পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এবার রোজার ঈদে সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে মোট ৩৩৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৪০৫ জন নিহত ও এক হাজার ২৭৪ জন আহত হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এছাড়া শুধু সড়ক-মহাসড়কে ২৭৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৩৩৯ জন নিহত এবং এক হাজার ২৬৫ জন আহত হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার ঈদের আগে সব তদারকি সংস্থার সক্রিয় অবস্থানের কারণে ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হলেও ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে তদারকি না থাকায় সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়েছে। সা¤প্রতিক সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে দূরপাল্লায় চালকদের যাতে একটানা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাড়ি চালাতে না হয় সেজন্য বিকল্প চালক রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া সড়কের পাশে বিশ্রামাগার তৈরি, সিগন্যাল মেনে চলা, অনিয়মতান্ত্রিক রাস্তা পারাপার বন্ধ, সিট বেল্ট বাঁধা এবং চালক ও তার সহকারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দিয়েছেন সরকার প্রধান। মোজাম্মেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন তা আমলে নিয়ে দ্রæত বাস্তবায়ন করা গেলে সড়কে মৃত্যুর যে গণমিছিল চলছে তা থামানো সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদযাত্রা শুরুর দিন, অর্থাৎ গত ১১ জুন থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরার সময় গত ২৩ জুন পর্যন্ত ২৭৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৯ জন নিহত এক হাজার ২৬৫ জন আহত হন। একই সময়ে নৌপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত, ৫৫ জন নিখোঁজ ও ৯ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়া রেল পথে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩৫ জন, ট্রেনের ধাক্কায় চার জন এবং ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে দুই জনসহ ৪১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানান মোজাম্মেল। তিনি বলেন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল ‘বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য’ জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক দৈনিক ও অনলাইন দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
ফিটনেসবিহীন ও পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন; বিরতিহীন বা বিশ্রামহীনভাবে গাড়ি চালনা; অদক্ষ চালক ও হেলপার দিয়ে যানবাহন চালনা; মহাসড়কে অটোরিক্সা, ব্যাটারিচালিত রিক্সা, নসিমন-করিমন ও মোটর সাইকেল অবাধে চলাচল; মনিটরিং ব্যবস্থার অভাব; বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো; সড়ক-মহাসড়কে ফুটপাত না থাকা এবং সড়ক-মহাসড়কের বেহাল দশা এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
দুর্ঘটনা প্রতিরোধে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলকে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধের কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা, প্রশিক্ষিত চালক গড়ে তোলা জন্য জাতীয় পর্যায়ে সরকারিভাবে চালক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, নিয়মিত রাস্তার রোড সেফটি অডিট করা এবং ঈদ যাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে তাদের প্রতিবেদনে।
এছাড়া পর্যাপ্ত গণপরিবহনের ব্যবস্থা; মহাসড়কে ধীরগতির যান ও দ্রæত গতির যানের জন্য আলাদা লেইনের ব্যবস্থা; মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ব্যাটারি চালিত রিক্সা, অটোরিক্সা বন্ধে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত শতভাগ বাস্তবায়ন করা; ভাঙ্গা রাস্তাঘাট মেরামত; ফিটনেসবিহীন ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ফুটপাত, আন্ডারপাস, ওভারপাস তৈরি করে পথচারীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করারও সুপারিশ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সংবাদ সম্মেলনে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, রাজধানীতে একটি বাসও রাস্তার পাশ ঘেঁষে কিংবা সোজা হয়ে দাঁড়াই না। আইন না মেনে কে কত আগে যাবে, সেই প্রতিযোগিতাই করে তারা। মূলত দায়িত্বহীনতা থেকে আইন না মানার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্র বলেছে, যারা মোটরসাইকেল চালায় তাদের মাথায় হেলমেট পড়তে বলা হয়েছে। কিন্তু, তারা হেলমেট পড়ে না, পরিবারের সদস্যদের মাথায়ও হেলমেট থাকে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি এবার গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছেন। তিনি ৪-৫টি নির্দেশনাও দিয়েছেন, পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা তার এই নির্দেশনা মেনে কতখানি কাজ করেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি বাহারানে সুলতান বাহার, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট জোতিৎময় বড়–য়া, মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।