দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে দলটি। ‘জি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পানামাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল তারা। অন্যদিকে টানা দুই ম্যাচ হারা তিউনিশিয়া পরের রাউন্ডে যাওয়ার স্বপ্ন প্রায় শেষ; প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল তারা।
মস্কোয় শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলতে থাকে বেলজিয়াম। ম্যাচের ৫ মিনিটেই এগিয়ে যায় তারা। তিউনিসিয়া ডিফেন্ডার সিয়াম বিন ইউসুফ ফাউল করলে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির সিদ্ধান্তে পেনাল্টি পায় বেলজিয়াম। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন বেলজিয়াম অধিনায়ক ইডেন হ্যাজার্ড (১-০)।
ম্যাচের ১৩ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পান হ্যাজার্ড। তবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ফরোয়ার্ড রোমেলু লুকাকুর কাছ থেকে পাওয়া বল পেয়ে শট নিলেও সেই শট রুখে দেন তিউনিসিয়া গোলরক্ষক ফারুক বিন মুস্তাফা। ম্যাচের ১৪ মিনিটে ফাউল করায় তিউনিসিয়ার মিডফিল্ডার ফারজানি সাসিকে রাফারি হলুদ কার্ড দেখান।
তবে ম্যাচের ১৬ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করেননি ইউনাইটেড তারকা লুকাকু (২-০)। কর্ণার থেকে উড়ে আসা বল থেকে দারুণ শটে গোল করেন এই ইউনাইটেড তারকা। রাশিয়া বিশ্বকাপে এটি তার তৃতীয় গোল। দুই মিনিট পরই ব্যবধান কমান তিউনিশিয়ার ডিফেন্ডার দাইলান ব্রুন (২-১)।
ম্যাচের ২৪ মিনিটে ইনিজুরিতে পড়েন দাইলান ব্রুন, তার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন তিউনিসিয়া ডিফেন্ডার হামদি নাগুয়েজ।
ম্যাচের ৩১ মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো বল থেকে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন তিউনিসিয়ার মিডফিল্ডার ফারজানি সাসি। তবে লক্ষ্যহীন শট খেলে সেই সুযোগ হারান তিনি। এক মিনিট পর সাসির নেয়া দারুণ এক শট রুখে দেন বেলজিয়াম গোলরক্ষক থিবাত কুর্তোয়া।
ম্যাচের ৩৯ মিনিটে সতীর্থের পাওয়া বল ডি-বক্সের সামনে পেয়েও লক্ষ্যহীন শট খেলে গোলের সুযোগ হারান তিউনিসিয়া ফরোয়ার্ড ফখরুদ্দিন বিন ইউসুফ।
এরপর যোগ করা সময়ে দারুণ এক সুযোগ হারান লুকাকু। সতীর্থের বাড়ানো বল ডি-বক্সে পেয়েও গোল পায়ে লাগাতে না পেরে গোলের দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। অবশ্য সেটা পুষিয়ে দিয়েছেন এক মিনিট যেতে না যেতেই। বেলজিয়াম ডেফেন্ডার থমাস মিউনার বাড়ানো বল ডি-বক্সে পেয়ে ফারুক বিন মুস্তাফাকে বোকা বানান এই ইউনাইটেড তারকা। রাশিয়া বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো বেলজিয়ামের এই ফরোয়ার্ডেরও গোল হলো ৪টি।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে ব্যবধান কমাতে লড়াই করে তিউনিসিয়া। একের পর এক আক্রমণও করতে থাকে তারা। তবে ম্যাচের ৫১ মিনিটে আবারো তিউনিসিয়ার জালে বল হামলা করেন হ্যাজার্ড। কেভিন ডি ব্রুয়েনের বাড়ানো বল নিয়ে ডি-বক্সে এগিয়ে গিয়ে গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে দারুণ এক শটে গোল করেন বেলজিয়াম অধিনায়ক। তাতেই বেলজিয়াম এগিয়ে যায় ৪-১ গোলে।
ম্যাচের ৫৯ মিনিটে বেলজিয়ামের প্রথম বদলি হিসেবে লুকাকুর বদলে মিডফিল্ডার মারুয়ানে ফেলাইনিকে মাঠে নামান বেলজিয়াম কোচ। এক মিনিট বাদে মিডফিল্ডার সাসির বদলি হিসেবে ফরোয়ার্ড নাইম স্লিতিকে মাঠে নামান তিউনিসিয়া কোচ।
এরপর ম্যাচে ফিরতে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে তিউসিয়া। তবে বেলজিয়ামের শক্ত ডিফেন্সের কাছে একের পর এক হারতে হয়েছে তাদের।
ম্যাচের ৬৭ মিনিটে সেই ডিফেন্সকে ফাঁকি দিয়ে জোরালো শট খেলেন মিডফিল্ডার আনিস বদ্রি। তবে সেই শট রুখে দেন কুর্তোয়া। এক মিনিট পর অধিনায়ক হ্যাজার্ডের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন বেলজিয়াম ফরোয়ার্ড মিচি বাতশুই।
ম্যাচের ৭৬ মিনিটেই দারুণ এক সুযোগ হারান বাতশুই। সতীর্থের বাড়ানো বল ডি-বক্সে পেয়ে তিউনিসিয়া গোলরক্ষককে বোকা বানালেও ডিফেন্ডার ইয়াসিন মেরিয়াহ পা বাড়িয়ে বাতশুইয়ের শট রুখে দেন।
ম্যাচের ৮১ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন বাতশুই। সতীর্থের বাড়ানো বল ডি-বক্সে পেয়ে জোরালো এক শট চেলসির এই স্ট্রাইকার। তবে জোরালো সেই শট রুখে দেন তিউনিসিয়া গোলরক্ষক।
ম্যাচের ৮৬ মিনিটে ফরোয়ার্ড ড্রাইস মারটেন্সকে উঠিয়ে মিডফিল্ডার ইউরি তিয়েলম্যান্সকে বদলি হিসেবে মাঠে নামান বেলজিয়াম কোচ।
ম্যাচের ৯০ মিনিটে ইয়ানিক ক্যারাসকোর বাড়ানো বল থেকে বাঁ পায়ের দারুণ শটে গোল করেন বাতশুই (৫-১)। যোগ করা সময়ে গোল এক গোল পরিশোধ করেন বেলজিয়াম অধিনায়ক ওয়াহবি খাজরি (৫-২)। আর তাতেই ৫-২ ব্যবধানে জিতে যায় বেলজিয়াম।