লাখেরও বেশি ভোটে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। সবাই শুনেছেন, জেনেছেন যে উৎসব মুখর পরিবেশে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উল্লেখ করার মত গোলযোগ, সহিংসতা হয়নি। একটু আধটু অনিয়ম হয়েছে। তাতে ১১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। গাজীপুর সিটির ৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র এ ক’টি কেন্দ্রে ভোট গণনা ইতিমধ্যে ঘোষিত নির্বাচনের ফলাফলে কোনো প্রভাব ফেলবে না। এ নির্বাচনের দায়িত্ব যাদের সেই নির্বাচন কমিশন হৃষ্ট মনে মঙ্গলবার সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়েছে। বিএনপি প্রার্থী নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। হেরে গেলে তিনি তা করবেন, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই! ক্ষমতাসীনদের ভাষায় এ দলটি ষড়যন্ত্রকারী, নির্বাচনে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা করেছিল। সরকারের সদা সতর্ক সংস্থাগুলোর লোকজন সে চক্রান্ত নির্বাচনের আগেই নস্যাৎ করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, চক্রান্তের নায়ক বিএনপি নেতা মেজর (অব) মিজানুর রহমান মিজান গ্রেফতারও হয়েছেন। তার কাছ থেকে সব তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। তবে তার কাছ থেকে কি জানা গেছে তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। উল্লেখ্য, নির্বাচনের আগেই বিএনপির বহু নেতাকর্র্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তা নিয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ছুটোছুটি করেছিলেন বটে, যথারীতি কোনো লাভ হয়নি। যারা ক্ষমতার মঞ্চের মালিক-মোক্তার তাদের ভাবখানা যেন এই যে, অপরাধী, খারাপ লোককে তো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন গ্রেফতার করবেই। এটাই তো তাদের কাজ। আর বিএনপি তাদের লোকদের ভালো বলে দাবি করবে, এটাই স্বাভাবিক। তা শুনলে কি চলে! কিন্তু সিটি নির্বাচনের প্রাক্কালে বিএনপির এ লোকগুলো হঠাৎ করে গ্রেফতার হওয়ার মত পর্যায়ে কিভাবে পৌছল তা জিজ্ঞেস করার বা আটকের প্রতিবাদে একটি মিছিল বের করার শক্তি-সাধ্য বিএনপির হয়নি। দলটি সে শক্তি হারিয়েছে। কেন ও কিভাবে তা হয়ত সচেতন জনেরা অনুমান করতে পারেন।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে আগের বার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন অধ্যাপক এম এ মান্নান। বিএনপি সেবার নানা বিপর্যয়ের মধ্যে গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট সিটি নির্বাচনের ফল দেখে খুশি হয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। কিন্তু হায়! সব আনন্দ অচিরেই কর্পূরের মত উবে যেতে দেরি হয়নি। বিশেষ করে গাজীপুরে বিএনপির মেয়র অধ্যাপক মান্নানের জন্য মেয়র নির্বাচন কাল হয়ে ওঠে। তার জীবন এবং মামলার পর মামলা, গ্রেফতার, ক’দিন পরপর জেলখানা গমন, মুক্তি, আবার জেলখানা সমার্থক হয়ে উঠেছিল। তিনি যা স্বপ্নেও ভাবেননি, সেই বিপর্যয় তাকে মেয়র মেয়াদের পাঁচ বছরে প্রৌঢ়ত্ব থেকে বার্ধক্যের ধূসর বারান্দায় পৌঁছে দিয়েছে। এবারের সিটি নির্বাচনে ক্লান্ত, বিপর্যস্ত অধ্যাপক মান্নানের বদলে প্রার্থী হিসেবে বিশিষ্ট বিএনপি নেতা হাসান উদ্দিন সরকারকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। শোনা যায়, বেশিরভাগ বিএনপি সমর্থকই এতে খুশি হয়েছিলেন। কারণ তাদের কাছে তিনি ছিলেন জনপ্রিয়, যোগ্য ও শক্তিশালী প্রার্থী। নির্বাচনকালীন নানা প্রতিকূলতার মধ্যে বিএনপি সমর্থকরা তাকে ঘিরে হয়ত স্বপ্নের মঞ্চ রচনা করতে চেয়েছিল। কিন্তু হায়! আওয়ামী লীগের যুগান্তকারী জনপ্রিয়তা ও তার ফল হিসেবে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিপুল বিজয় তাদের সব স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে।
বিএনপি নেতা-সমর্থকরা গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা এ নির্বাচনে অনিয়ম, কারচুপি, কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা থেকে জানা যায় যে, বিএনপি এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকায় সিল মারা, বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, ভোটকেন্দ্রের গেটে তালা দিয়ে নৌকায় সিল মেরে বাক্স বোঝাই করা, ভোটের লাইনে ভোটার দাঁড়ানো কিন্তু ব্যালট বাক্স শেষ হয়ে যাওয়ায় ভোট দিতে না পারার মত ঘটনাও ঘটেছে। কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যমে ‘নিয়ম-অনিয়মের নির্বাচন’, ‘ বাইরে সুনসান ভিতরে গড়বড়’ শীর্ষক শিরোনামে নির্বাচনের খবর পরিবেশন করা হয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের, আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রিজাইডিং অফিসারের নৌকায় সিল মারার ছবি প্রকাশিত হয়েছে। কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যম অবশ্য এ বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। যাহোক, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে নির্বাচনকে সরকারী দলের পক্ষে প্রভাবিত করার অভিযোগ আগেই করেছিল বিএনপি। ভোটের দিন তার বাস্তব কিছু নমুনাও দেখা গেছে বলে দলটি বলেছে। আরো বলা হয়েছে যে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজেপির বহু সদস্য মোতায়েন ছিল। তারপরও বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের বাইরে ও ভিতরে সরকার দলীয় ক্যাডারদের উপস্থিতি দেখা গেছে, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ আশংকা করেই বিএনপি সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছিল। বোধ হয় মামাবাড়ির আবদার গণ্য করে নির্বাচন কমিশন সে দাবি নাকচ করে দেয়।
গত ১৫ মে খুলনা সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাতে আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। নির্বাচন কমিশন খুলনায় অত্যন্ত সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছিল। বাস্তবে সেখানে যেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তা বিরোধী দলের কাছে ‘খুলনা নির্বাচন’ নামে ইতিমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে। বিএনপির রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কেউ কেউ খুলনা নির্বাচনের সমার্থক হিসেবে গাজীপুর নির্বাচনকে আখ্যায়িত করেছেন। তারা ব্যাপকভাবে আশংকা করছিলেন যে গাজীপুরেও ‘খুলনা নির্বাচন’ অনুষ্ঠিত হবে। সে আশংকার পালে এখন জোর বাতাস লাগল বলে তাদের অভিমত। বৃহস্পতিবার একটি শীর্ষ সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে খুলনা সিটি নির্বাচন থেকেও এক ধাপ এগিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। কীভাবে? বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে এ ভাষায় ঃ ‘এজেন্টদের কেন্দ্রছাড়া করার ক্ষেত্রে নেয়া হয়েছে অভিনব কৌশল। আর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের একটি অংশকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে।’ এ খবরের ব্যাখ্যায় দেখা যায়, নির্বাচনের আগের রাতে, নির্বাচনের দিন বিএনপি এজেন্টদের বাড়ি থেকে, বিভিন্ন আশ্রয় থেকে ও ভোট কেন্দ্র থেকে সাদা পোশাকের লোকজন এবং ক্যাডার কর্তৃক ধরে নিয়ে যাওয়া, ভয় দেখিয়ে কেন্দ্রে যেতে না দেয়া ও থাকতে না দেয়া, কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার মত ঘটনা ঘটেছে। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সহায়তা তারা পাননি। কেন পাননি , তা অনুমান করা যেতে পারে। এদিকে বৃহস্পতিবার গাজীপুর নির্বাচন নিয়ে তাদের পর্যবেক্ষণে ইলেকশন ওয়াকিং গ্রুপ জানিয়েছে যে সাড়ে ৪৬ শতাংশ ভোট কেন্দ্রে কোনো না কোনো অনিয়ম হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে জোর করে ব্যালটে সিল মারা, ভোটকেন্দ্রের ৪শ’গজ ব্যাসার্ধের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো ও ভোটকেন্দ্রের মধ্যে অননুমোদিত ব্যক্তিদের অবস্থান। এর কোনো কিছুই অদৃশ্য ইঙ্গিতের অনুমোদন ছাড়া ঘটা সম্ভব নয়।
বিএনপির সমর্থকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে খুলনায় সূচিত ও গাজীপুরে আরো বড় পরিসরে বাস্তবায়িত নির্বাচনে জয়লাভের এ নীরব ও অব্যর্থ কৌশল আগামীতে সর্বপ্লাবী রূপ নিতে পারে। আসন্ন রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনেও এ ঝঞ্ঝাটহীন কৌশলই গৃহীত হতে চলেছে। প্রচন্ড শক্তি ও ক্ষমতাধর সরকার ও সরকারী দলের নানা ব্যবস্থার সামনে নানা সংকটে ম্রিয়মান, দুর্বল শরীর ও মন, ক্ষয়ে যাওয়া শক্তি ও নড়বড়ে আত্মবিশ^াস নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের টু শব্দ করারও কোনো উপায় নেই। আর এর মধ্য দিয়ে হয়ত বর্তমানে দেশে মৃত গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকা হল।



 

Show all comments
  • Golam Morshed ২ জুলাই, ২০১৮, ১:১৮ পিএম says : 0
    এর মধ্য দিয়ে হয়ত বর্তমানে দেশে মৃত গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকা হল।
    Total Reply(0) Reply
  • Kabir Ahmed Sumon ২ জুলাই, ২০১৮, ১:১৯ পিএম says : 0
    very truth & realistic article
    Total Reply(0) Reply
  • মানিক ২ জুলাই, ২০১৮, ১:২৬ পিএম says : 0
    গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এবং দেশে ও বিদেশে বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে নেতিবাচক দৃষ্টান্ত তৈরী করেছে। হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছে বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা।
    Total Reply(0) Reply
  • আকাশ ২ জুলাই, ২০১৮, ১:২৭ পিএম says : 0
    দেশ ও জাতী আশা করেছিল গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথ সুগম করবে। কিন্তু যা হবার তাই হলো
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন