Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আসছে সুইজারল্যান্ডের প্রাকৃতিক তরল গ্যাস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০১৮, ১২:০৫ এএম

দেশের জন্য উন্নত মানের জ্বালানি আনতে এবার সুইস কোম্পানির সঙ্গে গাঁটছড়া বাধছে সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। সুইজারল্যান্ডের বিশ্বখ্যাত জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এওটি এনার্জির কাছ থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আনবে সরকার। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে অপেক্ষাকৃত কম দামে এবং মূল্য পরিশোধে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় দিয়েই বাংলাদেশে এলএনজি বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে এওটি এনার্জি। সরকারের পক্ষ থেকেও বিষয়টিতে ইতিবাচক মনোভাব দেখানো হচ্ছে। সকল প্রক্রিয়া শেষে সিদ্ধান্তটি মন্ত্রীসভার ক্রয় কমিটিতে পাঠানোর অপেক্ষায় রয়েছে। এরই মধ্যে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম সুইজারল্যান্ডের এওটি সদর দফতর ও তাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইট ঘুরে এসেছে। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানাচ্ছে, ঘুরে এসে ইতিবাচক সুপারিশ দিয়েছে এই প্রতিনিধি দল।
সুইস কোম্পানিটি বাংলাদেশ সরকারকে মানসম্মত প্রাকৃতিক গ্যাস দেওয়ার পাশাপাশি মূল্য পরিশোধে ৪৫ দিন সময় দিচ্ছে, যা অন্য যে কোনও কোম্পানির চেয়ে অন্তত ৩০ দিন বেশি। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে এটি একটি ভালো অফার এবং সরকার তথা দেশ এ থেকে বড় ধরনের সুবিধা পাবে।
মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র ও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত হলে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে। সুইস সরকারও এওটি এনার্জির সঙ্গে বাংলাদেশের এই নতুন বাণিজ্যিক সম্পর্ককে ইতিবাচকভাবে দেখছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ছয় সদস্যের বাংলাদেশি ডেলিগেট সুইজারল্যান্ড ঘুরে এসে এরই মধ্যে তাদের সুপারিশ সরকারকে জমা দিয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।
পেট্রোবাংলার পরিচালক অর্থ তৌহিদ খানের নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক, প্রশাসন মো. খলিলুর রহমান, আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সৈয়দ আহমেদ, আরপিজিসিএল এর উপ-মহাব্যবস্থাপক কাজী এম আনোয়ারুল আজিম, ইএমআরডি’র যুগ্ম-সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একজন প্রতিনিধি।
এ বছরের মার্চে এই আন্ত-সংস্থা প্রতিনিধি দলটি এওটি সদরদফতর দেখতে যায় এবং এলএনজি শিপিংয়ে এর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিষয়ে তাদের ইতিবাচক পর্যবেক্ষণ ছিলো বলেই জানায়। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায় প্রতিনিধি দলটি দেশে ফিরলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহ জ্বালানি সচিব বরাবর তার পত্রে এওটি এনার্জিকে এলএনজি ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ এবং জাহাজ থেকে জাহাজে এলএনজি সরবরাহ ও বাণিজ্যে দক্ষ বলেই উল্লেখ করেন।
চূড়ান্ত হলে এওটি এনার্জি তৃতীয় আন্তর্জাতিক কোম্পানি হিসেবে বাংলাদেশকে এলএনজি সরবরাহ করবে। যা এরই মধ্যে কক্সবাজারে নির্মিত ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল (এফএসআরইউ) তে দেওয়া হবে। এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেড (ইইবিএল) এবং সামিট কর্পোরেশন লিমিটেড যৌথভাবে এই ভাসমান টার্মিনাল বানিয়েছে যা থেকে এরই মধ্যে গ্যাস সঞ্চালনের জাতীয় গ্রিডে এলএনজি দেওয়া শুরু করেছে সরকার।
২০১৮ সালের মধ্যেই জাতীয় গ্রিডে এলএনজি দেওয়া হবে এমন প্রতিশ্রæতিই ছিলো সরকারের। যা এরই মধ্যে পূরণ করা হয়েছে। দেশে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর চাপ কমাতেই সরকার এই আমদানি শুরু করেছে। দেশে আমদানিকৃত এলএনজির প্রথম চালানটি আসে এবছরের এপ্রিলের শেষভাগে কাতার থেকে। ওই শিপমেন্টে মোট এক লাখ ৩৩ হাজার ঘনমিটার এলএনজি আমদানি করে সরকার।
কাতার গ্যাস ও ওমান ট্রেডিংয়ের পর তৃতীয় কোম্পানি হিসেবে এওটি এনার্জিকে বেছে নেওয়া হলে তা দেশের জন্য ইতিবাচক ও লাভজনক হবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এর পাশাপাশি সরকারের মন্ত্রণালয় ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্টসহ আরও কিছু দেশের কোম্পানির সঙ্গেও কথা বলছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মনে করেন, পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহের অভাবে দেশে শিল্প বিকাশে যে দীর্ঘ বাধা রয়েছে এলএনজি আমদানির মাধ্যমে তা দূর করা হবে। এরই মধ্যে তিনি মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও পায়রা বন্দরে আরও তিনটি স্থল-ভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের কথা জানিয়েছেন। এগুলোর ফিজিবিলিটি স্টাডি চলছে। এবং সম্ভব হলে একটি কিংবা দুটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল তৈরি করবে সরকার।###

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্যাস

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৯ জানুয়ারি, ২০২৩
১৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ