বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রস্পেক্টাস ও পাঠ পরিকল্পনা বিক্রি করে দিতে রাজি না হওয়ায় পাবনার ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আব্দুস সবুর খান ও উপাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল ছাত্রলীগের নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় তারা অধ্যক্ষের কক্ষের টেবিল, সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্কসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর ও কাগজপত্র এলোমেলো করে একাদশ শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বাদী হয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনি, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার আরমান, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হাসানসহ প্রায় ৪০ জন নেতাকর্মীরা কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে এসে তার ওপর চড়াও হন। প্রথমে অকথ্য ভাষায় গালি, পরে আসবাবপত্র ভাঙচুর ও একপর্যায়ে অধ্যক্ষের কক্ষে থাকা উপাধ্যাক্ষ এবং অন্য শিক্ষকদের টেনে-হিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে দিয়ে অধ্যক্ষকে তারা লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এসময় কয়েকজন শিক্ষক তাকে রক্ষা করতে গেলে ছাত্রলীগ নেতারা তাদেরও বেধড়ক মারধর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, মারধরের পর কলেজের অধ্যক্ষকে প্রায় একঘণ্টা তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন ছাত্রলীগ নেতারা। খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানার ওসিসহ পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। কয়েকজন শিক্ষক জানান, গত বৃহস্পতিবার (২৮ জুন) বিকালে এ ঘটনা ঘটলেও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম চলার কারণে ঘটনাটি কাউকে জানাতে চায়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতারা ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দিলে রাতেই অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আব্দুস সবুর খান বাদী হয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনি, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার আরমান, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হাসানসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ৪০ জনের বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-৭৯, ২৮-০৬-২০১৮)। মামলাটি রেকর্ড হয় রাত ১টার পরে। গতকাল সকালে বিষয়টি জানাজানি হয়।
ড. মো. আব্দুস সবুর খান বলেন, ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রস্পেক্টাস ও পাঠ পরিকল্পনা বিক্রি করে দিতে তারা আমাকে নানাভাবে চাপ দিচ্ছিল। আমি তাদের অন্যায় আবদার রাখতে পারিনি বলে ছাত্রলীগ নেতারা আমাকে, উপাধ্যাক্ষ আব্দুল জলিলসহ কয়েকজন শিক্ষককে বেধড়ক মারধর করেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনি বলেন, “উচ্চস্বরে বাগবিতÐার কথা স্বীকার করলেও মারধরের ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে কথা বলার সময় স্যারদের সঙ্গে বাগবিতÐা হয়। শিক্ষকরা যদি এ ধরনের অপকর্ম করতেই থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনে যাব।”
ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি খন্দকার আরমান বলেন, “স্যাররা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতি করে। স¤প্রতি ভর্তি ও ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছিল। আমরা এর প্রতিবাদ করলে শিক্ষকরা আমাদের ওপর চড়াও হয় এবং সামান্য কথাকাটাকাটি হয়। এখানে চাঁদা দাবির তো কোনো প্রশ্নই আসে না।”
এ ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে আটক করতে পারেনি। ঈশ্বরদী থানার ওসি আজিম উদ্দিন বলেন, ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।