বাড়িতেই ফাইনাল দেখবেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কাতারে
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে কাতারে যাচ্ছেন না আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। তিনি জানান, আজ
প্রথমার্ধে রাশিয়াকে ঠেকিয়ে রাখতে পারল মিশর। দ্বিতীয়ার্ধে উড়ে গেল সব প্রতিরোধ। দেনিস চেরিশেভ আর আর্তেম জুবার গোলে টানা দ্বিতীয় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা। ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে ৩-১ গোলে জিতেছে রাশিয়া। এই জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেছে স্তানিস্লাভ চেরচেসভের শিষ্যরা। আর এই হারে বিশ্বকাপ শেষের শঙ্কায় হেক্টর কুপারের দল।
২৮ বছর পর ফের বিশ্বকাপের মঞ্চে আসা দলটি স্বপ্ন দেখছিল তাকে ঘিরেই। সালাহকে নিয়েই স্বাগতিক রাশিয়ার বিপেক্ষ খেলতে নামে মিশর। সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়ামে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম্যাচের প্রথমার্ধ কেটেছে উপভোগ্য। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের ম্যাচে দুই দলই পেয়েছিল বেশ কিছু সুযোগ। কিন্তু কেউই কাজে লাগাতে পারেনি।
বিরতির ঠিক অোগে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচে নেমেই অল্পের জন্য গোলবঞ্চিত সালাহ। ৪২তম মিনিটে ডি-বক্সের মুখ থেকে বাঁ পায়ে শট নেন লিভারপুলের এই ফরোয়ার্ড। জায়গায় দাঁড়িয়ে ৯০ ডিগ্রী ঘুরপাকের মধ্যে বাঁ পায়ে একটা দারুণ শটও নিয়ে ফেলেছিলেন। অল্পের জন্য তা চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।
মিশরের হয়ে ত্রেজেগের শট অল্পের জন্য চলে যায় বাইরে। রাশিয়ার ডেনিস চেরিশভের দূরপাল্লার শটও গোলে ছিল না। কর্নার থেকে সের্গেই ইগনাশেভিচ সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর হেড পরাস্ত করতে পারেনি মিশর গোলরক্ষক এল শেনাউইকে।
তবে গুছিয়ে ফুটবল খেলার প্রদর্শনীটা দেখিয়েছে স্বাগতিকারাই। বিক্ষিপ্ত কিছু সুযোগ তৈরি করতে পারলেও দলের সেরা তারকা সালাহকে বল সাজিয়ে দেয়ার কাজটুকু করতে ব্যর্থ মিশর সতীর্থরা। ফলাফল, গোলশূণ্য অবস্থাতেই বিরতিতে যায় দল দুটি।
বিরতি থেকে ফিরেই ভোল পাল্টে ম্যাচের। আক্রমণে বাড়ে গতি, খেলোয়াড়রাও যায় ছন্দ। ৪৭তম মিনিটে গোলোভিনের ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে উল্টো নিজেদের জালে পাঠিয়ে দেন আহমেদ ফাতহি। চলতি আসরে এটি পঞ্চম আত্মঘাতী গোল। এসময় আর্তেম জুবাকে লক্ষ্য করে ক্রস করেন গোলোভিন। ক্লিয়ার করতে গিয়ে অধিনায়কের হাঁটুতে লেগে দিক পরিবর্তন করে বল বার ঘেঁষে চলে যায় জালে। ডাইভ দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন গোলরক্ষক; কিন্তু নাগাল পাননি।
মিশরের আক্রমণের ঝাপটা সামলে ৫৯তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে রাশিয়া। বাই লাইন থেকে মারিও ফের্নান্দেসের ক্রসে অরক্ষিত দেনিস চেরিশেভ ঠিকানা খুঁজে নেন। চলতি আসরে ভিয়ারিয়াল মিডফিল্ডারের এটা তৃতীয় গোল। এই গোলে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকার শীর্ষে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর পাশে বসলেন তিনি।
তিন মিনিট পর ব্যবধান আরও বাড়ান জুবা। মাঝমাঠ থেকে ইলিয়া কুতেপভের বাড়ানো বল বুক দিয়ে নামিয়ে একজনকে কাটিয়ে গড়ানো শটে জাল খুঁজে নেন এই ফরোয়ার্ড। এবারের আসরে এটা তার দ্বিতীয় গোল।
৭৩তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান কমান সালাহ। তাকেই ডি-বক্সে ফাউল করায় ভিএআর প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে স্পট কিকের সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন রেফারি। ঠাণ্ডা মাথায় চমৎকার শটে বল জালে পাঠান সালাহ।
বাকি সময়ে দারুণ চেষ্টা করলেও ব্যবধান কমাতে পারেনি মিশর। রক্ষণে মনোযোগ বাড়ানোয় শেষের দিকে আর সেভাবে আক্রমণ করতে পারেনি রাশিয়া। এই নিয়ে ১৯৮২ আসরের পর বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জিতল রাশিয়া। এই জয়ে ১৯৮৬ আসরের পর প্রথমবারের মতো গ্রুপ পর্ব পার হওয়ার আশা জাগাল দলটি। সউদী আরবের কাছে উরুগুয়ে না হারলেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হয়ে যাবে স্বাগতিকদের।
গ্রুপ পর্বর প্রথম ম্যাচে উরুগুয়ের সঙ্গে হেরে যাওয়া ম্যাচে নামা হয়নি তার। ম্যাচের অন্তিম সময় পর্যন্ত অাটকে রেখেছিল লুইস সুয়ারেজদের। তবে ভাগ্য সহায় ছিলনা, ম্যাচের ৮৮ মিনিটের গোলের হারে রাশিয়া বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করে মিশর। রাশিয়ার বিপক্ষেও ছিলেন শঙ্কার ভেতর। মোহাম্মদ সালাহর সেই শঙ্কা কাটল ঠিকই, তবে তাতে স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনা বাড়লো বৈ কমলো না। স্বাগতিকদের কাছে এই হারে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের অপেক্ষায় মিশর।
আগামী সোমবার নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে খেলবে রাশিয়া। একই দিন সৌদি আরবের মুখোমুখি হবে মিশর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।