বিশ্বকাপের প্রথম দু’ম্যাচে ৪-২-৩-১ ছকে দল সাজিয়েছিলেন তিতে। ফরোয়ার্ডে একা ছিলেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। মাঝমাঠে ফিলিপে কুটিনহো ও উইলিয়ানের সঙ্গে ছিলেন নেইমার। বুধবার মস্কোর স্পার্টার্ক স্টেডিয়ামে সার্বিয়ার বিরুদ্ধেই বদলে যেতে পারে ছবিটা। নেইমারকে দেখা যেতে পারে ফরোয়ার্ড পজিশনে।

সার্বিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপের শেষ ম্যাচের আগে হঠাৎ কেন পরিকল্পনা বদলের ভাবনা তিতের? মস্কো রওনা হওয়ার আগে সোমবার সকালে সোচিতে অনুশীলন ম্যাচ খেলান ব্রাজিল কোচ। সেখানেই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, জেসুসের বদলে শুরু থেকে রবের্তো ফির্মিনোকে খেলানোর। লিভারপুল ম্যানেজার য়ুর্গেন ক্লপ ফির্মিনোকে বাঁ প্রান্ত দিয়ে খেলান। ফুটবল পণ্ডিতদের মতে, তিতেও চান ব্রাজিলের হয়েও বাঁ প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠুন ফির্মিনো। কারণ, তাতে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়বে। দ্বিতীয়ত, পিছনে ফির্মিনো ও কুটিনহো থাকলে ছন্দে ফেরা নেমার গোল করার জন্য বল অনেক বেশি পাবেন। কেউ কেউ আবার মনে করছেন, চোটের কারণে সার্বিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন না ডগলাস কোস্তা ও দানিলো। এই কারণেই নেইমারের জায়গা বদলের ভাবনা তিতের।

ব্রাজিল কোচ অবশ্য সার্বিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে উইলিয়ানকে খেলানোর পক্ষে ছিলেন না। চেলসির হয়ে গত মরসুমে দুরন্ত ছন্দে ছিলেন তিনি। অথচ বিশ্বকাপে জাতীয় দলের হয়ে নজর কাড়তে ব্যর্থ। তাই সার্বিয়ার বিরুদ্ধে উইলিয়ানকে ছাড়াই প্রথম একাদশ গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু ডগলাস কোস্তা চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায় উইলিয়ানকে প্রথম দল থেকে বাদ দেওয়ার ভাবনা আপাতত স্থগিত রেখেছেন ব্রাজিল কোচ। তিতের সহকারীরা চেষ্টা করছেন, সার্বিয়া ম্যাচের আগে চেলসি তারকাকে উদ্বুদ্ধ করতে। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যমের দাবি, কোচিং দলের এক সদস্য জানিয়েছেন, উইলিয়ান কেন খেলতে পারছেন না, সেটা তাঁদের কাছেও রহস্য। তিনি বলেছেন, ‘‘উইলিয়ান দারুণ ফুটবলার। কিন্তু এই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত ওকে সেরা ছন্দে পাওয়া যায়নি। আমরা চেষ্টা করছি। সার্বিয়ার বিরুদ্ধেই হয়তো স্বমহিমায় দেখা যাবে উইলিয়ানকে।’’

বিশ্বকাপের দু’ম্যাচে ব্রাজিল তিন গোল করেছে। খেয়েছে একটি গোল। ডিফেন্ডারদের পারফরম্যান্সে তিতে খুশি। রক্ষণের অন্যতম ভরসা পাগেনার লেমোসের তিন সতীর্থ থিয়াগো সিলভা, জোয়াও মিরান্দা ও মার্সেলো ভিয়েরা খেলেন ইউরোপে। একমাত্র পাগেনারই খেলেন ব্রাজিলের কোরিন্থিয়াসে। যদিও ইউরোপে না খেলা নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই ব্রাজিল ডিফেন্ডারের। তিনি বলেছেন, ‘‘ইউরোপের ক্লাবে খেলছি না বলে আমি একেবারেই চিন্তিত নই। মাঠে নেমে আমার লক্ষ্য থাকে প্রতিপক্ষকে গোল করতে না দেওয়া।’’ তিনি যোগ করেছেন, ‘‘সব সময় আমার লক্ষ্য থাকে নিজেকে উন্নত করা। তাই মাঠে নেমে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টাই সব সময় করি। নিজেকে প্রমাণ করেই জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি।’’

কোস্টা রিকার বিরুদ্ধে ম্যাচের পরে কেঁদে ফেলেছিলেন নেইমার। যা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ অবশ্য বিদ্রুপও করেন ব্রাজিল তারকার কান্না নিয়ে। পাগেনার বলছেন, ‘‘নেইমারের মনের অবস্থা আমার চেয়ে ভাল কেউ বুঝবে না। দল নির্বাচনের সপ্তাহ দু’য়েক আগে চোট পেয়েছিলাম। ব্রাজিলের হয়ে আমার বিশ্বকাপ খেলা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছিল। নেইমারেরও একই অবস্থা ছিল। এই ধরনের পরিস্থিতিতে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তার জায়গায় থাকলে আমিও পারতাম না।’’