একের পর এক আক্রমণ আছড়ে পড়ছিল ইরান রক্ষণে। কিন্তু স্পেনের কোনো আক্রমণই শেষ পর্যন্ত পরিণতির মুখ দেখেনি। অবশেষে মুখ খুললো গোলের, তাও ভাগ্যের সহায়তায়। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে ইনিয়েস্তার দুর্দান্ত পাস খুঁজে নিল কস্তাকে। ইরানি ডিফেন্ডার সেটি ক্লিয়ার করতে গেলে কস্তার পায়ে লেগেই তা ঢুকে যায় জালে। বি’ গ্রুপের ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছে স্পেন। এবারের আসরে এটাই তাদের প্রথম জয়। আগের ম্যাচে পর্তুগালের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করেছিল তারা। আর মরক্কোকে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করা ইরান পেল প্রথম হারের স্বাদ। দক্ষিণ কোরিয়ার (২০০২) পর এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপে টানা দুই জয়ের কীর্তি গড়া হল না তাদের।
কাজান অ্যারেনায় ম্যাচের শুরুতে ইরানকেই মনে হচ্ছিল বেশি ধারাল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে স্পেন নিজেদের গুছিয়ে নেয়। তবে ইরান রক্ষণে ঢুকতে পারেননি কস্তারা, গোল করার সেরকম পরিষ্কার সুযোগ পাননি। ডেভিড সিলভার ফ্রিকিকটাই একটু বিপদ হতে পারত, ইরানের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে দিক পরিবর্তনও করেছিল। কিন্তু ইরানের গোলরক্ষক ছিলেন জায়গামতোই। প্রথমার্ধের শেষ দিকে সিলভা গোল পেয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর শট ইরানের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে চলে যায় পোস্টের পাশ ঘেঁষে।
৪৯ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ডান পায়ের শটে ভাজকেজ গোল করেই ফেলেছিলেন। কিন্তু ডান দিকে ঝাঁপিয়ে গোলরক্ষক বেইরানভান্দ বিপদমুক্ত করেছেন দলকেম, ঠেকিয়ে দিয়েছেন ফিরতি শটও। ৫৩ মিনিটে আসে সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। ভাগ্যের জোরে কস্তার গোলে এগিয়ে যাওয়া ২০১০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।
ডি-বক্সে ইনিয়েস্তা খুঁজে পান কস্তাকে। তিনি শট নেওয়ার আগেই বিপদমুক্ত করার চেষ্টা করেন মজিদ হোসেইনি। তার শট কস্তার পায়ে লেগে জালে জড়ায়। এবারের আসরে এটি কস্তার তৃতীয় গোল। স্পেনের হয়ে সবশেষ ৯ ম্যাচে ব্রাজিলে জন্ম নেওয়া স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডের নবম গোল।
ওই গোল খাওয়ার পরেই যেন জেগে ওঠে ইরান। ৬৪ মিনিটে গোলটা শোধ করেই ফেলেছিল। ফ্রিকিক থেকে বল জালে জড়য়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন সাইদ এজতোলাহি, বদলি খেলোয়াড়েরা মাঠে ঢুকে শুরু করে দেন উদযাপনও। কিন্তু ২০ সেকেন্ড পর রেফারি রায় দেন, গোলটা অফসাইড থেকে হয়েছিল। পরে রিপ্লেতেও দেখা গেছে, অফসাইডই ছিল তা।
কিন্তু ওই গোলের পরও ইরান পেয়েছিল আরও সুযোগ। ৭৬ মিনিটে মেহেদী তারেমি একটুর জন্য পা ছোঁয়াতে পারেননি ক্রসে। তবে সবচেয়ে সুবর্ণ সুযোগটা পেয়ে যায় ৮৩ মিনিটে। ভাহিদ তামেরির দারুন ক্রস থেকে দুর্দান্ত এক হেড করেছিলেন তারেমি। কিন্তু তাঁর হেড একটুর জন্য চলে যায় বার উঁচিয়ে। গোলটা পেতে পেতেও পাওয়া হলো না ইরানের।
আগামী সোমবার নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে মরক্কোর বিপক্ষে খেলবে স্পেন। একই সময়ে পর্তুগালের মুখোমুখি হবে ইরান। এই দুই ম্যাচের ওপর নির্ভর করছে কোন দুই দল যাবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে সবার আগে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে মরক্কো।